৯ই মে গজারিয়া গণহত্যা দিবস
গজারিয়াঃ ১৯৭১ সালের ৯মে পাক সেনারা পরিকল্পিত ভাবে গজারিয়া ওপর চালায় নির্মম হত্যাযজ্ঞ । ১৯৭১ সালে এ দিনে পাক হানাদার বাহিনী লোমহর্ষক হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ৩ শত ৬০ জন ছাত্র, জনতা, মুক্তিযোদ্ধা, বুদ্ধিজীবি কে হত্যা করে।
ঢাকা থেকে মাত্র ৩৮ কিলোমিটার দুরে মুন্সীগঞ্জ জেলাধীন মেঘনা নদী দ্বারা বেষ্টিত সবুজ শ্যামল, ছায়া ডাকা, পাখি ডাকা গজারিয়ার অবস্থান। ১৯৭১ সালের ৯মে পাক সেনারা পরিকল্পিতভাবে গজারিয়া ওপর চালায় নির্মম হত্যাযজ্ঞ। প্রায় ৩শত ৬০ জন মানুষকে গুলী করে হত্যা করার ঘটনা গজারিয়াবাসী আজো ভূলতে পারেনি।
গণহত্যা রক্তপাত আর ভয়ংকর এক বিভীষিকাময় স্থানের নাম গজারিয়ার গোশাইরচর। পূর্ব আকাশে সূর্য উঠার অপেক্ষায়, মসজিদে মুয়াজ্জিনের আযানের ধ্বনী ফুকবে এই সময় পাকবাহিনীর গুলির আওয়াজে আর মানুষের গগন বিদায়ের চিৎকারের আওয়াজ একাকার হয়ে যায় গজারিয়ার গোশাইরচর। নরপশুদের নির্বিচারে গণহত্যাকান্ড যেন স্তব্ধ করে দেয় সব।
৯মে ১৯৭১ মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার গোশাইর চর, নয়ানগর, কাজীপুরা, বাঁশগাঁও ও বালুরচর মনুষ গুলো যখন রাতের শেষে সুবে সাদেকের অপেক্ষায় কোন কোন মসজিদে আজানের ধ্বনী। কিন্তু কেউ সে দিন কল্পনাও করেনি সেই ভোরের আলোর দৃশ্য তাদের জন্য শেষ বার্তা বয়ে আনবে। হঠাৎ গুলির শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যায় সবার। যেন মহাপ্রলয় চার দিকে ঘিরে আসছে পাকবাহিনী! পালাও…। পাকবাহিনী যাকে যে আবস্থায় পায় সে অবস্থায়ই গুলি করে হত্যা করে। সেদিন এই বর্বরতা থেকে রেহায় পায়নি নিষ্পাপ অবুজ শিশুরাও। শিশুদের হত্যা করা হয় বুট দিয়ে চ্যাপ্টা করে। সেদিন সারিবদ্ধ ভাবে এক সাথে হত্যা করে ১১০ জন কে। পাকবাহিনী পরিকল্পিত ভাবে ৯ মে গজারিয়া বাসির উপর চালায় নির্মম হত্যাযজ্ঞ। পাকবাহিনী গোশাইরচর, নয়ানগর, কাজীপুরা, বাঁশগাঁও, সোনাকান্দা ও বালুরচর গ্রামের প্রায় ৩৬০ জন নিরিহ মানুষকে হত্যা করে। দিন ব্যপী চালায় ধ্বংসয্যজ্ঞ অগ্নিসংযোগ। পাকবাহিনী প্রায় ৫৯ টি ঘর বাড়ি আগুন দিয়ে জালিয়ে দেয়। ভাগ্য গুনে আহত হয়ে বেচে যায় আবুল হোসেন ভূঞা, আঃ রব সিকদার, সালামত জেহাদ, জমিরুন নেছা, সানোয়ারা বেগম, ইছাক মোল্লাসহ আর অনেকে। পাকবাহিনী যে সব এলাকায় ধ্বংসযজ্ঞ অগ্নিসংযোগ গণহত্যা চালায় তাদের মধ্যে গজারিয়া উপজেলা একটি। পরবর্তীতে ৯ মে’র শহীদদের পরিবারের পক্ষ থেকে গঠিত হয় ‘গজারিয়া ইউনিয়ন শহীদ পরিবার কল্যাণ পরিষদ’ তারা ১০৩ জনের একটি তালিকা তৈরি বরেছে। গণকবরের পাশে শহীদদের শ্বরণে একটি সৃতিস্তম্ব নির্মাণ করে সেই তালিকা সংযুক্ত করেছে। আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি তাসত্যেও ৯ মে এর কথা লিখতে বসে আমার মন শিউরে উঠে মনে প্রশ্ন যাগে মানুষ মানুষ কে এত নিষ্ঠুর ভাবে হত্যা করতে পারে ?