বৃহস্পতিবার, ১৪ মে ২০১৫
প্রথম পাতা » অপরাধ | জেলার খবর » মির্জাপুরে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় প্রসুতির মৃত্যু
মির্জাপুরে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় প্রসুতির মৃত্যু
টিাঙ্গাইল প্রতিনিধি:
ডাক্তারের ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় সিজারের সময় পারভীন বেগম(২৭) নামে এক প্রসুতি মায়ের মৃত্য হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মায়ের মৃত্যু হলেও ভাগ্যক্রমে কন্যা নবজাতক বেঁচে গেছে। প্রসুতির মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোগীর আত্বীয় স্বজন হাসপাতালে হামলার চেষ্টা চালায়। প্রসুতির এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা সদরের কলেজ রোডের শহীদ মিনার সংলগ্ন নিউ আল মদিনা হাসপাতালে এই মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে পারভীন বেগমের স্বামী মোঃ মজনু মিয়া(৩৫) ও তার ভাগিনা জহিরুল ইসলাম(২৫) অভিযোগ করেন,প্রসব বেদনা নিয়ে সকাল সাতটার দিকে পারভীন বেগমকে নিউ আল মদিনা হাসপাতালে ভর্তি করান। অনভিজ্ঞ ডাক্তার জান্নাত বেগম ও কয়েকজন সহযোগি নিয়ে পারভিন বেগমকে সিজার করার জন্য ওটিতে নিয়ে যান। সিজারের সময় তাদের ভুল চিকিৎসায় পারবীন বেগম ওটিতেই মারা যায় বলে রোগীর আত্বীয় স্বজন অভিযোগ করেন। এ দিকে নিজেদের দায় এড়ানোর জন্য নিউ আল মদিনা হাসপাতালের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আব্দুল হান্নান ও ডাক্তার জান্নাত বেগম তাকে কুমুদিনী হাসপাতালে রেফার করে। কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তির পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, নিউ আল মদিনা হাসপাতালে সিজারের সময় ওটিতেই পারভীন বেগম মারা যায় । অপর দিকে ডাক্তার পারভীন বেগম মির্জাপুর উপজেলা সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র কর্মরত। কর্মরত অবস্থায় তিনি কি ভাবে ক্লিনিকে অবস্থান করেন এ নিয়ে এলাকায় তোলপার শুরু হয়েছে।
এ দিকে নিউ আল মদিনা হাসপাতালের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। ভুয়া ডাক্তার ও টেকনিশিয়ানদের নাম ব্যবহার করে হাসপাতাল পরিচালনা করে আসছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ইতিপুর্বেও এই হাসপাতালে অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে নিহত পারভীন বেগমের স্বামী মজনু বলেন, নিউ আল মদিনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলাতেই তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।
এ ব্যাপারে নিউ আল মদিনা হাসপাতালের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আব্দুল হান্নান ও ডাক্তার জান্নাত বেগমের সঙ্গে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হলে তারা বিভিন্ন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এখানে তার মৃত্যু হয়নি। ওটিতে সিজারের পর পারভীন বেগমের খিচুনি (এ্যাকলামশিয়া) দেখা দেয়। পরে তাকে কুমুদিনী হাসপাতালে রেফার করা হয়।
মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা(টিএইচও) ডা.তৌফিকুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,তদন্ত সাপেক্ষে ডাক্তার জান্নাতের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য যে, মির্জাপুরে বিভিন্ন এলাকায় অলিগলিতে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে হাসপাতাল ও ক্লিনিক। এসব হাসপাতালে একটি চক্র ও প্রভাবশালী মহল রোগীদের জিম্মি করে চিকিৎসার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছ বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।