ইরাকের রামাদি আইএসের দখলে
পক্ষকাল ডেস্কঃ ইরাকের পশ্চিমাঞ্চলীয় আনবার প্রদেশের রাজধানী রামাদির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)
জঙ্গিগোষ্ঠীটির এ দাবি সত্য হলে গত গ্রীষ্মের পর থেকে এটি হবে বাগদাদ সরকারের সবচেয়ে বড় পরাজয়।
রোববার এক বিবৃতিতে আইএস জানিয়েছে, তারা বেশ কিছু ট্যাঙ্ক দখল করেছে এবং বহু ‘স্বপক্ষত্যাগী’কে হত্যা করেছে। ‘স্বপক্ষত্যাগী’ বলতে গোষ্ঠীটি ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ইঙ্গিত করে থাকে।
রামাদি ইরাকের পশ্চিমাঞ্চলীয় আনবার প্রদেশের রাজধানী। প্রদেশটি সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ। এই প্রদেশটি আইএস মুক্ত করতে এখানে শিয়া বেসামরিক বাহিনীগুলোকে মোতায়েনের অনুমতি দিয়েছিলেন ইরাকি প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-আবাদি।
এর আগে সুন্নিদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়তে পারে আশঙ্কায় ওই অনুমতি দেয়া থেকে বিরত থেকে ছিলেন তিনি।
আইএস-র ঘোষণার আগে নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছিল, জঙ্গিদের হামলার মুখে সরকারি বাহিনীগুলো রামাদির একটি প্রধান সামরিক ঘাঁটি ছেড়ে এসেছে।
গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর বিমান হামলার সমর্থন নিয়ে ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীগুলো ও শিয়া বেসামরিক বাহিনীগুলো আইএস-র বিরুদ্ধে অভিযানে নেমে জঙ্গিদের পিছু হটিয়ে দেয়। ওই বিপর্যয় থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর পর থেকে এটাই আইএস-র সবচেয়ে বড় জয়।
রামাদির পতন হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত না করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এলিসা স্মিথ বলেছেন, “গত গ্রীষ্ম থেকে রামাদিতে দুপক্ষের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা চলছিল, এখন আইএসআইএল (আইএস) সেখানে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে।”
রামাদির পরাজয়ে ইরাকি সামরিক বাহিনীর সামগ্রিক অভিযান আইএস-র অনুকূলে চলে যাচ্ছে এমন নয় দাবি করে এলিসা বলেন, “এটি তাদের প্রচারণায় নতুন মাত্রা যোগ করবে।”
পরবর্তীতে শহরটি পুনর্দখল করতে ইরাকি বাহিনীর মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর সহায়তা প্রয়োজন হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
গত মাসে সরকারি বাহিনী তিকরিত পুনর্দখল করার পর আনবার আইএস মুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছিল ইরাকি সরকার। কিন্তু মরুময় বিশাল আনবার প্রদেশে সুবিধা করতে পারেনি সরকারি বাহিনী।
রামাদির সামরিক ঘাঁটি ছেড়ে আসা এক সামরিক কর্মকর্তা বলেছেন, “লাউডস্পিকারে আমাদের অস্ত্র ত্যাগ করার আহ্বান জানাচ্ছে জঙ্গিরা, ঘাঁটিতে ফিরে গেলে আমাদের ক্ষমা করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে তারা।”
“নিরাপদ এলাকায় পৌঁছানোর জন্য আমরা পশ্চিম দিকে পিঁছু হটেছি,” বলেন তিনি।
রোববার রামাদির আশপাশের এলাকায় আইএস-র অবস্থান লক্ষ করে সাতবার বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী। এটি কোনো একক একটি এলাকায় জোট বাহিনীর চালানো সবচেয়ে বেশিবার হামলার ঘটনা।
এর আগে শনিবার সিরিয়ার যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীর চালানো এক অভিযানে আইএস-র এক জ্যেষ্ঠ নেতাকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছিল ওয়াশিংটন।