গ্রেফতার হচ্ছে না শৈলকুপায় মাদক ব্যবসায়ীরা
ইমন হাসান- ঝিনাইদহ শৈলকুপাঃঝিনাইদহের শৈলকুপায় সুনির্দিষ্ট করে জানান দিলেও গ্রেফতার হচ্ছে না শৈলকুপার মাদক ব্যবসায়ীরা। দহখোলা গ্রামের সাদেকখান, খুলুম বাড়িয়ার গোলাম হোসেনের ছেলে সাইফুল ওরফে তালুক, মালিপাড়ার আক্তার, শেরপুর-গোলক নগর এলাকার সিদ্দিকের স্ত্রী মাদক ব্যবসা করছে। এরা ছাড়াও শৈলকুপা শহরে ফেরি করে ফেনসিডিল, গাঁজার ব্যবসা চালাচ্ছে অনেকে। এদের সাথে মিলেছে নিত্যনতুন আস্তানার সন্ধ্যান।
শৈলকুপার তমালতলার কৃষ্ণ, বেনীপুরের বুনোপাড়ার ভানু, সিদ্দি আমতলার ভোলা নামের এক ব্যাক্তি কামারের দোকানের পাশাপাশি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র যোগান দিয়ে থাকে। দিগনগর ইউনিয়নের ইটালী গ্রামের গফুর আলী মাদক ব্যবসা চালাচ্ছে। এছাড়া অচিন্তপুর, খুললে বাজারে ব্যাপকভাবে গাঁজা. ফেনসিডিল ও মাদক সামগ্রীর আসর বসে। গ্রামের কাগজে সংবাদ প্রকাশের পর অনেকেই নড়েচড়ে বসেছে, কেউ কেউ কৌশল অবলম্বন করছে। খুলুমবাড়িয়ার মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নেই কোন অভিযান। অন্যদিকে নির্বিকার রয়েছে ঝিনাইদহের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরও চুপচাপ রয়েছে সংবাদ প্রকাশের পরও। বরং এদের অনেকের ম্যানেজ করেই চলছে মদ,গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবা আর হেরোইনের ব্যবসা। শৈলকুপায় মাদক সম্রাটরা থাকছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। ফেনসিডিল, ইয়াবা ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে তরুনদের হাতে হাতে। অন্যদিকে শৈলকুপা শহর জুড়ে ৫/৬টি ¯পটে দিনে রাতে ২৪ ঘন্টা চলে রমরমা জুয়া আর ফ্লাশ খেলা।সরেজমিনে দেখা গেছে উপজেলার দহখোলা গ্রামের সাদেকখান তার বাড়ির সাথে ঝুপড়ি দোকান দিয়ে রাতভর মাদকের ব্যবসা চালায়। যশোর, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ি, ঝিনাইদহ থেকে মাদক ব্যবসায়ীরা এখানে আসে, তারা গাঁজা ও ফেনসিডিলের চালান নিয়ে যায়। এছাড়া ফ্লাশ চলে হাজার হাজার টাকার। গ্রামবাসি জানায় তাদের কারনে যুব সমাজ ধ্বংসের পথে দাঁড়িয়েছে। খুলুমবাড়িয়া এলাকার গোলাম হোসেনের ছেলে সাইফুল ওরফে তালুক ফেনসিডিলের চালান নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। সে যে মাদক ব্যবসায়ী তা পুলিশও শিকার করে তবে পুলিশের চোখ এড়াতে কার্টন কার্টন ফেনসিডিল বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রাখে। সেখানকার কিছু তরুনদের নিয়ে মাদকাসক্তদের কাছে এসব ফেনসিডিল তুলে দেয় তালুক।নেশাখোররা জানায় আগে এক বোতল ফেনসিডিল ৩শ টাকা পাওয়া গেলেও এখন এক বোতল ফেনসিডিল ৫শ থেকে ৫শ ৫০ টাকা দরে বিক্রি করছে। কখনো তা পানি, চিনি মিশিয়ে ভেজাল ফেনসিডিল বানিয়ে, যেটাকে নাকি বলা হয় টিউন করে নেশাক্তদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। মাদক ব্যবসায়ী তালুক এসব ফেনসিডিল, ইয়াবা পাংশা, রাজবাড়ি, মাগুরা, শৈলকুপা সহ বিভিন্ন স্থানে ব্যবসা করে আসছে।তালুকের বিরুদ্ধে মাদকের একাধিক মামলা থাকলেও দুর্বল ধারা আর স্বাক্ষী প্রমানের অভাবে অনেক সময় সহজেই জামিনে বেরিয়ে এসে আবার মাদক ব্যবসা চালায় বলে পুলিশ জানিয়েছে।এদিকে শেরপুর-গোলকনগর এলাকার সিদ্দিক মাদক সম্রাট হিসাবে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত এলাকা থেকে ফেনসিডিল এনে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তার বাড়িতেই মেলে ফেনসিডিল। লোকজনের ভীড় লেগেই থাকে বাড়ির সামনে। মাদক ব্যবসায়ী সিদ্দিকও পুলিশের হাতে আটক হয়েছিল, কিন্তু জামিনে বেরিয়ে আবার ব্যবসা করছে দীর্ঘদিন। গত ২০ এপ্রিল আবারো হরিনাকুন্ডু উপজেলার চর আড়–য়াকান্দি গ্রামের সাধুর মোড় এলাকা থেকে ফেনসিডিল সহ সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক কে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ সময় তার কাছ থেকে একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। পাওয়া যায় ফেনসিডিল। হরিণাকুন্ডু পুলিশ তাকে গ্রেফতারের পর তার স্ত্রী এখন ফেনসিডিল ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে নেশাক্তরা জানিয়েছে। শৈলকুপার ক্ষদের মোড়ে শুশীল নিয়মিত গাঁজা বিক্রি করে আসছে। শহরের টিএন্ডটি পড়ায় সুইপার পোট্টিতে মাসুদ নামে এক ব্যবসায়ী গাঁজা বিক্রিকরে। বেশ কয়েকজন পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা এসব মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে সখ্য গড়ে টাকা আদায় করে।
খুলুমবাড়িয়ার তালুক, শেরপুর-গোলকনগরের সিদ্দিক, তার স্ত্রী সহ বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ী অনেক সময় স্থানীয় প্রভাবশালীদের সাথে সখ্যতা গড়ে ব্যবসা চালায়। ফলে অনেক সময় এরা নিরাপদে পার পায় মাদক ব্যবসা করেও।শৈলকুপা পুরাতন কাপড় হাট সহ শহরে ফ্লাশ-জুয়া চললেও তা বন্ধ হচ্ছে না। পুলিশের অভিযান জোরদার না হওয়ায় শহরে এসব কর্মকান্ড চলছেই। কেউ কালেভাদ্রে আটক হলেও দুর্বল ধারায় দ্রুত জামিন পেয়ে ফের নিষিদ্ধ মাদক ব্যবসায় নামছে।ঝিনাইদহের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের কার্যক্রম নেই বললেই চলে, তাদের অনুমতি নিয়েই অনেকে বাংলামদের ব্যবসা চালাচ্ছে। সুইপার পট্টিতে হাতে গোনা দু একজন কে খাওয়ার পারমিট দিলেও প্রায় সবাই তরুনদের কাছে এসব মরন ঘাতক বাংলামদ বিক্রি করে আসছে। বেশ কয়েক বছর আগে বিষাক্ত বাংলামদ খেয়ে কয়েকজনের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটেছিল, অন্ধ হয়ে যায় আরো কয়েকজন।এদিকে গ্রামের কাগজে সংবাদ প্রকাশের পর পুলিশ তার লিস্ট সংগ্রহ করেছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমএ হাসেম খাঁন জানান মাদকের বিরুদ্ধে কোন ছাড় নেই। তাদের কে গ্রেফতার করা হবে ।