মাহিদুর-আফসারের আমৃত্যু কারাদণ্ড
পক্ষকাল প্রতিবেদক
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাহিদুর রহমান ও আফসার হোসেনকে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।আজ বুধবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ রায় দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম।গত ২২ এপ্রিল এই মামলার কার্যক্রম শেষে রায় ঘোষণা অপেক্ষমাণ রাখা হয়। গতকাল মঙ্গলবার রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল-২।ট্রাইব্যুনাল-২ এ পর্যন্ত মানবতাবিরোধী অপরাধের ১০টি মামলার ও ট্রাইব্যুনাল-১ আটটি মামলার রায় দিয়েছেন।চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মাহিদুর রহমান (৮৪) ও আফসার হোসেনের (৭৫) বিরুদ্ধে অভিযোগ, মুক্তিযুদ্ধের আগে তাঁরা মুসলিম লীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে তাঁরা স্থানীয় রাজাকার বাহিনী ও শান্তি কমিটিতে যোগ দিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ করেন। এ মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ আনা হয়।গত বছরের ১১ ডিসেম্বর মাহিদুর ও আফসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচার শুরু হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয় চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি।
এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য দেন ১০ জন। আসামিপক্ষে কেউ সাক্ষ্য দেননি।
চূড়ান্ত যুক্তি উপস্থাপনের সময় রাষ্ট্রপক্ষ দাবি করে, মাহিদুর ও আফসারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
আসামিপক্ষ দাবি করে, এ দুজনের বিরুদ্ধে আনা একটি অভিযোগও প্রমাণ করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। এ জন্য তাঁদের অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়া হোক।
গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর শিবগঞ্জের দুর্লভপুর ইউনিয়নের দাদনচক গ্রামের মাহিদুর ও বিনোদপুর ইউনিয়নের সাতরশিয়া গ্রামের আফসারকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন তাঁদের শিবগঞ্জ শহীদ মিনারে বোমা হামলা মামলার আসামি হিসেবে স্থানীয় আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
১৮ সেপ্টেম্বর এ দুজনকে মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো ও ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ২৩ সেপ্টেম্বর তাঁদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তবে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন খারিজ করেন ট্রাইব্যুনাল। পরে ১৬ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ তাঁদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করলে ২৪ নভেম্বর তা আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। ওই দিনই তাঁদের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।