শনিবার, ২৩ মে ২০১৫
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | জেলার খবর | ব্রেকিং নিউজ » শিবচরে ৩ হাজার গ্রাহকের ২০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও আরডিপি
শিবচরে ৩ হাজার গ্রাহকের ২০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও আরডিপি
২০১৫ মে ২৩ মাদারীপুর প্রতিবেদক : মাদারীপুরের শিবচরে ৩ হাজার গ্রাহকের প্রায় ২০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে আরডিপি ফাইন্যান্স এ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট এমসিএস লিমিটেড নামের একটি মাল্টিপারপাস প্রতিষ্ঠান।
বেশি লাভের আশায় প্রতিষ্ঠানটিতে টাকা বিনিয়োগ করেছেন ব্যবসায়ী, প্রবাসী এবং চাকরিজীবীসহ পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ হওয়া জমির মালিকরাও। টাকা বিনিয়োগ করে এখন তারা সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন। ৬ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটি তাদের কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।
এ ঘটনায় শিবচর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং শিবচর শাখার কর্মরত ওই প্রতিষ্ঠানের তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ।
নন্দকুমার ইনস্টিটিউটের শিক্ষক মাহবুবর রহমান জানান, প্রায় ৬ বছর আগে শিবচরের আমিন গোমস্তা সুপার মার্কেটের ২য় তলায় ভাড়া নিয়ে আরডিপি ফাইন্যান্স এ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট এমসিএস লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান শাখা খুলে তাদের আর্থিক লেনদেন শুরু করে। ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক পরিচালনায় দিগুণ লাভের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি শিবচরের ৩ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। এরপর গত ১৪ মে তাদের সব কার্যক্রম বন্ধ করে রাতের আঁধারে পালিয়ে যায় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। পরে খবরটি ছড়িয়ে পড়লে প্রতিষ্ঠানটির অফিসে গ্রাহকরা এসে ভিড় জমাতে থাকেন। এমন ঘটনায় দোষিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
শিবচরের যাদুয়ারচর এলাকার ভুক্তভুগী পারুল বেগম জানান, জামানতের টাকা ফেরত পেতে সকাল-সন্ধ্যা আসছেন আরডিপি’র শাখায়। কিন্তু আজ পর্যন্ত পাননি কোনো কর্মকর্তার দেখা। তার জমানো ১ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে আরডিপি, এমনটাই অভিযোগ তার।
প্রতারিত মোহাম্মদ ইউনুস মিয়া জানান, ‘ইসলামের নাম ভাঙ্গিয়ে আমার কাছে থেকে ৭ লাখ টাকা নেয় তারা। বলে মাসে মাসে ১ হাজার ৮ শ’ টাকা সুদবিহীন দেওয়া হবে। কিন্তু অফিসে এসে দেখি সবাই পলাতক।’
রাসলে চৌকিদার জানান, ‘তার বোন ঢাকার একটি জায়গা বিক্রি করে এই প্রতিষ্ঠানটিতে ৪৭ লাখ টাকা রাখেন। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা পালিয়েছে, এ কথা শুনে তার বোন এখন পাগলপ্রায়।’
মাদারীপুর জেলা সমাজসেবার অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ বৈদ্য নাদিম বলেন, ‘আরডিপি নামের কোনো সংস্থা জেলার সমাজসেবা অফিস থেকে রেজিস্ট্রেশন করেনি। এ ধরনের কোনো সংস্থার নাম অফিসে রেজিস্ট্রেশন ফাইলে পাওয়া যায়নি।’
মাদারীপুর জেলা সমবায় অফিসের কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক ভুইয়া বলেন, ‘আরডিপি মাদারীপুর থেকে নিবন্ধিত হয়নি। কোথা থেকে নিবন্ধিত হয়েছে এ ধরনের কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই।’
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ‘এ ঘটনার তদন্ত শেষে দোষিদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।’
মদারীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) খন্দকার ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘যারা যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারা বেশিরভাগই অসহায় দরিদ্র মানুষ। তাদের টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য পুলিশ সব ধরনের সহযোগিতা করবে।