দিনাজপুরে মানববন্ধনে হামলা ও প্রেসক্লাবে ভাংচুর
মাহবুবুল হক , দিনাজপুর প্রতিনিধি : দিনাজপুরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকর্মীদের হামলায় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মির্জা আশফাক হোসেন আহত হয়েছেন। এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ধারণ করার সময় ক্যামেরাম্যানসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ৬ সাংবাদিকও আহত হয়েছেন। হামলাকারীরা দিনাজপুর প্রেসক্লাবের দরজা-জানালা ভাংচুর করেছে। গুরুতর আহত আওয়ামী লীগ নেতা মির্জা আশফাক হোসেনকে দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার (২৩ মে) সকাল ১১ টার দিকে শহরের নিমতলা দিনাজপুর প্রেসক্লাবে এ ঘটনা ঘটে।
দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) মেধাবী ২ ছাত্রের হত্যার প্রতিবাদে ও খুনীদের গ্রেফতারের দাবীতে শনিবার নিমতলাস্থ দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সামনে নিহত ছাত্র জাকারিয়ার ও মিল্টনের পরিবার, এলাকাবাসি, সচেতন নাগরিক মহল, আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের একাংশ একত্রিত হয়ে মানববন্ধনের আয়োজন করে। হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধনের প্রস্তুতি নেয়ার পূর্বমূহুর্তে স্বেচ্ছাসেবকলীগের একটি মিছিল এসে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এ সময় মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করতে আসা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মির্জা আশফাক হোসেনের সাথে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কলিন্সের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামী ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবু ইবনে রজবসহ একদল যুবক লোহার রড, লাঠি-সোটা নিয়ে হামলা চালায়। তারা এলোপাথারিভাবে পিটিয়ে অওয়ামী লীগ নেতা মির্জা আশফাক হোসেনের মাথা ফাটিয়ে ও শরীরের বিভিন্ন অংশ ক্ষতবিক্ষত করে রাস্তায় ফেলে চলে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও তারা নীরব দর্শকের ভুমিকা পালন করেন।
এনটিভির দিনাজপুর প্রতিনিধি ফারুক হোসেন জানান, পেশাগত দায়িত্ব পালন করার সময় হামলা ও ভাংচেিরর ভিডিও ফুটেস ধারণ করার সময় তার উপর হামলা করে। এ সময় হামলাকারীরা লোহার রড দিয়ে সাংবাদিক ফারুককে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে আহত করে। তাকে রক্ষা করতে চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরের সাংবাদিক বিপুল সরকার সানী, দৈনিক মানবকন্ঠ পত্রিকার সাংবাদিক সুলতান মাহমুদ এগিয়ে আসলে তারাও আহত হন। ভিডিও ফুটেজ ধারণ করার সময় আরটিভির, দেশটিভির ও এনটিভির ক্যামরা ছিনিয়ে নেয় হামলাকারী স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা।
আহত জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মির্জা আশফাক হোসেন জানান, হাবিপ্রবির মেধাবী ২ ছাত্রের হত্যার ১ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও পুলিশ খুনীদের গ্রেফতার করছেনা। তাই নিহত ছাত্রের পরিবার মানববন্ধনের আয়োজন করে। সেই মানববন্ধনে অংশ নেয়াটা এটা কি অপরাধ ? আর কত মায়ের কোল খালি হলে খুনীরা গ্রেফতার হবে। বিচারের মুখোমুখি হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
দিনাজপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ওয়াহিদুল হক জানান, মির্জা আশফাক হোসেনের মাথায় আঘাত লেগেছে। তার মাথায় সিটি স্ক্যন করা হয়েছে। এ ছাড়াও সারা শরীরে বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্ককাজনক।
দিনাজপুর কোতয়ারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খালেকুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন বলেন, মানববন্ধন যাতে সুষ্ঠুভাবে পালন করতে পারে সে জন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ প্রেরন করা হয়েছে। যদি পুলিশ নীরব দর্শকের মত অবস্থান দিয়ে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।