বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে
হবিগঞ্জ থেকে ঃ বজ্রপাতে প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থানে মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। অতীতের ছেয়ে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা আশংখাজনক হারে বাড়ছে। এ ধরণের মৃত্যু নিয়ে এখন ভাবনার ডাল-পালা বিস্তার লাভ করছে। ঘরের মধ্যেও বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। চলতি বছরের ১৫ মে একদিনে সারা দেশে বজ্রপাতে ১৭ জনের মৃত্যু ও ২৫ জন আহত হবার খবর প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে গাজীপুরের শ্রীপুরে দুই ২ জন নিহত ও আহত ৩ জন, মাগুরায় পৃথক স্থানে ৩ জন নিহত এবং মহিলাসহ ৫ জন আহত, টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে নিহত ১ জন, আহত ৩ জন, রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে ক্রিকেট খেলা অবস্থায় এক যুবক, নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় এক স্কুল ছাত্র ও এক কৃষক নিহত, সিলেটের জৈন্তাপুর এলাকায় এক নারী এবং মৌলভীবাজারে এক শিশু নিহত ও হবিগঞ্জে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ধরণের মৃত্যুকে স্বাভাবিক মনে হলেও নতুন প্রজন্মের কাছে তা চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিগত ১০ বছর ধরে বজ্রপাতে সাধারণ মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা অধিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এলাকার প্রবীনরা এ মৃত্যুকে আসমানী গজব বলে চালিয়ে দিলেও বর্তমান প্রজন্মের কাছে এ মৃত্যুর হার বাড়ার পেছনে কিছু মনুষকে দায়ী করা হচ্ছে।
শফিক নামের এক কলেজ ছাত্র বলেন, তিনি তার দাদার কাছে শুনেছেন, ব্রিটিশ আমলে সরকার মাটির নীচে আনাচে-কানাচে বজ্রপাত রোধক ম্যাগনেট স্থাপন করেছিল। বিগত ১০/১১ বছর পুর্বে একদল অর্থলোভী মানুষ সেই ম্যাগনেট তুলে নিয়ে যায়। কোটি টাকা মুল্যের ওই ম্যাগনেটই ছিল মুলত বজ্রপাতের রোধক। এ ম্যাগনেট পাচার নিয়ে অনেক হাউ-কাউ হয়েছে। মিডিয়াতেও প্রচার হয়েছে নানান আঙ্গিকে প্রতিবেদন। এক সময় মাটির নীচে স্থাপিত ওই ম্যাগনেট উধাও হয়ে যায় রাতের আঁধারে। শুধু তাই নয়, বজ্রপাতে নিহতের মরদেহ পর্যন্ত কবর থেকে তুলে নেয়া হতো ম্যাগনেট সেল’র আশায়। সুন্দর আলী নামের এক প্রবীণ ও এলাকার মুরুব্বীগন বলেন, তাদের আমলে বজ্রপাতে সারা বছরে ১/২ জন মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া যেতো। তখন এটাকে আল্লাহ’র গজব বলা হতো। এখন ঝড়-বৃষ্টি আসলেই বজ্রপাতে হতাহতের খবর মেলে। বজ্রপাত নিয়ে নানান জন নানান মত প্রকাশ করছেন, কিন্তু এর সমাধান কেউ দিতে পারছেন না। তবে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ব বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, বাড়ী-ঘর তথা সর্বত্রই বজ্রপাত রোধক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এর জন্য সরকারকে জরুরী ভিত্তিতে গ্রহন করতে হবে পদক্ষেপ।