রানা প্লাজা ধসের দুই মামলার চার্জশিট
তরিকুল ইসলাম সাভার:
সাভারে যুবলীগ নেতার ‘রানা প্লাজা’ ধসের ঘটনায় হত্যা ও ইমারত নির্মাণ আইনে দায়ের আলাদা দুটি মামলায় ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ৪২ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেছে সিআইডি। ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সংশ্লিষ্ট জিআর শাখায় সোমবার সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয়কৃষ্ণ কর অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দুই মামলায় রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা, তার বাবা আব্দুল খালেক ওরফে খালেক কুলু, সাভার থানার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায়, সাভার পৌরসভার সাবেক মেয়র রেফাত উল্লাহ, বর্তমান কমিশনার মোহাম্মদ আলী খানসহ ৫৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে একই আসামি দুই মামলায় থাকায় ৪২ জন ধরা হয়েছে। এর মধ্যে হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে
৪২ জন আর সাক্ষী করা হয়েছে ৫৯৪ জনকে। ইমারত নির্মাণ আইনে করা মামলায় ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে এবং সাক্ষী করা হয়েছে ১৩০ জনকে। রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় ২০১৩ সালের ২৫ এপ্রিল সাভার থানায় আলাদা দুটি মামলা দায়ের করা হয়। একটি অবহেলাজনিত মৃত্যু চিহ্নিত করে পুলিশের হত্যা মামলা, অপরটি ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘন করে ভবন নির্মাণ করায় রাজউকের ইমারত আইনে দায়ের করা মামলা।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় সাভার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওয়ালী আশরাফ ১১৩৪ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে একটি অবহেলাজনিত হত্যা মামলা দায়ের করেন।
হত্যা মামলার আসামিদের মধ্যে আরো রয়েছেন- আব্দুল খালেক ওরফে খালেক কুলু, মোহাম্মদ আলী খান, রেফাত উল্লাহ, আবুল হাসান, অনীল কুমার দাস, শাহ আলম মিঠু, এমায়েত হোসেন, রাকিবুল ইসলাম, আলম মিয়া, বজলুল সামাদ আদনান, মাহমুদুর রহমান, আনিছুর রহমান, আমিনুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক খান, আলমগীর, রাসেল মধু ও সরোয়ার কামাল।
ইমারত নির্মাণ আইন না মেনে ভবন নির্মাণ করায় রাজউকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন ১৩ জনকে আসামি করে একই দিনে সাভার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এ মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সোহেল রানা, মোহাম্মদ আলী খান, এমায়েত হোসেন, আবদুল খালেক, রেফাত উল্লাহ, বজলুল সামাদ আদনান, মাহমুদুর রহমান, রফিকুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, আনিছুর রহমান, রফিকুল ইসলাম ও সরোয়ার কামাল।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকাল নয়টার দিকে ধসে পড়ে সাভারের রানা প্লাজা। এ সময় ভবনের নিচে চাপা পড়েন সাড়ে পাঁচ সহস্রাধিক পোশাকশ্রমিক। এ ঘটনায় ১১৩৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। আহত ও পঙ্গু হন প্রায় ২০০০ মানুষ। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ২৪৩৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।