দিনাজপুরে সড়ক দূর্ঘটনারোধে জনসচেতনতায় র্যালি
মাহবুবুল হক খান, দিনাজপুর প্রতিনিধি ॥ চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন রাস্তা ব্যবহারে সবাইকে সতর্ক হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেছেন, সড়ক দূর্ঘটনার জন্য শুধু এককভাবে চালকই দায়ী নয়, পথচারী, রাস্তা নির্মাণকারী কর্তৃপক্ষসহ অন্যান্যরাও দায়ী। রাস্তার পার হওয়ার সময় সবাইকে সাবধান হতে হবে ও আল্লাহ প্রদত্ত নিয়ম মানতে হবে। সব সময় রাস্তার ডাক দিয়ে চলাচল করতে হবে, কারণ ডাক দিক দিয়ে চললে পিছন থেকে আসা গাড়ীকে দেখা যায়। ফলে দূর্ঘটনার সম্ভাবনা কম থাকে।
সোমবার (৮ জুন) সকাল ১১টায় দিনাজপুর শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে সড়ক দূর্ঘটনারোধে জনসচেতনতায় বর্ণাঢ্য র্যালি ও গাড়ী চালকদের দক্ষতা ও সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বেধনী অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন এসব কথা বলেন।
সাসটেইনেবল রুরাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (এসআরআইআইপি), এলজিইডি ও নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) যৌথভাবে সড়ক দূর্ঘটনারোধে র্যালি ও গাড়ী চালকদের জন্য এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে।
দিনাজপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান বক্তা ইলিয়াস কাঞ্চন আরো বলেন, আমরা যদি মানুষের জীবনের নিরাপত্ত দিতে না পারি তবে অথ্যনৈতিক উন্নয়ন করে কোন লাভ হবে না। কারণ মানুষ না বাচঁলে অর্থ বা টাকা-পয়সা কোন কাজে আসবে না।
তিনি বলেন, আমি আন্দোলন করছি সড়ক দূর্ঘটনার বিরুদ্ধে, কোন ব্যক্তি বা অন্য কারো বিরুদ্ধে নয়। দূঘটনার জন্য প্রায় ৫০টি কারণ রয়েছে। প্রতি বছর আমাদের দেশে সড়ক দূর্ঘটনায় ১২/১৩ হাজার মানুষ মারা যায় এবং ২৫/৩০ হাজার মানুষ পঙ্গুত্ববরণ করে। আমাদের দেশে হাজারে দূর্ঘটনা ঘটে ৬/৭শ’ অথচ বাইরের দেশে হাজারে এই দূর্ঘটনার হার মাত্র ৪/৫টি।সবাই মিলে চেষ্টা করলে দূর্ঘটনা কমানো সম্ভব।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আহমদ শামিম আল রাজী বলেন, একটা ড্রাইভার মানুষতো দুরের কথঅ একটা সাঁপকে মারতে চায় না। রাস্তার ব্যবহারে ড্রাইভারে পাশাপাশি পথচারীসহ অন্যান্য সবাইকে সর্তক ও সচেতন হলে অনেক দূর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। তিনি বলেন, সম্প্রতি নেপালের ভুমিকম্পে যত লোক মারা গেছে, তার চেয়ে বেশী লোক আমাদের দেশে প্রতি বছর সকড় দূর্ঘটনায় মারা যায়। অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি মানুষের জীবনের নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন এলজিইডি দিনাজপুর অঞ্চলের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রেজাউল করিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সঞ্জয় সরকার, সিভিল সার্জন সুলতান মো. শামসুজ্জামান, দিনাজপুর সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবু বকর সিদ্দিক, দিনাজপুর শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি মো. মোসাদ্দেক হোসেন, দিনাজপুর এলজিইডির প্রকল্প পরিচালক মো. আলী আকবর।
এর আগে দিনাজপুর শিল্পকলা একাডেমী প্রাঙ্গণ থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় শিল্পকলা একাডেমী প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। পরে শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে গাড়ী চালকদের দক্ষতা ও সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
র্যালি ও কর্মশালায় নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) দিনাজপুর জেলা শাখার আহবায়ক বিশ্বজিৎ দাস, সাসটেইনেবল রুরাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট’র উপ-প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল বাছেদ, অনুষ্ঠানে সড়ক জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকার সাংবাদিক, জেলার বিভিন্ন কলেজ ও মাদরাসার অধ্যক্ষ, বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক, উপজেলা প্রকৌশলী, বিভিন্ন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, মোটর পরিবহন মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ, মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ, মাইক্রোবাস ও কার চালক সমিতির নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধি, জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকার প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগহ্রণ করেন।