শনিবার, ১৩ জুন ২০১৫
প্রথম পাতা » জেলার খবর » নদীতে যারা ক্রসবাঁধ দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত
নদীতে যারা ক্রসবাঁধ দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত
জাহাঙ্গীর আলম, চাটমোহর
জাতীয় নদী কমিশনের চেয়ারম্যান মোঃ আতাহারুল ইসলাম বলেছেন, নদীতে যারা ক্রস বাঁধ দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। কমিশন কখনও এ কাজকে উৎসাহ দেয় না। বড়াল নদী মরে যাওয়ার কারণ স্লুইস গেট। পাশাপাশি বাঁধ করা অবিবেচকের কাজ। এটা যারা করেছে, তারা দূরদর্শিতার পরিচয় দেয়নি। কমিশন হাইকোর্ট ও সংসদীয় কমিটির সিদ্ধান্তের সাথে একমত পোষণ করছে। এখন যা করণীয়, তা করা হবে। বড়ালে পানির প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। বড়ালকে বাঁচাতে হবে।
গতকাল সকালে চাটমোহরস্থ জেলা পরিষদের ডাকবাংলোতে বড়াল নদী অবমুক্ত করা বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা, নদী বিষয়ক টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্ত ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন বিষয়ে এক মত বিনিময় সভায় জাতীয় নদী কমিশনের চেয়ারম্যান এ কথা বলেন। সভায় বড়াল নদীর ক্রসবাঁধ অপসারণে বাধা, স্লুইস গেট অপসারণ, ব্রিজ নির্মাণ এবং নদীকে প্রবাহমান করার বিষয়ে বক্তব্য দেন, পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ড. ফারুক আহমেদ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নুরুল ইসলাম, চাটমোহর উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম সরোয়ার, বড়াল রক্ষা আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব এস এম মিজানুর রহমান, দৈনিক আমাদের বড়াল সম্পাদক ও প্রকাশক হেলালুর রহমান জুয়েল, প্রেসক্লাব সভাপতি রকিবুর রহমান টুকুন বক্তব্য দেন।
এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শফিকুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মিজানুর রহমান, পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী আমিরুল ইসলাম, থানার ওসি (তদন্ত) জি,এম মিজানুর রহমানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় চেয়ারম্যান নদীতে পুকুর নির্মাণ বন্ধে প্রশাসনকে পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন। একই সাথে পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলীকে ৭ দিনের মধ্যে বড়াল নদী চালুর সম্ভাব্যতা যাচাই বিষয়ে প্রতিবেদন কমিশনের দাখিলের নির্দেশ দেন।
এর আগে নদী কমিশনের চেয়ারম্যান মোঃ আতাহারুল ইসলাম ও সার্বক্ষনিক সদস্য মোঃ আলাউদ্দিন সকালে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ি হয়ে বড়াল নদীর নুরনগর স্লুইস গেট, চাটমোহর এলাকার ৩টি ক্রসবাঁধসহ বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করবেন। চেয়ারম্যান পাবনা ও নাটোর জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথেও মত বিনিময় করেন।
প্রসঙ্গতঃ বড়াল রক্ষা আন্দোলন কমিটির আন্দোলন-সংগ্রামের ফলে সরকার বড়াল নদীকে অবমুক্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। বড়ালের অবস্থান ও করণীয় বিষয়ে নদী বিষয়ক টাস্কফোর্স ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির তৎ সময়ের চেয়ারম্যান বর্তমান মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপিকে প্রধান করে বড়াল নদী বিষয়ক কমিটি গঠণ করে। কমিটি সরেজমিন পরিদর্শন শেষে নদী বিষয়ক টাস্কফোর্সে গত ১০/০৯/২০১৩ তারিখে ৬ দফা সুপারিশমালা দাখিল করে। ১৮/১১/২০১৩ ইং তারিখে এই সুপারিশ নদী বিষয়ক টাস্কফোর্সের সভায় গৃহিত হয়।
পরবর্তীতে ৬ দফা বাস্তবায়ন ধীরগতির কারণে জাতীয় নদী কমিশনের চেয়ারম্যানকে পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়। যার কারণে চেয়ারম্যান বড়াল নদী পরিদর্শনে আসেন। বড়াল রক্ষা আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব ও বাপা’র কেন্দ্রীয় সদস্য এস এম মিজানুর রহমান বলেন, ‘এলাকার ও বড়াল পাড়ের হাজার হাজার মানুষ মনে করেন নদী কমিশনের চেয়ারম্যান অবশ্যই এবার এটা বাস্তবায়ন করবেন।’
তিনি বলেন, বড়াল অবমুক্তির দাবিতে নদীপাড়ের লাখ লাখ মানুষ মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচী পালন করেছেন। সকলের আশাবাদ বড়াল প্রবাহমান হবে।