শনিবার, ১৩ জুন ২০১৫
প্রথম পাতা » » হ্যাকিংও শিখছে জঙ্গিরা: পুলিশ
হ্যাকিংও শিখছে জঙ্গিরা: পুলিশ
তহবিল সংগ্রহের জন্য জঙ্গিরা ব্যাংক লুটে জড়িত হওয়ার পাশাপাশি হ্যাকিং রপ্ত করছে বলে তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।
সম্প্রতি হুজি ও আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের নয় সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে এই তথ্য জানা গেছে বলে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন বলেন, “তারা দলীয় তহবিলের জন্য অর্থ সংগ্রহে একাট্টা হয়ে ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে জালিয়াতি করে অর্থ লুটের পরিকল্পনায় ছিল।
“তারা হ্যাকিং শিখে কিভাবে ব্যাংকের গ্রাহকদের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের পাসওয়ার্ড ভেঙে সেখান থেকে টাকা লুট করা যায়, তাও রপ্ত করতে চেয়েছিল।”
সম্প্রতি সাভারের আশুলিয়ায় কমার্স ব্যাংকে ডাকাতিতে জঙ্গি সম্পৃক্ততার বিষয়টি ধরা পড়ার পর গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এদিকে মনোযোগী হয়েছেন।
এরপর রাজধানীর বনশ্রী ও সূত্রাপুর থেকে যে নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা দিনাজপুরের একটি বেসরকারি ব্যাংকে ডাকাতির পরিকল্পনা করছিল বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে।
তারা বলছেন, ওই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তারা বিভিন্ন ধরনের বোমা ও বিস্ফোরক তৈরি করতে শিখেছিল।
গত সপ্তাহে ওই নয়জনকে আটকের সময় বিভিন্ন ধরনের ৫ কেজি বিস্ফোরক, বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম, আটটি হাতবোমা, ছয়টি চকলেট বোমাও উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- কাজী ইফতেখার খালেদ ওরফে খালেদ, ফাহাদ বিন নুরুল্লাহ কাশেমী ওরফে ফাহাদ, মো. রাহাত, দ্বীন ইসলাম, আরিফুল করিম চৌধুরী ওরফে আদনান, মো. নুরুল ইসলাম, মাওলানা নুরুল্লাহ কাশেমী, মো. দেলোয়ার হোসেন, মো. ইয়াসিন আরাফাত।
আদালতের অনুমতি নিয়ে তাদের সাত দিনের জন্য হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তাতেই এসব তথ্য পাওয়া যায় বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তা ছানোয়ার জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “তারা উগ্র মতাদর্শ প্রচারের জন্য ‘বাংলাদেশ জিহাদী গ্রুপ’ নামের একটি জঙ্গি গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। মূলত ইন্টারনেটে যোগাযোগের মধ্য দিয়ে তারা দলীয় কর্মী সংগ্রহ করে।”
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, আশুলিয়ার ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে তারা নতুন কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছিল।
“বিভিন্ন উপ-গ্রুপে ভাগ হয়ে তারা প্রযুক্তিগত জ্ঞান আছে এমন প্রশিক্ষক দিয়ে নিজেদের কর্মীদের প্রশিক্ষিত করছিল,” বলেন এক কর্মকর্তা।
ছানোয়ার বলেন, “বিভিন্ন দেশের জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যেসব সংস্থা কাজ করছে, তাদের কর্মপদ্ধতি নিয়েও গবেষণা করছিল জঙ্গিরা। অর্থাৎ ওরা গবেষণা করে, আমরা কীভাবে কাজ করি।”
আশুলিয়ায় কমার্স ব্যাংকে ডাকাতিতে জড়িত অভিযোগে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের একাধিক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরা আগে জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য ছিল বলে গোয়েন্দাদের দাবি।
জেএমবি আগেই নিষিদ্ধ হয়েছিল। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকে সম্প্রতি নিষিদ্ধ করে সরকার।