শুক্রবার, ১০ জুলাই ২০১৫
প্রথম পাতা » » জাকাতের কাপড় নিতে গিয়ে পদদলন, নিহত অন্তত ২৩
জাকাতের কাপড় নিতে গিয়ে পদদলন, নিহত অন্তত ২৩
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি,
ময়মনসিংহে জাকাতের কাপড় নিতে গিয়ে বহু হতাহত
ময়মনসিংহে জাকাতের কাপড় নিতে গিয়ে হুড়োহুড়িতে পদদলিত হয়ে অন্তত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম জানান, শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে ময়মনসিংহ শহরের অতুল চক্রবর্তী রোডে ব্যবসায়ী শামীম তালুকদারের নূরানী জর্দা কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
ওই কারখানার মালিক শমীমসহ সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ। গঠন করা হয়েছে দুটি তদন্ত কমিটি।
ওসি বলেন, “অতিরিক্ত মানুষের ভিড়ের কারণে সেহরির পর কারখানার গেইট খোলার সঙ্গে সঙ্গে বহু নারী-পুরুষ একসঙ্গে ঢোকার চেষ্টা করে। এতে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয় এবং এক পর্যায়ে পদদলিত হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে।”
এ ঘটনায় আহত অর্ধশতাধিক নারীকে ময়মনসিংহ মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে অধিকাংশ লাশ ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল থেকে স্বজনরা নিয়ে যাওয়ায় নিহতের সংখ্যা নিয়ে তৈরি হয়েছে অস্পষ্টতা।
সকালে পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে বলা হয়, তারা ২৭ জনের মৃত্যুর খবর পেলেও সব লাশ তাদের হাতে নেই।
এরপর ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার (এসপি) মইনুল হক হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, “এ পর্যন্ত ২০টি ডেডবডি এখানে এসেছিল। তবে সংখ্যা আরও অধিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ আহত-নিহত ব্যক্তিদের পরিবার-পরিজন এদের রাস্তা থেকে নিয়ে গেছে বিভিন্ন দিকে।”
পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা প্রশাসক মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকি বলেন, তিনি ১৮ জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছেন। আর পুলিশ সুপার বেলা ১১টার দিকে ২৩ জনের লাশ হাসপাতালে যাওয়ার কথা নিশ্চিত করেন।
স্থানীয়রা জানান, পৌরসভা কার্যালয়ের পাশে নূরানী জর্দা কারখানায় প্রতিবছরই জাকাতের কাপড় দেওয়া হয়। এবারও শুক্রবার সকালে কাপড় দেওয়ার কথা থাকায় পাশের বস্তি এলাকা, এমনকি ব্রহ্মপুত্রের চর থেকেও হাজারখানেক নারী-পুরুষ রাতেই সেখানে ভিড় করে।
স্থানীয় এক বাসিন্দা এক নারীর লাশ নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যহন গেইট খুলছে, তহন পাড়াপাড়ি কইরা গেছে তো, মানে ধাক্কাধাক্কি কইরা গেছে, পইড়া গেছে। একজন পড়াতে আরও ১৫-২০ জন পড়ছে। পাড়া লাগছে, পাড়ার চোটে মারা গেছে।”
ঘটনার পরপরই রিকশা ও ভ্যানে করে হতাহতদের নিয়ে যাওয়া হয় মেডিকেলে। সকালে ওই কারখানার সামনে বহু মানুষের স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখা যায়।
পুলিশ সুপার বলেন, যারা জাকাত দিচ্ছিলেন, তারা আগে থেকে পুলিশকে কিছু জানাননি। আর অনেক ভোরে ঘটনা ঘটায় পুলিশ আগে কিছু জানতেও পারেনি।
অনুসন্ধান করে পুলিশ এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেবে বলে জানান তিনি।