শুক্রবার, ২৪ জুলাই ২০১৫
প্রথম পাতা » » দায়ী পুলিশের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা: মন্ত্রী
দায়ী পুলিশের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা: মন্ত্রী
সিলেটে শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যার পর পুলিশের ভূমিকা তদন্তে গঠিত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ‘কঠোর ব্যবস্থা’ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
সিলেটে তিন দিনের সফর শেষে শুক্রবার দুপুরে ঢাকা ফেরার পথে ওসমানী বিমানবন্দরে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
রাজন হত্যার ঘটনায় মামলা নিতে গাফিলতি ও আসামিদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করার অভিযোগ ওঠার পর পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ১৪ জুলাই তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়।
কমিটির প্রধান সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার রোকন উদ্দিন বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ কমিশনার কামরুল আহসানের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “এই প্রতিবেদনে যাদের দায়ী করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে সরকার এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবে।”
গত ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে চুরির অভিযোগ তুলে শিশু রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করে কয়েকজন। ওই নির্যাতনের দৃশ্য ভিডিও করে তারা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিলে সারা দেশে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।
গুমের জন্য রাজনের লাশ সরিয়ে নেওয়ার সময় মুহিত আলম, তার স্ত্রী লিপি বেগম, দুই প্রত্যক্ষদর্শী আজমত উল্লাহ ও ফিরোজ আলীসহ ১২ জনকে পুলিশ এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেছে, যাদের মধ্যে সাতজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মুহিতের ভাই সৌদি আরব প্রবাসী কামরুল ইসলাম ঘটনার পর সেদেশে পালিয়ে গেলে প্রবাসীরা তাকে আটক করে। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের পর আসামি মুহিতকে বাঁচাতে এবং মুহিতের সৌদিপ্রবাসী ভাই কামরুলকে পালিয়ে যেতে সিলেটের জালালাবাদ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলমগীর হোসেন ও এসআই আমিনুল ইসলাম সহযোগিতা করেন বলে অভিযোগ করেন রাজনের বাবা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল (ফাইল ছবি)
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল (ফাইল ছবি)
এছাড়া দায়িত্বে অবহেলা এবং থানায় মামলা করতে গেলে রাজনের বাবার সঙ্গে খারাপ ব্যবহারেরও অভিযোগ ওঠে পুলিশে এই দুই সদস্যের বিরুদ্ধে।
তদন্ত কমিটি গঠনের পর অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে জালালাবাদ থানা থেকে এসআই আমিনুলকে প্রত্যাহার করা হয়।
তিনদিনের সফরে সিলেট এসেই বুধবার রাজনের বাড়িতে গিয়ে তার বাবা-মাকে সান্ত্বনা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল।
মন্ত্রীর সফরের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে ৪২৪ পাতার প্রতিবেদন মহানগর পুলিশ কমিশনারের কাছে জমা দেয় তদন্ত কমিটি।
ওই প্রতিবেদনে ‘পুলিশ সদস্যদের গাফিলতি ও রাজনৈতিক প্রভাবের প্রমাণ’ পাওয়ার কথা আছে বলে গণমাধ্যমে খবর এলেও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন কমিটি প্রধান পুলিশ কর্মকর্তা রোকন।
কোন কোন পুলিশ সদস্যের নাম প্রতিবেদনে এসেছে জানতে চাইলে মহানগর পুলিশের কমিশনার কামরুল আহাসানও বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “তদন্ত প্রতিবেদন আমার অফিসে জমা দেওয়া হয়েছে। তবে আমি এখনো পড়িনি। তাই বিস্তারিত কিছু বলতে পারব না।”