দিল্লিতে শেষ শ্রদ্ধায় সিক্ত হবেন আবদুল কালাম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সদ্য প্রয়াত ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালামের মরদেহ নয়াদিল্লিতে তার সরকারি বাসভবনে নেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার সকালে একটি বিশেষ সামরিক বিমানে করে তার মরদেহবাহী কফিন নিয়ে আসামের রাজধানী গোয়াহাটি থেকে রওনা দেন ভারতের সামরিক বাহিনীর কয়েকজন সদস্য। এর আগে আবদুল কালামের মরদেহ বিমানে করে মেঘালয়ের রাজধানী শিলং থেকে গোয়াহাটি আনা হয়।
প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মুখপাত্র শিতাংশু কর জানান, মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় আবদুল কালামের মরদেহ দিল্লির পালাম বিমানবন্দরে পৌঁছায়। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পরিকর ও তিন বাহিনীর প্রধানেরা তার মরদেহ গ্রহণ করেন।
পালাম বিমানবন্দর থেকে আবদুল কালামের মরদেহ তার সরকারি বাসভবন ১০ রাজাজি মার্গে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
শিতাংশু কর বলেন, বিকেল ৩টা থেকে ১০ রাজাজি মার্গে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালামের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন।
ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও বিজ্ঞানী এ পি জে আবদুল কালাম সোমবার রাতে মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
ভারতে ‘মিসাইলম্যান’ হিসেবে পরিচিত আবদুল কালাম সোমবার সন্ধ্যায় শিলংয়ে ভারতীয় ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টের একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত তাকে হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যে ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআই ও অন্যান্য সংবাদমাধ্যম প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে।
আবদুল কালাম ভারতের একাদশতম রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তিনি ২০০২ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন। অকৃতদার এই বিজ্ঞানী একাধিকবার বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন।
আবদুল কালামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, বিরোধী দলের নেত্রী বেগম রওশন এরশাদ এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
১৯৩১ সালের ১৫ অক্টোবর তামিলনাড়ুর উপকূলসংলগ্ন রামেশ্বরমে এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন আবদুল কালাম। তার পুরো নাম আবুল পাকির জয়নুল আবেদিন আবদুল কালাম। বাবার নাম জয়নুল আবেদিন ও মায়ের নাম আসিআম্মা। পরিবারের আর্থিক অনটনের কারণে খুব অল্প বয়সেই তাকে জীবিকার প্রয়োজনে নানা রকম কাজ করতে হয়েছিল।
ভারতের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন ছাড়াও তিনি ৪০ বছর দেশটির বিভিন্ন বিজ্ঞান ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য- ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও) এবং ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (আইএসআরও)। এ প্রতিষ্ঠান দুটিতে কাজ করার সময় তিনি বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা ও মিসাইল তৈরিতে অবদান রাখেন।
ব্যালাস্টিক মিসাইল ও উৎক্ষেপণ যান তৈরিতে আবদুল কালামের অবদানের জন্য তিনি ‘মিসাইলম্যান’ হিসেবে স্বীকৃতি পান।