বুধবার, ৫ আগস্ট ২০১৫
প্রথম পাতা » অপরাধ | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » খালেদার গ্যাটকো মামলা চলবে, আত্মসমর্পণের নির্দেশ
খালেদার গ্যাটকো মামলা চলবে, আত্মসমর্পণের নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক : গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা বাতিল চেয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার করা দুটি রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। ফলে বিচাররিক আদালতে এ মামলা চলতে আর কোনো বাধা নেই।
মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি আব্দুর রবের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়।
হাইকোর্টের এ আদেশ বিচারকি আদালতে পৌঁছার পর দুই মাসের মধ্যে খালেদা জিয়াকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে তার জামিনের বিষয়টি বিবেচনায় নিতে নিম্ন আদালতকে বলেছেন উচ্চ আদালত।
এর আগে গত ১৮ জুন নাইকো দুর্নীতি মামলার রুলের রায়েও মামলাটি চলবে বলে আদেশ দেন বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি জাফর আহমেদের বেঞ্চ। এ মামলাটিও বাতিলে খালেদার রিট আবেদন ও এ সংক্রান্ত রুল খারিজ এবং বিচারিক কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে রায়ে বলা হয়, নাইকো দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম চলবে বিচারিক আদালতে।
খালেদার তিন দুর্নীতি মামলার মধ্যে অন্যটি বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলার রুল শুনানিও বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি জাফর আহমেদের বেঞ্চে চলবে। গত ৯ এপ্রিল এ মামলাটির কার্যক্রমের স্থগিতাদেশ আরো ছয় মাসের জন্য বৃদ্ধি করে আদালত।
গ্যাটকো দুর্নীতি মামলার রুল শুনানিতে গত ১৯ এপ্রিল থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত খালেদা জিয়ার পক্ষে রুলের শুনানি ও যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন করেন তার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল ও ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী। দুদকের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন মো. খুরশিদ আলম খান।
গত ১৭ জুন শুনানি শেষে যেকোনো দিন রায় ঘোষণা অপেক্ষমান (সিএভি) করেন আদালত। রবিবার এ বেঞ্চ রায় ঘোষণার দিন বুধবার ধার্য করে।
গত ১৯ এপ্রিল গ্যাটকো, নাইকো ও বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলার রুল শুনানি পেছাতে খালেদার চারটি সময়ের অাবেদন খারিজ করে প্রথমে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলার রুল শুনানি নেওয়া শুরু করেছিলেন বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি জাফর আহমেদের হাইকোর্ট বেঞ্চ। পরে বিচারপতি জাফর আহমেদের পরিবর্তে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলার রুল নিষ্পত্তি করতে বিচারপতি আব্দুর রবকে এ বেঞ্চে দেওয়া হয়।
খালেদা জিয়াকে প্রধান আসামি করে করা এসব মামলা হাইকোর্টের আদেশে কয়েক বছর ধরে স্থগিত ছিল। সম্প্রতি মামলাগুলো সচলের উদ্যোগ নিয়ে রুল শুনানির দিন ধার্যের আবেদন জানায় দুদক।
এসব মামলায় স্থায়ী জামিনে রয়েছেন খালেদা জিয়া।
গ্যাটকো মামলার
২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে সেনা সমর্থিত সরকারের সময় দুদকের উপ-পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী মতিঝিল থানায় খালেদা জিয়া ও তার ছোট ছেলে সদ্য প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনকে আসামী করে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, চট্টগ্রাম ও কমলাপুরের কন্টেইনার টার্মিনালে কন্টেইনার হ্যান্ডেলিংয়ের জন্য মেসার্স গ্লোবাল এগ্রোটেড লিমিটেডকে (গ্যাটকো) ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ দিয়ে রাষ্ট্রের কমপক্ষে এক হাজার কোটি টাকা ক্ষতি করা হয়েছে।
এরপর ২০০৮ সালের ১৩ মে খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
অভিযোগপত্র দায়েরের পর মামলাটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন খালেদা জিয়া। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে ২০০৮ সালের ১৫ জুলাই হাইকোর্ট মামলাটি কেন বেআইনী ও কর্তৃত্ববহির্ভুত হিসেবে ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে।
একইসঙ্গে মামলার কার্যক্রম দুইমাসের জন্য স্থগিত করা হয়। সময়ে সময়ে এই স্থগিতাদেশ বাড়ানো হয়।