আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বোমা হামলার ‘ফর্মুলা’: কামরুল
পক্ষকাল ডেস্ক “পুরান ঢাকার ইমামবাড়ায় শিয়াদের তাজিয়া মিছিলে হামলার জন্য সরাসরি বিএনপি-জামায়াত জোটকে দায়ী করেছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম।
শনিবার সকালে বোমা হামলার স্থল নাজিম উদ্দিন রোডের হোসাইনী দালান চত্বরে যান মন্ত্রী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
দুদিন আগে গাবতলীতে তল্লাশি চৌকিতে এক এএসআইকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর গ্রেপ্তার একজনকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থেকে বোমা ও বিস্ফোরক উদ্ধার করে পুলিশ।
হোসাইনী দালানে ব্যবহৃত বোমার সঙ্গে কামরাঙ্গীরচরে উদ্ধার হওয়া বোমার মিল আছে বলে পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক ইতোমধ্যে জানিয়েছেন।
আইজিপি ঘুরে আসার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল সাংবাদিকদের বলেন, দুই বিদেশি হত্যা, গাবতলীতে পুলিশ হত্যা এবং শিয়াদের তাজিয়া মিছিলে বোমা মেরে হত্যায় একই গোষ্ঠী জড়িত।
“যারা আন্দোলনে ব্যর্থ, তারা নব ফর্মুলায় এটা করছে।”
তারা কারা- প্রশ্ন করা হলে কামরুল বলেন, “স্পষ্ট করেই বলি- জামায়াত, শিবির, বিএনপি।”
কামরুল ইসলাম (ফাইল ছবি)
এর আগে দুই বিদেশি হত্যাকাণ্ডের জন্যও বিএনপিকে দায়ী করে সরকারের কর্তাব্যক্তিদের বক্তব্য এসেছে। তা নাকচ করে বিএনপি বলেছে, তদন্তের আগেই এই ধরনের বক্তব্যে প্রকৃত অপরাধীরা পার পেয়ে যাবে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর ঢাকা মেডিকেলে আহতদের দেখতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল সাংবাদিকদের বলেন, দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এই হামলা হয়েছে।
শিয়া সম্প্রদায়ের উপর হামলার সঙ্গে দুদিন আগে গাবতলীতে এএসআই খুনের যোগসূত্র রয়েছে বলে দাবি করেছেন পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক।
দুই বিদেশি হত্যাকাণ্ডের পর দুর্গাপূজা ও আশুরা উপলক্ষে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে শিয়া সম্প্রদায়ের কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটে শনিবার ভোররাতে।
নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি ছিল কি না- প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “নিরাপত্তা যথেষ্ট ছিল। আতঙ্ক তৈরি করতে এটা করা হয়েছে।”
কারা এই হামলা চালিয়েছে- জানতে চাইলে সরাসরি কাউকে দায়ী করেননি তিনি।
দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে দাবি করে কামাল বলেন, “আমাদের কাছে অনেক তথ্য রয়েছে। আমরা সব খতিয়ে দেখব। অপরাধীদের শিগগিরই বের করা হবে।”
ইমামবাড়ার ঘটনায় সিসি ক্যামেরার চিত্র পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
জঙ্গিদের তৎপরতার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “জঙ্গিদের আমরা কখনও মাথা উঁচু করতে দিইনি, এবারও দেব না।”
হতাহতদের অর্থ সহায়তা
ইমামবাড়ায় শিয়াদের তাজিয়া মিছিলের উপর হামলায় নিহত এবং আহত পরিবারদের জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছে ঢাকা জেলা প্রশাসন।
শনিবার জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আবুল ফজর মীর ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে টাকা বরাদ্দের কথা জানান।
নিহতের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা এবং আহতদের ৫ হাজার করে টাকা দেওয়া হচ্ছে।
বোমা হামলায় সাজ্জাদ হোসেন সানজু নামে এক কিশোর নিহত হন। অর্ধ শতাধিক আহতের মধ্যে শনিবার সকালে নয়জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।