সোমবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ | অর্থনীতি | ব্যাংক-বীমা » অগ্রণী ব্যাংকের এমডি-ডিএমডির অনিয়ম তদন্তের নির্দেশ
অগ্রণী ব্যাংকের এমডি-ডিএমডির অনিয়ম তদন্তের নির্দেশ
টনক নড়লো অর্থ মন্ত্রণালয়ের
২০১৬ ফেব্রুয়ারি ২৮
অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের অনিয়মের বিষয়টি ইতোপূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে ধরা পড়লেও এত দিন এ বিষয়ে নীরব ছিল সরকার। কিন্তু সম্প্রতি এ বিষয়ে টনক নড়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের। গত ১১ ফেব্রুয়ারি অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আবদুল হামিদ ও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান খানের বিরুদ্ধে ৪০০ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। চিঠিতে অনিয়ম খতিয়ে দেখতে ফাংশন্যাল অডিট ফার্ম নিয়োগ এবং এ-সংক্রান্ত দুটি ফার্মেরও নাম সুপারিশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে অনিয়ম তদন্তে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস ফার্ম ‘এসএফ আহমেদ’ ও ‘এমএবিএএস অ্যান্ড জে পার্টনার্স’-কে নিয়োগ দেওয়ার পাশাপাশি নিরীক্ষা প্রতিবেদনটি আগামী ২ মাসের মধ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠাতে বলা হয়েছে।
এদিকে অনিয়ম তদন্তে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এ চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আবদুল হামিদ।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনাপত্তি ছাড়াই গত বছরের ২৫ জুলাই অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ আবদুল হামিদের চাকরির মেয়াদ এক বছর বাড়ায় অর্থ মন্ত্রণালয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের বাণিজ্যিক অডিট শাখার উপ-সচিব নিয়াজ রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, অগ্রণী ব্যাংকের চার বছরে (০৫-০৬-২০১০ থেকে ০২-০২-২০১৪ পর্যন্ত) প্রায় ৪০০ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এই সময়ে ঋণ অনুমোদন ও বিতরণ সংযুক্ত কার্যপরিধি অনুযায়ী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অডিট কমিটির তত্ত্বাবধানে একটি ফাংশন্যাল অডিট পরিচালনা করা প্রয়োজন।
এ ক্ষেত্রে ফাংশনাল অডিট কার্যক্রমে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস ফার্মকে সার্বিক সহযোগিতা এবং এর ব্যয়ভার অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের বহনের জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।
চিঠিতে ফাংশনাল অডিট কার্যক্রমের কার্যপরিধি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা ও ব্যাংকের আইনের বিধানসমূহকে পাশ কাটিয়ে পরিচালনা পর্ষদের নিকট অসত্য তথ্য দিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ০৫-০৬-২০১০ থেকে ০২-০২-২০১৪ পর্যন্ত সময়ে অনিয়মিতভাবে বিপুল অঙ্কের ঋণ অনুমোদন বিতরণের অনুসন্ধান এবং এর জন্য প্রকৃতভাবে ব্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখবে অডিট ফার্ম।
এ ছাড়া বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ৪টি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তানাকা গ্রুপ, মেসার্স জজ ভুঁঞা গ্রুপ, মেসার্স বিটিএল ও মুন গ্রুপ ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ৪০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন এবং বিতরণের বিষয়টি বিস্তারিতভাবে অনুসন্ধান এবং এর জন্য ব্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে অডিটি কমিটির কার্যক্রমের বিষয়ে আরও বলা হয়েছে, ঋণের বিপরীতে অর্থায়নকৃত প্রকল্পের বাস্তব প্রজেক্ট ভ্যালুয়েশন, ঋণ-ইক্যুইটি অনুপাত এবং প্রকল্পের অবস্থান ও বাণিজ্যিক সম্ভাবনা পর্যালোচনা করতে বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ঋণসমূহের বিপরীতে বন্ধকীকৃত সহায়ক জামানত ও সম্পত্তির মূল্যায়নের সঠিকতা ও বন্ধকী সম্পত্তির দলিলাদি যাচাই করা হবে।