ফাইনালের মিশনে পাকিস্তান বধের স্বপ্ন মাশরাফিদের
পক্ষকাল ডেস্কঃ : চার বছর আগে মিরপুর স্টেডিয়ামে এক ইতিহাস রচিত হয়েছিল। বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেছিল। তবে পাকিস্তানের কাছে মাত্র ২ রানে হেরে সেদিন এশিয়া সেরা হওয়ার স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছিল তখন। টি২০ ফরম্যাটে প্রথমবার অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে ফাইনাল খেলতে সেই পাকিস্তান বাধাটাই এবারও পেরোতে হবে বাংলাদেশকে। বুধবার সন্ধ্যায় মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সেই মিশনে নামবেন মাশরাফিরা।প্রথম দল হিসেবে প্রতিযোগিতার ফাইনালে ওঠেছে ভারত। প্রথম পর্বে চার ম্যাচের সবকটিতেই জয় পেয়েছে তারা। আরব আমিরাত ইতোমধ্যে ফাইনালের দৌঁড় থেকে ছিটকে পড়েছে। আর তিন ম্যাচের দুটিতে হেরে শ্রীলঙ্কার ফাইনাল সম্ভাবনাও এখন ক্ষীণ। বাংলাদেশ আরব আমিরাত ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছে। এখন মাশরাফিদের সামনে একটাই সমীকরণ পাকিস্তানকে হারাতে হবে। সেই সমীকরণ মেলাতে এখন কাজ করছেন তারা।
এই ম্যাচের জন্য দলে কিছুটা পরিবর্তন ইতিমধ্যে হয়ে গেছে। ইনজুরির কারণে বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। তার পরিবর্তে ব্যাটিংয়ে শক্তি বৃদ্ধির জন্য মারকুটে ওপেনার তামিম ইকবালকে স্কোয়াডে নেওয়া হয়েছে। যদিও মুস্তাফিজের বিকল্প পেসার হিসেবে আবু হায়দার রনিকে নেওয়ার সুযোগ আছে কোচ হাথুরুসিংহের। তথাপি সেপথে হাঁটার সম্ভাবনা কম বলেই মনে হচ্ছে। তাই প্রথম তিন ম্যাচে চার পেসার নিয়ে মাঠে নামলেও পাকিস্তানের বিপক্ষে সেখানে হয়তো তিন পেসার নিয়েই খেলবেন মাশরাফিরা।
নিয়মিত বোলার হিসেবে আল-আমিন হোসেন, তাসকিন আহমেদ ও মাশরাফি থাকছেন। সঙ্গে অলরাউন্ডার হিসেবে রয়েছেন স্পিনার সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সাব্বির রহমানকেও ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে মাশরাফির হাতে। যদিও সাব্বির ব্যাট হাতেই বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
পাকিস্তানের বিপক্ষে এই ম্যাচে বাংলাদেশ কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে শুধু লড়াই নয়, কর্তৃত্ব রেখে খেলতে চান। তিনি বলেন, ‘আমরা ভালো করছি। টি২০-তে আমরা আগে শ্রীলংকাকে হারাতে পারিনি। এবার সেটা করতে পেরেছি। তাই আমরা আগে যা পারিনি তা এবার অর্জন করতে যাচ্ছি। এমন আশা সবসময় থাকে। কারও বিপক্ষে লড়াই করা কোনো সাফল্য নয়। আমরা যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, সেভাবে খেলব।’
আর অধিনায়ক মাশরাফি বলেন, ‘এই ম্যাচে যারা জিতবে তাদেরই ফাইনাল খেলার সুযোগ বেড়ে যাবে। সুতরাং এখানে আমাদের প্রতিটি জায়গায়ই সুযোগ আছে। প্রতিপক্ষেরও সুযোগ আছে। তারা একবার টি২০-তে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এছাড়া তাদের অনেক খেলোয়াড় বিভিন্ন জায়গায় টি২০ খেলে। আমরাও নতুন করে শুরু করেছি। অনেক কিছু চেষ্টা করেছি অনুশীলনে। সেগুলো নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা যদি ওদের দিকে না তাকিয়ে আমাদের পরিকল্পনাগুলো ঠিকঠাক প্রয়োগ করি, আমার মনে হয় আমাদের সব সুযোগই আছে।’
পাকিস্তানও চলতি এশিয়া কাপে যেখান থেকে শুরু করেছিল ধীরে ধীরে সেখোন থেকে উন্নতির পথে আছে। ভারতের বিপক্ষে ব্যাটসম্যানরা ভালো না করলেও দলটির বোলাররা দুর্দান্ত খেলেছে। বিশেষ করে মোহাম্মদ আমির দলটির প্রধান বোলিং অস্ত্র। তার সঙ্গে আরব আমিরাতের ম্যাচে শোয়েব মালিক ও ওমর আকমলের জোড়া হাফসেঞ্চুরি ব্যাটিংয়েও দলটিকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে। মোহাম্মদ ইরফান, মোহাম্মদ সামি ও শহীদ আফ্রিদিরা তো রয়েছেনই বোলিংয়ে।
তাই পাকিস্তানও এই ম্যাচ নিয়ে আশাবাদী। দলটির বোলিং কোচ আজহার মেহমুদ বলেছেন, ‘সবাই ভুল করেছে। আমরা ভুল থেকে যথেষ্ট শিক্ষা গ্রহণ করেছি। ভারতের দিকে তাকান, ভারত বিশ্বের সেরা ব্যাটিং লাইনের দল। তারাও এখানে ধুকছে। উইকেটটা খুবই কঠিন ছিল। তবে এখন পরিবর্তন হয়েছে। খেলোয়াড়রা এখন অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। ক্রিকেটটা আত্মবিশ্বাসের খেলা। আশা করছি সামনের ম্যাচে আমরা কামব্যাক করব। বল-ব্যাট উভয় দিকেই ভাল করব।’
নিজেদের শক্তির দিকে ইঙ্গিত করে আজহার মেহমুদ বলেন, ‘আমির বিশ্বমানের বোলার। সে আগে যেভাবে বোলিং করেছে প্রত্যাবর্তনের পরও সেভাবেই খেলছে। আমিরাতের বিপক্ষে জয়ের পর আমাদের ছেলেরা মানসিকভাবে বেশ চাঙা। মালিক ও আকমল দায়িত্ব নিয়ে খেলেছে। তারা দুজন ম্যাচের সফল সামপনী টেনেছে। এটা আমাদের দলের জন্য কিছুর ইঙ্গিত বহন করে।’
দুদলের সামনে অভিন্ন লক্ষ্য; জিততে হবে ম্যাচ। সেজন্য নিজেদের সামর্থ্যের শেষ বিন্দু দিয়ে লড়বে তারা। সেই লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত কারা জিতবে তা দেখতেই এখন অপেক্ষা।