বৃহস্পতিবার, ১৭ মার্চ ২০১৬
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | ব্যাংক-বীমা | সম্পাদক বলছি » ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার উদ্ধারের আশা ‘ক্ষীণ’
৮ কোটি ১০ লাখ ডলার উদ্ধারের আশা ‘ক্ষীণ’
পক্ষকাল ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ থেকে লোপাট হওয়া বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলারউদ্ধারের খুব একটা আশা দেখছে না ফিলিপিন্সের ‘ব্লু রিবন’ সিনেট কমিটি।ফিলিপিন্সের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ এই অর্থ পাচারের ঘটনার তদন্তে থাকা এই কমিটির চেয়ারম্যান তেওফিস্তো গুংগোনা বলেছেন, “ওই অর্থ উদ্ধার করা খুবই কঠিন হবে, কেননা তা এরই মধ্যে ব্ল্যাক হোলে ঢুকে পড়েছে।”বুধবার সিনেট কমিটির শুনানিতে সিনেটর গুংগোনার এই বক্তব্য আসে বলে ফিলিপিন্সের ডেইলি ইনকোয়ারারের খবর।কমিটির সদস্য সিনেটর সের্গিও ওসমেনাকে ঊদ্ধৃত করে পত্রিকাটি লিখেছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিলিপিন্সের একটি ব্যাংকে আসার পর ক্যাসিনোর জুয়ার টেবিলে চলে যাওয়া ওই টাকা এরই মধ্যে দেশের বাইরে পাচার হয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।ফেব্রুয়ারির শুরুতে ‘সুইফট ম্যাসেজ হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে’ম অর্থ লোপাটের ওই ঘটনা বাংলাদেশের মানুষ জানতে পারে ২৯ ফেব্রুয়ারি ইনকোয়ারারের এক প্রতিবেদনে।সিনেট কমিটির অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফেডারেল রিজার্ভ অব নিউ ইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঞ্চিত ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ৫ ফেব্রুয়ারি ফিলিপিন্সের মাকাতি শহরে রিজল ব্যাংকের জুপিটার স্ট্রিট শাখায় ভুয়া নামে খোলা চারটি অ্যাকাউন্টে জমা হয়।পরে তা তুলে স্থানীয় মুদ্রা পেসোয় রূপান্তর করা হয়। এর মধ্যে ৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার দুটি ক্যাসিনোর জুয়ার টেবিলে চলে যায় বলেসিনেট কমিটিকে জানিয়েছে ফিলিপিন্সের অ্যামিউজমেন্ট গেমিং করপোরেশন (পিএজিসিওআর), যারা ক্যাসিনোগুলোতে আর্থিক লেনদেনের নজরদারির দায়িত্বে রয়েছে।সিনেটর ওসমেনাকে উদ্ধৃত করে ইনকোয়ারার লিখেছে, ওই টাকা কোথায় গেছে, তার পথ খোঁজার বিষয়টি অনেকাংশে নির্ভর করছে ক্যাসিনোগুলোর ওপর।ইনকোয়ারার এর আগে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, চুরি যাওয়া অর্থের মধ্যে ২ কোটি ৬০ লাখ ডলার ক্যাগায়ান প্রদেশের সোলায়ার রিসোর্ট অ্যান্ড ক্যাসিনোতে এবং আরও ২ কোটি ডলার ইস্টার হাওয়াই ক্যাসিনো অ্যান্ড রিসোর্টে ঢোকে। কিন্তু বাকি টাকা কোথায় গেছে, সে তথ্য পিএজিসিওআর কর্মকর্তারা উদঘাটন করতে পারেনি।তারা বলছেন, বড় জুয়াড়িদের জন্য এসব ক্যাসিনোতে বাকিতে চিপস কেনার সুবিধা রয়েছে। রিজল ব্যাংকের সেই সন্দেহভাজন অ্যাকাউন্টের টাকা জুয়াড়িদের অ্যাকাউন্টে জমা হওয়ার আগেই বাকির সুবিধা নিয়ে তারা খেলতে শুরু করেছিলেন।ফিলিপিন্সের আইন অনুযায়ী ক্যাসিনোতে জুয়ায় জেতা অর্থ থেকে নির্ধারিত ট্যাক্স দিলে তা বৈধ আয় বিবেচিত হয়। সেভাবেই ওই টাকা হাতবদল হয়ে পাচার হয়ে গেছে বলে তদন্তকারীদের ধারণা।
বুধবার সিনেট কমিটির শুনানির পর সিনেটর ওসমেনা ফিলিপিন্সের সাংবাদিকদের বলেন, ক্যাসিনোগুলো কার কাছ থেকে ওই টাকা পেয়েছে এবং পরে কার হাতে টাকাগুলো গেছে সে তথ্য খোঁজার চেষ্টা করবেন তারা, যদিও টাকা উদ্ধারের খুব বেশি আশা তারা দেখছেন না।”আমরা ক্যাসিনোগুলো থেকে আরও তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করব। সোলায়ারের প্রেসিডেন্টকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারিনি, কেননা তিনি দেশে ছিলেন না। আর যে আইনজীবীকে তারা পাঠিয়েছিল, সে বিস্তারিত তথ্য জানে না।”
ওসমেনা বলেন, সিনেট কমিটি ওই অর্থের ‘ইলেকট্রনিক ট্রেইল’ খোঁজার চেষ্টা করবে। তবে আইনে অনেক ‘ফাঁক’ থাকায় ক্যাসিনোগুলো কতোটা তথ্য শেষ পর্যন্ত দেবে, সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি।