বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ ২০১৬
প্রথম পাতা » জেলার খবর » সাতক্ষীরা আহ্ছানিয়া মিশন এডহক কমিটি’র মেয়াদ বাড়লো আরো ৬০ দিন
সাতক্ষীরা আহ্ছানিয়া মিশন এডহক কমিটি’র মেয়াদ বাড়লো আরো ৬০ দিন
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা আহ্ছানিয়া মিশন একটি সমাজ সেবামূলক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে নানা অনিয়মে সমালোচিত এ প্রতিষ্ঠানটিকে দুর্নীতির কবল থেকে মুক্ত করতে লিপলেট প্রকাশ করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী ও মুসুল্লীবৃন্দ। ‘সাতক্ষীরা আহ্ছানিয়া মিশনের এডহক কমিটির নানাবিধ অনিয়ম, দুর্নীতি ও আপত্তিকর কর্মকান্ড অতিসত্বর বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ’ শিরোনামে বিতরণকৃত লিপলেটটি ইতিমধ্যে শহরের গুরুত্বপুর্ণ স্থানে আলোচিত হয়েছে। এডহক কমিটি’র বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের ঘটনা প্রকাশ করা হলেও তার কোন প্রতিকার হচ্ছেনা বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা আহ্ছানিয়া মিশনের একটি পুর্ণাঙ্গ ম্যানেজিং কমিটি থাকাবস্থায় ২০১৫ সালের ৭জুন ৩ মাসের জন্য ১১ সদস্য
বিশিষ্ট একটি এডহক কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি’র সদস্য সচিব ছিলেন কৃষিবিদ আজাদ মাহমুদ। এছাড়া রেজুলেশন খাতায় উল্লিখিত রয়েছে এডহক কমিটি নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত কার্য সম্পন্ন করবেন। কিন্তু একের পর এক অজুহাতে এডহক কমিটি’র কতিপয় সদস্যরা নির্বাচন সংক্রান্ত কোন কার্যক্রম না করে ‘অডিট কমিটি, উন্নয়ন কমিটি, দাতব্য চিকিৎসালয় কমিটি, লাইব্রেরি স্থাপন কমিটি গঠন’ করে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া
এডহক কমিটির মেয়াদ ৩ মাস থাকা সত্বেও তারা দফায় দফায় শুধু কমিটির মেয়াদ বাড়িয়ে অব্যাহত রেখেছে তাদের অনিয়ম ও দুর্নীতি।এ সকল অনিয়ম ও দুর্নীতি’র কথা স্বিকার করে এবং বার বার এডহক কমিটির মেয়াদ বাড়ানোয় ৪ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসানের নিকট পদত্যাগ পত্র জমা দেন এডহক কমিটির সদস্য সচিব কৃষিবিদ আজাদ মাহমুদ। এডহক কমিটির অত্যাচারে মসজিদের মুয়াজ্জিন হাফেজ মেহেদীও এ প্রতিষ্ঠান থেকে চলে যান। পরবর্তীতে সম্পূর্ণ অনিয়মতান্ত্রিকভাবে নতুন সদস্য ভর্তি, একজন অফিস সহকারী নিয়োগ, মৃত সদস্যের নামের স্থানে এডহক কমিটির মনোনিত নাম বসানো হয়েছে বলে স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে। এদিকে, এডহক কমিটি’র এক সদস্য জি.এম মাহাবুবর রহমান। তিনি সাতক্ষীরা আহ্ছানিয়া মিশনের এডহক কমিটিতে যোগদানের পর নারী কেলেক্কারী মামলায় জেল খাটেন। যার মামলা নং- ৪৪৮/৩২৩/৩০৭। এছাড়া মুনশিপাড়ায় একটি মসজিদ থেকে টাকা আত্মসাৎ করায় তাকে জুতা
পেটা করে বিতাড়িত করার অভিযোগ রয়েছে। এডহক কমিটি’র সদস্য সচিব কৃষিবিদ আজাদ মাহমুদও তাকে বিধি বহির্ভূত ও নানা অনিয়মের কারণে শোকজ করেন।সূত্রে জানা যায়, জি.এম মাহাবুবর রহমান প্রতিষ্ঠানের নামে ২ মেট্রিক টন গম উত্তোলন করে উহার বিক্রয়কৃত ৩২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে মিশনের অনুষ্ঠানের খরচ খাতে ২০ হাজার ২শ টাকা দেখিয়েছেন এবং বাকি ১১ হাজার ৮০০ টাকা দিয়ে ৫বস্তা চাউল কিনে দেন। পরে জানাজানি হলে রাতের আধারে আরও ২ বস্থা চাউল কিনে আনেন। এছাড়া লাইব্রেরি স্থাপনের নামে মাদ্রসা’র একটি কক্ষ নিয়ে প্রায় ৮০ হাজার টাকা খরচ দেখিয়েছে। এছাড়া সদস্য ভর্তি ফি’র টাকা জুলাই মাসে জমা নিয়েও হিসাব দেননি তিনি। এ ব্যাপারেও তাকে শোকজ করা হয়েছে।ইতিমধ্যে এডহক কমিটি ভেঙ্গে দিতে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছে এলাকাবাসী। যার স্মারক নং- ১০৪০০১৬০২২৫৪০৮৭০০-৯।
এলাকাবাসীর দাবী-‘অবিলম্বে সাতক্ষীরা আহ্ছানিয়া মিশনের এডহক কমিটি ভেঙ্গে প্রতিষ্ঠানের গঠনতন্ত্র মোতাবেক এডহক কমিটির মেয়াদে যারা সদস্য ভর্তির ফি জমা দিয়েছেন তাদেরকে ভোটার সদস্য না করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করা।’ গঠনতন্ত্রের ১০ (১) ধারায় উল্লেখ রয়েছে যেসকল সদস্যের মেয়াদ ছয় মাস পূর্ণ হয়নি তারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন না। তবে ২৩ (গ) ধারা মোতাবেক সভাপতির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।উল্লেখ্য যে, গত ২৮ মার্চ জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে প্রতিষ্ঠানের
নিয়মিত কমিটি গঠনের লক্ষ্যে বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দুই জন প্রার্থী থাকায় জেলা প্রশাসক মহোদয় সকলকে হাত তুলে সমর্থন করার আহবান জানান। প্রথমে আলহাজ্ব গোলাম মোস্তফা’র পক্ষে হাত তুলতে বললে ১৫-২০ জন সদস্য হাত তুলে সমর্থন জানান। পরে মিশনের সাবেক সহ-সভাপতি আলহাজ্ব শেখ আজিজুল হক এর পক্ষে ৬০-৭০ জন সদস্য সমর্থন জানান। কিন্তু পরাজিত প্রার্থীর সদস্যরা জেলা প্রশাসকের কথা না শুনে সভাস্থল ত্যাগ করেন। এসময় জেলা প্রশাসক ও প্রতিষ্ঠানের সভাপতি নির্বাচন হবে ঘোষণা দিয়ে সভার সমাপ্তি করেন। পরবর্তীতে ৩০ মার্চ জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন এডহক কমিটির একটি মিটিং ডেকে একমিটির মেয়াদ আরও ২মাস বৃদ্ধি করেন। এবং ৩জন সদস্য পদত্যাগ করায় সেখানে আরও ৩জনকে