রবিবার, ১০ এপ্রিল ২০১৬
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | সম্পাদক বলছি » পানামা পেপারসে এ যাবত ৪৭ বাংলাদেশির নাম
পানামা পেপারসে এ যাবত ৪৭ বাংলাদেশির নাম
পক্ষকাল ডেস্কঃ
কর ফাঁকি ও অর্থ পাচার সংক্রান্ত সাড়া জাগানো অফশোর লিকস তথা পানামা পেপারসে নতুন করে আরও ২২ বাংলাদেশী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে নয়জন ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠান। এ নিয়ে ফাঁস হওয়া পানামা পেপারসে বাংলাদেশের ৩৪ জন ব্যক্তি ও দুটি প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে, যাদের বিপরীতে মোট ৪৫টি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এদের মধ্যে ২৩ জনের বাড়ির ঠিকানাও উল্লেখ আছে। প্রাপ্ত নথিপত্রে দেখা যায়, চার ব্যক্তির নামে দু’টি করে অ্যাকাউন্ট রয়েছে, যৌথ অ্যাকাউন্ট রয়েছে দু’টি।তালিকায় নতুন করে যাদের নাম আসলো, তারা হলেন: এএফএম রহমাতুল্লাহ বারী, ক্যাপ্টেন এমএ জাউল, সালমা হক, কাজী রায়হান জাফর, মির্জা এম ইয়াহইয়া, মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, সৈয়দা সামিনা মির্জা ও জুলফিকার হায়দার। আর প্রতিষ্ঠানটি হলো- বিবিটিএল।
এর আগে ফাঁস হওয়া নথিতে যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে: আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ ও তার স্ত্রী নিলুফার জাফর। মার্কেন্টাইল কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান আজিজ খান, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আজিজ খান, কন্যা আয়েশা আজিজ খান, ভাই জাফর উমায়েদ খান ও ভাগ্নে ফয়সাল করিম খান। ইউনাইটেড গ্রুপ অব কোম্পানির হাসান মাহমুদ রাজা, খন্দকার মঈনুল আহসান (শামীম), আহমেদ ইসমাইল হোসেন, আখতার মাহমুদ। স্কয়ার গ্রুপ অব কোম্পানিজের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত স্যামসন এইচ চৌধুরী। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক প্রেসিডেন্ট ড. এএমএম খান। মমিন টির পরিচালক আজমত মঈন। পাট ব্যবসায়ী দিলিপ কুমার মোদি। সি পার্ল লাইন্সের চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ সিরাজুল হক। বাংলা ট্রাক লিমিটেডের মো. আমিনুল হক, নাজিম আসাদুল হক ও তারিক ইকরামুল হক। ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপ বিল্ডার ক্যাপ্টেন সোহাইল হাসান। মাসকট গ্রুপ অব কোম্পানির চেয়ারম্যান এফএম জোবায়দুল হক। সেতু কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, তার স্ত্রী উম্মে রব্বানা। স্পার্ক লিমিটেড ও অমনিকেমের চেয়ারম্যান ইফতেখারুল আলম। আবদুল মোনেম লিমিটেডের নির্বাহী ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএসএম মহিউদ্দিন মোনেম, তার স্ত্রী আসমা মোনেম এবং অনন্ত গ্রুপের শরীফ জহির।
ব্রিটিশ ভার্জিনে পরিচালক পদে যেসব বাংলাদেশি
এএসএম মহিউদ্দিন মোনেম, মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, এএফএম রহমতুল বারী, আজমাত মঈন, খাঁজা শাহাদাতুল্লাহ, উম্মে রুবানা, সোহায়েল হাসান, এএফএম রহমতুল বারী, দিলীপ কুমার মোদি, মো: শাহেদ মাসুদ, মোহাম্মদ আজিজ খাঁন, মোহাম্মদ ফয়সাল করিম খাঁন, নিলুফার জাফরউল্লাহ, সৈয়দা সামিনা মির্জা, জাফর উমায়েদ খাঁন, কাজী জাফরউল্লাহ, কাজী রায়হান জাফর, মির্জা এম ইয়াহিয়া, মোহাম্মদ আমিনুল হক, নাজিম আসাদুল হক, মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম, মিয়া রফিকুল, স্যামসন চৌধুরী, এএমএম খান, হাসান মাহমুদ (রাজা), তারিক একরামুল হক, নজরুল ইসলাম, অনীতা চৌধুরী, মুজিবুর রহমান চৌধুরী, আহমেদ ইসমাঈল হোসাইন, খন্দকার মঈনুল আহসান (শামীম), শরীফ জহির, ফৌজিয়া নাজ, সাইফুল আমিন ভূইয়া, সৈয়দ সিরাজুল হক, সালমা হক, আখতার মাহমুদ, ইফতেখারুল আলম, মাহবুব উর রহমান, ক্যাপ্টেন এমএ জৌল ও এফএম জুবাইদুল হক।
যাদের বাড়ির ঠাকানা উল্লেখ করা হয়েছে:
ম্যাগনিফিশেন্ট ম্যাগনিচুড ইনকরপোরেশনের পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার এএসএম মহিউদ্দিন মোনেম। ঠিকানা: ১১১ বীরউত্তম সিআর দত্ত সড়ক (সোনাগাঁও রোড) ঢাকা ১২০৫। এই কোম্পানির আরেক পরিচালক আসমা মোমেন।
টাইটান অ্যালায়েন্স লিমিটেডের পরিচালক এবং প্রমিনেন্ট কনটেইনার লাইনস প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডরি এএফএম রহমাতুল বারি। ঠিকানা: ৫৯২/এ নাজিরপুর বাইলেন চট্টগ্রাম ৪১০০।
রাইটস্টার প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার আজমত মঈন। ঠিকানা: সিডব্লিউএন (এ), কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ, গুলশান-২, ঢাকা-১২১২।
বাংলা ট্রাক ওভারসিজ লিমিটেডের পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার। ঠিকানা: দ্বিতীয় তলা, ৪ মহাখালী বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা- ১২১২।
বিবিটিএল এবং স্ট্রস ইউনিভার্সাল লিমিটেডের এর প্রধান ক্লায়েন্ট (মাস্টার ক্লায়েন্ট)। ঠিকানা: রোড নং ১৭, বাড়ি নং ৩১, ব্লক ই, বনানী, ঢাকা- ১২১৩।
সভেরিন ক্যাপিটাল প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার ক্যাপ্টেন এমএ জাউল। ঠিকানা: বাড়ি নং ৩, রোড নং ৩, খুলশি হিল, চট্টগ্রাম।
রাইটস্টার প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার দিলিপ কুমার মোদি। ঠিকানা: বাড়ি নং ২৩বি, রোড নং ৩৫, গুলশান-২, ঢাকা- ১২১২।
স্প্রিং শোর ইনকরপোরেটেড এর পরিচালক এফএম জুবাইদুল হক। ঠিকানা: বাড়ি নং ২৬জে, রোড নং ১৮, বনানী, গুলশান, ঢাকা ১২১২। একই কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার এফএম জুবাইদুল হক এবং সালমা হক।
বেকিংসডেল লিমিটেড, গ্রাটানভাইল লিমিটেড এবং বর্নিও পাওয়ার্স লিমিটেডের মালিক জাফের উমিদ খান। ঠিকানা: বাড়ি নং ৫, রোড নং ৩২, সেকশন ৭, উত্তরা, ঢাকা।
এল্ডার স্টার লিমিটেডের পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার কাজী রায়হান জাফর। ঠিকানা: বাড়ি নং ৩৬, রোড ৬৩, গুলশান-২।
তালাভেরা ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইনকরপোরেশনের পরিচালক মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী। ঠিকানা: বাড়ি নং ৬, রোড নং ৬৭, গুলশান-২, ঢাকা- ১২১৩।
দ্য কন্ট্রাক্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের পরিচালক মির্জা এম ইয়াহিয়া। ঠিকানা: ১৬/১/বি, তল্লাবাগ, সোবহানবাগ, ঢাকা- ১২০৭।
পিরামিড রক লিমিটেডের পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার মোহাম্মদ আমিনুল হক। ঠিকানা: বাড়ি নং ১৩, রোড নং ১০৪, গুলশান, ঢাকা-১২১২।
লাকি ড্রাগন ম্যানেজমেন্ট ইনকরপোরেশনের পরিচালক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম। ঠিকানা: হরলা, চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম।
গ্রাটানভাইল লিমিটেডের মালিক মোহাম্মদ ফয়সাল করিম খান। ঠিকানা: ৬৮, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট।
এন্ডারলাইট লিমিটেডের পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার নজরুল ইসলাম। ঠিকানা: কালিমোহর, রাজবাড়ী।
এল্ডার স্টার লিমিটেডের পরিচালক নিলুফার জাফরুল্লাহ। ঠিকানা: বাড়ি নং ৪-এ, রোড নং ৭৩, গুলশান-২
সভেরিন ক্যাপিটাল প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার সৈয়দ সিরাজুল হক। ঠিকানা: ফ্ল্যাট নং ৪, বাড়ি নং ৬, রোড নং ১২৪, গুলশান, ঢাকা- ১২১২।
হ্যান্সঅ্যাটিক লিমিটেড এবং পাথফাইন্ডার ফিন্যান্স লিমিটেডের পরিচালক জাফরুল্লাহ কাজী। ঠিকানা: বাড়ি নং ৪-এ, রোড নং ৭৩, গুলশান-২।
কম্পাস ডি বাংলা লিমিটেডের পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার জুলফিকার হায়দার। ঠিকানা: প্লট ৭৭, রোড নং ৫, ব্লক এ, সেকশন ১২, মিরপুর, ঢাকা।
‘পানামা পেপারস’ নামে ওসব নথি প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটনভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে)। ওই তালিকায় বিশ্বের বাঘা বাঘা রাষ্ট্রপ্রধানসহ শতাধিক ক্ষমতাধর ব্যক্তি ও আত্মীয়-স্বজনের কর ফাঁকি দিয়ে সম্পদের পাহাড় গড়ার প্রমাণ রয়েছে।
জার্মান দৈনিক জিটডয়েচ সাইতংয়ের অনুসন্ধানী সাংবাদিক বাস্তিয়ান ওবারমেয়ারের হাতে এসব নথি আসে। তারা এটাকে তুলে দেন আন্তর্জাতিক অনুসন্ধানী সাংবাদিক সংস্থা আইসিআইজের কাছে। পরবর্তীকালে যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান, ভারতের ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, বাংলাদেশের নিউএইজসহ ৭৮টি দেশের ১০৭টি সংবাদমাধ্যম এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করে। সোমবার ১ কোটি ১৫ লাখ নথি প্রকাশ করা হয়।
মোসাক ফনসেকার ফাঁস হওয়া নথিগুলো বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলেছে। নথিতে বিশ্বের শতাধিক ক্ষমতাধর মানুষ বা তাদের নিকটাত্মীয়দের বিদেশে টাকা পাচারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তালিকায় দেখা গেছে যে চীন, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরবের মতো ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান বা তাদের আত্মীয়, খেলোয়াড়, অভিনেতাসহ ধনী ও ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা এসব অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত।