পাকিস্তানে দুই ‘সৌর শিশু’
ওয়েভ ডেস্কঃ
দিনের বেলা কর্মঠ, উচ্ছ্বল দুই কিশোর সূর্য অস্ত গেলেই হয়ে পড়ে চলৎশক্তিহীন। এমনকি কথা বলার শক্তিটুকুও থাকে না তাদের। ‘সৌর শিশু’ বলে পরিচিতি পাওয়া ৯ ও ১৩ বছর বয়সী এই দুই ভাইয়ের বাবার অভিমত, “আমার মনে হয় আমার ছেলেরা সূর্য থেকে শক্তি পায়”। তবে এই কথাকে সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিলেও অদ্ভুত এই রোগ এখনও রহস্য দেশটির ডাক্তারদের কাছে।
পাকিস্তান ইন্সটিটিউট অব মেডিকেল সাইন্সেস’এর মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক জাভেদ আকরাম বৃহস্পতিবার মার্কিন সংবাদ সংস্থা এপি’কে বলেন, এই ধরণের লক্ষণের কারণ কি?, সে সম্পর্কে তার কোন ধারণাই নেই। হাসপাতালে শোয়েব আহমেদ (১৩) ও আব্দুল রশীদকে (৯) দেখে জাভেদ বলেন, আমরা একে একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিচ্ছি। এই শিশুরা দিনের বেলা কর্মঠ থাকলেও সূর্য অস্ত গেলেই কেনো চোখ খুলতে পারে না, কথা বলতে পারে না বা খেতে পারে না, তা নিয়ে আমাদের ডাক্তাররা মেডিকেল পরীক্ষা করছে।
দিনের বেলা অন্ধকার কক্ষ বা প্রবল ঝড়বৃষ্টির মধ্যেও এই শিশুরা স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে। তাই সূর্যালোক তাদের উপর কোন প্রভাব ফেলে এমন ধারণা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন চিকিৎসকেরা।
রাজধানী ইসলামাবাদে এ দুই ভাইয়ের ব্যাপক মেডিকেল পরীক্ষা করা হচ্ছে। তাদের রক্তের নমুনা পুনঃপরীক্ষার জন্য বিদেশী বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানো হচ্ছে বলেও জানান জাভেদ আকরাম। গবেষকরা পরিবারটির আবাস গ্রামের মাটি ও বায়ুর নমুনা সংগ্রহ করছে। সরকারের পক্ষ থেকে হতদরিদ্র পরিবার থেকে আসা এই দুই ভাইকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা দেয়া হচ্ছে বলেও জানান আকরাম।
রহস্য রোগে আক্রান্ত দুই ভাইয়ের পিতা বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কুয়েটার নিকটবর্তী একটি গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ হাশিম। হাশিমের স্ত্রী তার কাজিন। এই দম্পত্তির ছয় সন্তানের মধ্যে দুজনই খুব ছোট বয়সে মারা যায়। অপর দুই সন্তানের মধ্যে কোন অস্বাভাবিকত্ব নেই।
শুক্রবারে দিনের বেলা এই দুই ভাই যখন হাসপাতালের কাছের একটি ক্যান্টিনে চা খেতে আসেন, তখন তাদের বয়সী অন্যান্য শিশুদের মতো তাদেরও প্রফুল্ল, উদ্যমী মনে হচ্ছিলো বলে জানায় ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এনডিটিবি। বড় ভাই শোয়েব শিক্ষক হতে চাওয়ার ইচ্ছার কথা জানা এপি’কে। ছোট ভাইয়ের ইচ্ছা ইসলামিক চিন্তাবিদ হওয়ার।