শুক্রবার, ২০ মে ২০১৬
প্রথম পাতা » রাজনীতি » যখনই বিচার চূড়ান্ত পর্যায়ে, তখনই গুপ্তহত্যা: প্রধানমন্ত্রী
যখনই বিচার চূড়ান্ত পর্যায়ে, তখনই গুপ্তহত্যা: প্রধানমন্ত্রী
পক্ষকাল ডেস্কঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার ঠেকাতে ‘পরিকল্পিতভাবে’ দেশের সাম্প্রতিক গুপ্তহত্যার ঘটনাগুলো ঘটানো হয়েছে।
তবে সরকার অপরাধীদের ধরে তাদের বিচারও শুরু করেছে বলে বুলগেরিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশিদের জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বুলগেরিয়ার রাজধানী সোফিয়ার হোটেল ম্যারেনিলাতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এ কথা বলেন।
পরে তার উপ-প্রেস সচিব নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ বিষয়ে জানান।
নজরুল ইসলাম বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যখনই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চূড়ান্ত পর্যায়ে যায় তখনই একটি গোষ্ঠী এ ধরনের পরিকল্পিত বিচ্ছিন্ন হত্যাকাণ্ড ঘটায়।”
প্রবাসী বাংলাদেশিদের শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার দেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোতে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের কাজও সরকার শুরু করেছে।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ২০১৩-১৪ সালে এবং সেই নির্বাচনের বর্ষপূর্তি ঘিরে ২০১৫ সালের শুরুতে দেশজুড়ে বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধের সময় পেট্রোল বোমা ও নাশকতার ঘটনাও মনে করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।
“তিনি বলেন, তারা (বিএনপি-জামায়াত) দেশব্যাপী মানুষ পুড়িয়ে এ ধরনের নাশকতা চালিয়েছিল শুধু যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করার জন্য, পাঁচই জানুয়ারির নির্বাচন বানচাল করার জন্য,” বলেন উপ-প্রেস সচিব।
সরকার যে কঠোর হাতে সেসব নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড দমন করেছে, সে কথাও প্রবাসী বাংলাদেশিদের জানান সরকারপ্রধান।
নজরুল ইসলাম বলেন, দেশে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চালিয়ে যাওয়ায় প্রবাসীরা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
শেখ হাসিনা তাদের বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করলেও ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির জনককে হত্যার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা সেই বিচার বন্ধ করে দেয়। যুদ্ধাপরাধীদের কারগার থেকে মুক্তি দিয়ে পুর্নবাসন করে।
বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে খুনিরা পালিয়ে আছে, তাদের ধরার চেষ্টা চলছে।
পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে শাসকদলের হাত দিয়ে ইতিহাস বিকৃতির কথাও প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন বলে তার প্রেস সচিব জানান।
“প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা নতুন প্রজন্মকে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রকৃত ইতিহাস জানতে দেয়নি। নতুন প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানাতে বর্তমান সরকারের পদক্ষেপের কথাও তিনি তুলে ধরেন।”
সাক্ষাতে বুলগেরিয়ার প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বুলগেরিয়ার রাজধানীতে বাংলাদেশের কনস্যুলার সেবা চালুর কথা বলেন।
বুলগেরিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আল্লামা সিদ্দিকী এ সময় জানান, ভিসা ও অন্যান্য সমস্যার সমাধানে আগামী জুন থেকেই একটি কনস্যুলার টিম সোফিয়ায় কাজ শুরু করবে।
অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রবাসীদের সঙ্গে এই সৌজন্য সাক্ষাতের আগে প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার বিকেলে সোফিয়ায় বুলগেরিয়া হিস্ট্রি মিউজিয়াম পরিদর্শনে যান।
সফরসঙ্গীদের নিয়ে তিনি সেখানে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান জাদুঘরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক বোইদার ডিমিত্রভ।
শেখ হাসিনা ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এ জাদুঘরে সংরক্ষিত বিভিন্ন ঐতিহাসিক নিদর্শন ঘুরে ঘুরে দেখেন।
রাতে হোটেল ম্যারেনিলাতে ফিরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দেওয়া নৈশভোজে অংশ নেন তিনি।
গ্লোবাল উইমেন লিডারস ফোরামের সম্মেলনে অংশ নিতে বুধবার লন্ডন থেকে বুলগেরিয়ায় যান শেখ হাসিনা।
শুক্রবার বুলগেরিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর একান্ত ও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে এবং বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে চারটি চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে।