রমজানের আগেই বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম
ওয়েভ ডেস্ক : সরকারের ঘোষণার পর রমজান শুরু হওয়ার দুই মাস আগে থেকেই রাজধানীর বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়াতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। এরই মধ্যে চিনি থেকে শুরু করে নিত্যপণ্য বাড়তি দামে বিক্রি করছেন তারা।
ব্যবসায়ীদের দাবি, আমদানি ও যোগান কম থাকায় রাজধানীর বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। তবে পর্যাপ্ত যোগান বাড়লে দাম কিছুটা কমতে পারে।
রাজধানীর মুগদাপাড়া, রামপুরা, মালিবাগ, বসুন্ধরা, খিলগাঁওসহ বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রত্যেকদিনই রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে বিভিন্ন শাক-সবজি থেকে শুরু করে ডাল-তেল ইত্যাদি পণ্য বাড়তি দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
এরমধ্যে বৃহস্পতিবার (১৯ মে) যেসব সবজি ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে, সেগুলোই শুক্রবার বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা দরে। এছাড়া গত সপ্তাহের চেয়ে চলতি সপ্তাহে কেজিপ্রতি ৮ টাকা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে চিনি। আর দাম বেড়েছে ছোলা, মসুর ডাল ও ফার্মের মুরগির।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাঁচাবাজারে করলা, ঢেঁড়স, মুলা, ঝিঙা, জালি, বরবটি, দুনদুল, পটল, টমেটো বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৩০ টাকা দরে। যা শুক্রবার সকালে প্রতিকেজি ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
পড়ুন:‘রমজানে নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে না’
এক দিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ১০ টাকা বাড়তি কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে মুগদাপাড়া কাঁচাবাজারের বিক্রেতা আলামিন বলেন, শুক্রবার বাজারে চাহিদা বেড়ে যায়। সে অনুযায়ী যোগান পর্যাপ্ত থাকে না। এ জন্য কিছুটা বেশি দামে বিক্রি করি।
‘শুক্রবার মানেই দাম বেশি, যা সব সময় হয়ে আসছে,’ বলেন তিনি।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, বেগুন ১০ টাকা বেশি দামে ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। কচুরমুখী ৬০ টাকা, ধনেপাতা ১৬০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, শসা ৩০ টাকা, গাজর ৫০ টাকা, কাঁচাকলা ৩০ টাকা হালি, লেবু ২০ টাকা হালি, মিষ্টি কুমরা (ছোট) ৩০ টাকা করে প্রতিপিস বিক্রি হচ্ছে।
তবে অপরিবর্তিত দামে বিক্রি হচ্ছে আলু, প্রতিকেজি আলু ২০ টাকা। আর ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন (আকারভেদে) ১০০ থেকে ৯৮ টাকা, হালি ৩৪ টাকা। হাঁসের ডিমের হালি ৩৬ টাকা, দেশি মুরগির ডিম হালি ৪৮ টাকা।
এদিকে শবে-বরাতকে সামনে রেখে হঠাৎ ফার্মের মুরগির দাম বাড়িয়ে দেওয়ার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন খুচরা বিক্রেতারা।
তারা বলেন, ১০ ভ্যান মুরগি প্রয়োজন শুক্রবারের বাজারে। কিন্তু মুরগি পেয়েছি মাত্র ছয় ভ্যান। শবে-বরাতে পাইকারি দাম বাড়ানোর জন্য এই পদ্ধতি নিয়েছে ফার্ম মালিকরা।
এ সপ্তাহে রাজধানীর বাজারে ব্রয়লার প্রতিকেজি ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। লেয়ার ২০০ টাকা প্রতিকেজি, আকারভেদে দেশি মুরগি কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা। পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ২৫০ টাকা থেকে ২৬০ টাকা।
শবে-বরাতকে কেন্দ্র করে এ সপ্তাহে পেঁয়াজ, রসুন, চিনি ও ডালের চাহিদা বেড়েছে। পাশাপশি দামও বেড়েছে একধাপ।
এ সপ্তাহে প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, যা গত তিন দিন আগেও ৫২ টাকায় বিক্রি হয়। ছোলা ৮৫ থেকে ৯৫ টাকা। মসুর ডাল (দেশি) মানভেদে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, (আমদানি) মানভেদে ১০০ থেকে ১৩০ টাকা। মুগ ডাল (মানভেদে) ১০০ থেকে ১২০ টাকা।
আর পেঁয়াজ (দেশি) মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৫ টাকা কেজিতে। আর আমদানি করা পেঁয়াজ মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। দেশীয় রসুন মানভেদে ১১০ থেকে ১৩০ টাকা এবং বিদেশিগুলো ২১০ থেকে ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ সপ্তাহে বাজারভেদে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪২০ টাকায়। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা।
তবে গত সপ্তাহের থেকে কিছুটা কম দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ। এ সপ্তাহে রুই মাছ (ছোট) ২০০ টাকা, রুই (বড়) ২৮০ টাকা কেজি। ছোট কাতলা ২২০ টাকা ও বড় ২৮০ টাকা কেজি।
চিংড়ি (ছোট) ৪৫০ টাকা কেজি। তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা