বুধবার, ২৫ মে ২০১৬
প্রথম পাতা » বিশ্ব সংবাদ » বিশ্ব তথ্য, যোগাযোগ এবং সম্প্রচার শীর্ষ সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী
বিশ্ব তথ্য, যোগাযোগ এবং সম্প্রচার শীর্ষ সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী
পক্ষকালডেস্কঃ
মানুষকে শান্তি, টেকসই উন্নয়ন ও সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি দেবে সম্প্রচারমাধ্যম বিশ্ব তথ্য, যোগাযোগ ও সম্প্রচার শীর্ষ সম্মেলনে (World Information, Communication and Broadcasting Summit 2016, Incheon, Korea) সম্প্রচারমাধ্যম আগামী দিনগুলোতে মানুষকে শান্তি, টেকসই উন্নয়ন ও সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি দেবার লক্ষ্যে কাজ করবে বলে উল্লেখ করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ার ইঞ্চন শহরে ওকউড প্রিমিয়ার হোটেলে সেদেশের বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা (Ministry of Science, ICT and Future Planning) মন্ত্রী চি ইয়ানগী (Choi Yanghee) এর সভাপতিত্বে ও এশিয়ান ইনস্টিটিউট অভ্ ব্রডকাস্ট ডিভালপমেন্ট (এআইবিডি)’র উদ্যোগে আয়োজিত এশীর্ষ সম্মেলনে প্লেনারি সভায় বক্তৃতা করছিলেন মন্ত্রী।
‘ভবিষ্যৎ উন্নয়নে সম্প্রচারমাধ্যমের ভূমিকা ও অবদান’ শীর্ষক মূল প্রতিপাদ্যকে ভিত্তি করে সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন কম্বোডিয়া, লাও, সামোয়া, শ্রীলংকা, ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশের সংশ্লিট মন্ত্রীবর্গ ও নেপালের তথ্য সচিব।
বাংলাদেশের নীতি তুলে ধরার ক্ষেত্রে মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, অতীতের স্বৈরশাসনের জঞ্জালমুক্ত হয়ে গণতন্ত্রের পথে যাত্রায় শেখ হাসিনার সরকার বেসরকারি টিভি, এফএম ও কমিউনিটি বেতার চালু করে সম্প্রচার মাধ্যমের এক অভূতপূর্ব বিকাশ ঘটিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং গণমাধ্যম ক্রমশই আমাদের সকলকে একটি কাঁচের ঘরের ভেতরে নিয়ে আসছে। এ ঘরে থাকা শিশু-নারী-বৃদ্ধ, রাষ্ট্র ও প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অগ্রহণযোগ্য উপাদান, সাইবার অপরাধ ও জঙ্গিবাদ। এর প্রতিকারে আইনগত ও কারিগরী উভয়বিধ ব্যবস্থা নিতে হবে।’
বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী সম্মেলনে সাড়া জাগানো তার ১১ মিনিটের বক্তৃতায় আরো বলেন, ‘সম্প্রচারমাধ্যমের কাজ হলো তথ্য, বিনোদন ও শিক্ষার মাধ্যমে মানুষকে সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ করে তোলা। আত্মিক ও নান্দনিক সমৃদ্ধি না ঘটলে শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়ন কখনো টেকসই হতে পারেনা। আর তাই ২০১৫ পরবর্তী জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের মধ্যে ১৬ নম্বরে গণমাধ্যমের প্রয়োজনীয় ভূমিকা তুলে ধরা হয়েছে।’
এ সম্মেলন ও ২৪ থেকে ২৬ মে এশিয়া মিডিয়া সামিটের ১৩তম আসরে তথ্যমন্ত্রীর সাথে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারের মহাপরিচালকদ্বয়, মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা যোগ দিচ্ছেন। সম্মেলনের আগের দিন বিকেলে তথ্যমন্ত্রী কোরিয়ার ইঞ্চনে পৌঁছান ও ২৬ মে আবার ঢাকার উদ্দেশে কোরিয়া ত্যাগ করবেন।
কোরীয় মন্ত্রীর সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক
বিশ্ব তথ্য, যোগাযোগ ও সম্প্রচার শীর্ষ সম্মেলনের পাশাপাশি ওকউড প্রিমিয়ার হোটেলেই মঙ্গলবার সকাল সাড়ে এগারোটায় কোরিয়া রিপাবলিকের বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা মন্ত্রী চি ইয়ানগী এর সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
বিশ মিনিট স্থায়ী বৈঠকে দু’মন্ত্রী দু’দেশের মধ্যে তথ্য, সংবাদ ও অনুষ্ঠান আদান প্রদানে দু’দেশের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম ও সংবাদ পরিবেশকদের মধ্যে একটি বহুমুখী চুক্তির খসড়া প্রণয়নে একমত হন।
চলচ্চিত্র নির্মাণ ও বাংলাদেশ থেকে আমদানী বৃদ্ধির জন্য কোরিয়ার সহযোগিতাবৃদ্ধির আহ্বান জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি এসময় কৃষি ও তথ্যপ্রযুক্তিখাতে কোরীয় উন্নয়ন সংস্থা কোইকার প্রশিক্ষণ ও তাদের সহায়তায় নির্মাণাধীন নার্সিং একাডেমির জন্য কোরীয় মন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে এসময় কোরীয় রিপাবলিকের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান মন্ত্রী ও মুক্তিযোদ্ধা ইনু।
কোরিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জুলফিকুর রহমান, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক এসএম হারুন-অর-রশীদ, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক একেএম নেছারউদ্দিন ভূঞা ও সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মীর আকরাম উদ্দীন আহম্মদ এসময় মন্ত্রীর সাথে যোগ দেন।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল ন’টায় দক্ষিণ কোরিয়ার ইঞ্চন শহরে একই ওকউড প্রিমিয়ার হোটেলে এশিয়া মিডিয়া সামিটের ১৩তম আসরে অতিথিবক্তা হিসেবে গণমাধ্যমের উপাদান ও সমসাময়িক বিশ্বে মানবিক উন্নয়নে সম্প্রচার মাধ্যমের ভূমিকা চিহ্নিত করে বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।