শেখ হাসিনার আকাঙ্ক্ষা পূরণে পাশে থাকব: আবে
ডেস্কঃ
বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে
নাগোয়ায় শনিবার সকালে জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে বৈঠকে এমন আশ্বাস মিলেছে।
শিনজো আবে বলেছেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে শেখ হাসিনার আকাঙ্ক্ষা পূরণে জাপান পাশে থাকবে।
দ্বিপক্ষীয় ওই বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলে ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
নাগোয়ায় সকালে ওই বৈঠক হলেও সেখান থেকে টোকিও পৌঁছে সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
তারা জানান, বৈঠকে বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরলে তাৎক্ষণিকভাবে শিনজো আবে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে তার দেশের সাহায্য সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বলেন, “এটা ছিল পুরোপুরি দ্বিপক্ষীয় আনুষ্ঠানিক বৈঠক। আলোচনা অত্যন্ত সফল হয়েছে; বিশেষ আন্তরিক পরিবেশে হয়েছে এবং আমাদের প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবের খুব স্বতঃস্ফূর্ত সাপোর্ট এসেছে।”
বাংলাদেশ ও জাপানের সম্পর্ক সুদূরপ্রসারী সম্পর্ক হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে বলে বৈঠকে দুই নেতা একমত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
শহীদুল হক বলেন, “জাপানের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করার শেখ হাসিনার আকাঙ্ক্ষা পূরণে জাপানের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।”
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন বৈঠক প্রসঙ্গে বলেন, “জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকটি ফলপ্রসু হয়েছে।”
আলোচনায় ২০১৪ সালে শেখ হাসিনার জাপান সফরের পর দুই দেশের অংশীদারিত্ব আরও শক্তিশালী হয়েছে বলে স্বীকার করেন শিনজো আবে।
দুই দেশের ব্যবসা ও বিনিয়োগ আরও দৃঢ় করার বিষয়েও জাপান আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানান মেজবাহউদ্দিন।
তিনি বলেন, জাপানের ছয় বিলিয়নের মধ্যে চলতি বছর ১ দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি ‘সফট লোন’ আসবে।
তাছাড়া জাপান ‘গুণগত’ অবকাঠামোর উপর গুরুত্বারোপ করেছে।
মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র, ঢাকায় এমআরটি, বঙ্গবন্ধুর সেতুর পাশে পৃথক রেল লাইন স্থাপন এই ‘গুণগত’ অবকাঠামো উন্নয়নের আওতায় বাস্তবায়ন করা হবে।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানান অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব।
মেজবাহউদ্দিন বলেন, বৈঠকে ২০১৯ সালের মধ্যে এই টার্মিনাল আংশিকভাবে চালু করতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
“শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল করার বিষয়ে জাইকা একটা কার্যক্রম চালাচ্ছে। সেখানে জাইকা নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে ২০১৯ এর মধ্যে আংশিকভাবে চালু করতে। ২০২০ সালে পুরোপুরি চালু করার বিষয়েও তারা দ্রুততার সঙ্গে পদক্ষেপ নেবেন।”
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিষয়েও জাপানারে সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, “শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নতুন বিমানবন্দরের জন্য যা করণীয় তা করার ব্যাপারে তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বলেন, “ট্রেড ক্রিয়েশন ইনভেস্টমেন্ট উইথ বাই ব্যাক অ্যাগ্রিমেন্ট জাতীয় উদ্যোগে জাপান বাংলাদেশকে সহায়তা করার বিষয়টি বিবেচনায় জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। জবাবে বিষয়টি বিবেচনা করতে জাইকাকে নির্দেশ দেন শিনজো আবে।”
এছাড়া ‘এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোনে’ জাপানের বিনিয়োগ নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
শহীদুল হক জানান, অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে ক্ষুদ্র মাঝারি ঋণ, জ্বালানি দক্ষতা, ন্যানো টেকনোলজি এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রধানমন্ত্রী সহায়তাও চেয়েছেন; প্রতিটি বিষয় বিবেচনার আশ্বাস মিলেছে জাপানের পক্ষ থেকে।