বুধবার, ১ জুন ২০১৬
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » বাঁশখালীতে ভোট স্থগিত, এমপির বিরুদ্ধে মামলা হবে
বাঁশখালীতে ভোট স্থগিত, এমপির বিরুদ্ধে মামলা হবে
পক্ষকাল ডেস্কঃ এপ্রিলে বাঁশখালীর গণ্ডামারায় বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনার পর আলোচনায় আসেন সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান।
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এক নির্বাচন কর্মকর্তা ‘স্থানীয় সাংসদের হাতে মারধরের শিকার’ হওয়ার পর উপজেলার সব ইউনিয়ন পরিষদের ভোট স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন।
Related Stories
সেই সঙ্গে উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদ হোসেনকে মারধরের অভিযোগে বাঁশখালীর সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন।
বুধবার বিকালে তিনি বলেন, “নির্বাচন কর্মকর্তাকে মারধরের কারণে বাঁশখালী উপজেলার সব নির্বাচন বন্ধ করা হয়েছে। স্থানীয় সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলা করা সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এই মামলা করবেন।”
উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদের অভিযোগ, আগামী ৪ জুন অনুষ্ঠেয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জন্য ‘ফর্দ অনুযায়ী’ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ‘নিয়োগ না দেওয়ায়’ দুপুরে সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান ও আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা তাকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে মারধর করেন।
অবশ্য আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন; গত এপ্রিলে বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনার পর যিনি আলোচনায় এসেছিলেন।
ষষ্ঠ ও শেষ ধাপে ৪ জুন সারা দেশে সাত শতাধিক ইউপির মধ্যে বাঁশখালী উপজেলায় ১৪টি ইউপিতে ভোট হওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে তিনটি ইউপির ভোট ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর কারণে স্থগিত করেছিল ইসি। এবার বাকি ১১ ইউপির ভোটও স্থগিত হয়ে গেল।
জাহিদ হোসেন বলছেন, ৪ নম্বর বাহারছড়া ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যানপ্রার্থী তাজুল ইসলাম ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা (প্রিজাইডিং অফিসার) নিয়োগের জন্য তাকে ‘একটি তালিকা’ দিয়েছিলেন।
“আমি ওই তালিকা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারিনি। সকালে এমপি আমাকে ইউএনও কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে তালিকা অনুযায়ী নিয়োগ না দেওয়ার কারণ জানতে চান। এক পর্যায়ে কিল-ঘুষি মারতে শুরু করেন।”
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বলছেন, সাংসদের সঙ্গে থাকা আরও কয়েকজন তখন তাকে মারধর করেন।তাদের মধ্যে ওলামা লীগ নেতা মাওলানা আক্তারকে তিনি ‘চিনতে পেরেছেন’।
মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সেখানে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। যা বলা হচ্ছে ওসব মিথ্যা কথা।”
ওই ঘটনার সময় ইউএনও তার কার্যালয়ে ছিলেন না। তবে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তাজুল ইসলাম সেখানে ছিলেন বলে জানান জাহিদ।
তাজুলকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা চেনেন সাংসদ মোস্তাফিজের এপিএস (রাজনৈতিক) হিসেবে। বাহারছড়া ইউনিয়নে তাজুল ছাড়াও বিএনপি মনোনীত একজন এবং আওয়ামী লীগের দুইজন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন।
সাংসদের মতো তাজুলও দাবি করেন, মারধরের কোনো ঘটনা ‘ঘটেনি’; নামের তালিকা দেওয়ার বিষয়টিরও ‘সত্যতা নেই’।
নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাটি বাঁশখালী থানার ওসি আলমগীর হোসেন ও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল বাতেনকে জানান।
এরপর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ পাঠালে ভোট স্থগিতের সিদ্ধান্ত আসে।
বাতেন বলেন, “উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে মারধরসহ ভোটে অযাচিত হস্তক্ষেপ করেছেন স্থানীয় সাংসদ। উনার পছন্দসই ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য জোর খাটানো হয়েছে বলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আমাকে জানিয়েছেন। সেখানে ভোটের উপযুক্ত পরিবেশ এখন নেই।”