শনিবার, ৪ জুন ২০১৬
প্রথম পাতা » » প্রধানমন্ত্রীর ওমরাহ পালন
প্রধানমন্ত্রীর ওমরাহ পালন
ডেস্কঃ বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের আমন্ত্রণে সৌদি আরবে পৌঁছে প্রথমেই ওমরাহ পালন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার দিবাগত রাত পৌন ১টায় প্রধানমন্ত্রী তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে জেদ্দা থেকে মক্কায় পৌঁছান। হারাম শরীফ সংলগ্ন মক্কা গেস্ট প্যালেসে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর প্রধানমন্ত্রী তাওয়াফ শুরু করেন।
ওমরাহ শেষে প্রধানমন্ত্রী দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করেন এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় মোনাজাতে অংশ নেন।
মক্কায় প্রধানমন্ত্রী ফজরের নামাজ আদায় করেন। বিকালে তার জেদ্দায় ফেরার কথা রয়েছে।
ওমরাহ পালনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা ও কয়েকজন আত্মীয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ওআইসিতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি গোলাম মসীহ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, বিশেষ সহকারী আবদুস সোবহান গোলাপ, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
এছাড়াও বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদসহ প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরাও ওমরাহ পালনে অংশ নেন।
সৌদি বাদশাহ সালমানের আমন্ত্রণে পাঁচ দিনের সফরে শুক্রবার বিকালে সৌদি আরবের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
সৌদি আরবের স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী জেদ্দার কিং আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে দেশটির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফ বিন আবদুল আজিজ তাকে অভ্যর্থনা জানান।
এরপর সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অফ অনার দেয়। এ সময় তাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
পরে ক্রাউন প্রিন্স নায়েফ প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দর থেকে কিং ফয়সাল প্যালেসে নৈশভোজে নিয়ে যান।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব সাংবাদিকদের বলেন, নৈশভোজে শেখ রেহানা ও মাহমুদ আলীসহ সৌদি আরবের হজ- ওমরাহমন্ত্রী মোহাম্মদ সালেহ বিন তাহের বেনতেন, ওআইসির মহাসচিব ইয়াদ বিন আমিন মাদানি, আইডিবির প্রেসিডেন্ট আহমেদ মোহাম্মদ আলি আল মাদানিও অংশ নেন।
নৈশভোজ শেষে জেদ্দা কনফারেন্স প্যালেসে আসেন শেখ হাসিনা। জেদ্দায় সেখানেই অবস্থান করবেন তিনি।
সৌদি বাদশাহ সালমান দায়িত্ব নেওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যের এই তেলসমৃদ্ধ দেশে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এটাই প্রথম সফর। সর্বশেষ ২০১৩ সালের নভেম্বরে ওমরাহ করতে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।
ওমরাহ শেষে শনিবারই মক্কা থেকে জেদ্দা ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী। বিকালে জেদ্দা থেকেই তিনি রিয়াদে বাংলাদেশের চ্যান্সেরি কমপ্লেক্স এবং বাংলাদেশ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
রোববার জেদ্দার আল আন্দালুসে আল সালাম প্রাসাদে সৌদি বাদশাহর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে।
সেখানে দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনা হবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী ইতোমধ্যে জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, শ্রম বাজার সম্প্রসারণ, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পে সৌদি সহায়তা, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে সহযোগিতা এবং হজ ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে দুই শীর্ষ নেতা মত বিনিময় করবেন। এসব আলোচনা দুই দেশের সম্পর্ককে আরও বেগবান করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সরকারি হিসাবে বর্তমানে ১২ লাখ ৮০ হাজার বাংলাদেশি সৌদি আরবে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত। এই হিসাবে সৌদি আরবই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার।
সৌদি আরবের ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স, উপ-প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, শ্রমমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন বলেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী সোমবার সকালে মদিনার উদ্দেশে জেদ্দা ত্যাগ করবেন এবং মদিনায় পৌঁছে হিলটন হোটেলে অবস্থান করবেন।
সেখানে মসজিদে নববীতে আছর এবং মাগরিবের নামাজ আদায় করে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর রওজা জিয়ারত করবেন শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার সকালে মদিনার প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন আব্দুল আজিজ বিমানবন্দর থেকে রওনা হয়ে সন্ধ্যায় ঢাকা পৌঁছনোর কথা রয়েছে তার।