রবিবার, ৫ জুন ২০১৬
প্রথম পাতা » » নারাইন, পোলার্ডের নৈপুণ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়
নারাইন, পোলার্ডের নৈপুণ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়
মন্থর উইকেটে ব্যাটসম্যানদের খাবি খাওয়ালেন সুনিল নারাইন। দুরূহ উইকেটেও সহজাত ব্যাটিংয়ে নিজের জাত চেনালেন কাইরন পোলার্ড। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজে শুভসূচনা করল স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে শুক্রবার গায়ানায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। গত নভেম্বরের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে প্রথম খেলতে নেমেই নায়ক নারাইন ও পোলার্ড।
২৭ রানে ৬ উইকেট নিয়ে প্রোটিয়াদের ১৮৮ রানেই বেধে ফেলেন নারাইন। ওয়ানডেতে এই প্রথম ৬ উইকেট পেলেন কোনো ক্যারিবিয়ান স্পিনার। আগের সেরা বোলিংও ছিল নারাইনেরই, নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ২৭ রানে ৫ উইকেট!
রান তাড়ায় ধুঁকছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজও। তবে আধ ডজন ছক্কায় অপরাজিত ৬৭ রানে দলকে জিতিয়ে ফিরেছেন বিতর্কিতভাবে এত দিন দলের বাইরে থাকা পোলার্ড।
প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা প্রোটিয়াদের শুরুটা ছিল ভালো। একসঙ্গে পঞ্চাশতম ইনিংসে ওপেন করতে নেমে হাশিম আমলা ও কুইন্টন ডি ককদলকে এনে দেন পঞ্চাশ ছাড়ানো উদ্বোধনী জুটি।
কার্লোস ব্র্যাথওয়েটের লেংথ বল পুল করতে গিয়ে কক (৩০) বোল্ড হলে ভাঙে ৫২ রানের উদ্বোধনী জুটি। খানিকপরই দুর্দান্ত এক ‘নাকল’ ডেলিভারিতে আমলাকে (২০) বিভ্রান্ত করেন নারাইন।
তৃতীয় উইকেটে রাইলি রুশো ও এবি ডি ভিলিয়ার্স জুটিতে ধাক্কা সামাল দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। উইকেটের চরিত্র বুঝে ধীরে সুস্থে ব্যাট করেছেন দুজনই। ৭৮ রানের এই জুটি ভাঙে ডি ভিলিয়ার্সের (৩১) আউটে। দারুণ এক ফিরতি ক্যাচ নেন জেরোম টেইলর।
এরপর জেপি দুমিনি খানিকক্ষণ সঙ্গ দিয়েছেন রুশোকে। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে এই জুটি ভাঙার পাশাপাশি প্রোটিয়া ব্যাটিংই ধসিয়ে দেন নারাইন। ৬১ করে রুশো ক্যাচ দেন স্লিপে। এক বল পরই এলবিডব্লিউ ফারহান বেহারডিন।
২৮ রানে দক্ষিণ আফ্রিকা হারায় শেষ ৭ উইকেট, এর ৫টিই নেন নারাইন!
৩ উইকেটে ১৬০ থেকে ১৮৮ রানেই অল আউট দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই ১৯৯২ সালের এপ্রিলের পর এই প্রথম ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এত কম রাতে গুটিয়ে গেল প্রোটিয়ারা।
ব্যাটিংয়ের জন্য কঠিন উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শুরুও ছিল বেশ সতর্ক। ইমরান তাহির ও অ্যারন ফাঙ্গিসোর স্পিনে তবু আশা দেখছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২৬তম ওভারে ৭৬ রানে হারায় তারা ৪ উইকেট। সেখান থেকেই দলকে টেনে নেন পোলার্ড।
উইকেটে গিয়ে দ্বিতীয় বলেই ছক্কা মারেন পোলার্ড। পরের ওভারে মারেন আরও দুটি। খানিক পর আরেকটি। তাতে চাপ হালকা হয়ে যায় অনেকটাই। আরেক পাশে উইকেট পড়েছে। কিন্তু পোলার্ড ফিরেছেন দলকে জিতিয়েই। ২টি চার ও ৬ ছক্কায় ৬৭ বলে অপরাজিত ৬৭। ১১ বল বাকি থাকতে জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৪৬.৫ ওভারে ১৮৮ (ডি কক ৩০, আমলা ২০, রুশো ৬১, ডি ভিলিয়ার্স ৩১, দুমিনি ২৩, বেহারডিন ০, মরিস ৯, অ্যাবট ৫, ফাঙ্গিসো ৩, রাবাদা ১*, তাহির ০; নারাইন ৬/২৭, ব্রেথওয়েইট ২/৩৫, টেইলর ১/৩৬, হোল্ডার ১/৩৭)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৪৮.১ ওভারে ১৯১/৬ (চার্লস ৩১, ফ্লেচার ১১, ব্রাভো ৩০, স্যামুয়েলস ১, রামদিন ১০, পোলার্ড ৬৭*, ব্রেথওয়েইট ৮, হোল্ডার ১০*; ফাঙ্গিসো ৩/৪০, তাহির ২/৪১, দুমিনি ১/১২)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সুনিল নারাইন।