টার্গেট কিলিংয়ের প্রতিবাদে সমাবেশের ডাক সিপিবি-বাসদের
পক্ষকাল ডেস্কঃ সারা দেশে উগ্রপন্থিদের হামলায় একের পর এক হত্যাকাণ্ডে দোষীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে সিপিবি-বাসদ জোট।আগামী শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ করা হবে বলে বৃহস্পতিবার জোটের এক বিবৃতিতে জানানো হয়।
উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, “দেশে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটেই চলেছে। পুরোহিত, ক্ষুদে ব্যবসায়ী, পুলিশ অফিসারের স্ত্রী- কেউ ই রেহাই পাচ্ছেন না।”
জনগণের জানমালের নিরাপত্তা এবং দোষীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ডাক দেওয়া এই সমাবেশে সবাইকে যোগ দিয়ে তা সফল করার আহ্বান জানান জোট নেতা সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান।
গত দুই বছরে সারা দেশে ব্লগার, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, মুক্তমনা লেখক, বিদেশি ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষরা একের পর এক ‘টার্গেট কিলিংয়ের’ শিকার হচ্ছেন। ২০১৩ সালে ব্লগার রাজিব হায়দারকে হত্যার মধ্য দিয়ে কুপিয়ে হত্যাকাণ্ডের এসব ঘটনা শুরু হয়।
সর্বশেষ গত মঙ্গলবার হামলাকারীদের চাপাতির কোপে প্রাণ হারান ঝিনাইদহের নলডাঙ্গা দুর্গা মন্দিরের পুরোহিত আনন্দ গোপাল গাঙ্গুলি।
চলতি বছরে টাঙ্গাইলের গোপালপুরে দর্জি নিখিল চন্দ্র জোয়ার্দার, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির বৌদ্ধ ভিক্ষু মং শৈ উ, পঞ্চগড়ের সন্ত গৌরীয় মঠের অধ্যক্ষ্য যজ্ঞেশ্বর রায়, নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার মুদি দোকানি সুনীল দানিয়েল গোমেজসহ আরও অনেককে একই কায়দায় হত্যা করা হয়।
সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডগুলোর ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএস ও আল কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখা (একিআইএস) এর নামে দায় স্বীকারের খবর এলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ একাধিকবার দাবি করেছে, বাংলাদেশে আইএস নেই।
এই ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ডের জন্য জেএমবিসহ কয়েকটি ‘হোম গ্রোন’ জঙ্গি সংগঠনকে দায়ী করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
যারা ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটাচ্ছে তাদের বেশিরভাগ সাবেক শিবিরকর্মী বলেও সম্প্রতি নিজেদের অনুসন্ধানের বরাতে জানিয়েছেন ডিএমপি অতিরিক্ত কমিশনার ও পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ও ট্রান্স ন্যাশনার ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।
এদিকে ৫ জুন চট্টগ্রামে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিয়ে বাসায় ফেরার সময় জিইসি মোড়ের কাছে ছুরিকাঘাত ও গুলিতে নিহত হন পুলিশের এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু।
বাবুল আক্তার বিভিন্ন জঙ্গি দমন অভিযানে বিশেষ সাহসিকতার পরিচয় দেওয়ার কারণেই তার স্ত্রী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বলে পুলিশের ভাষ্য।
এ অবস্থায় দেশ ক্রমশ উগ্র সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অভয়ারণ্য হওয়ার দিকে এগিয়ে চলছে মন্তব্য করে সিপিবি-বাসদের দুই নেতা বিবৃতিতে বলেন, “এমন অস্বাভাবিক অবস্থায় দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্রও বেড়ে গিয়েছে।
“প্রকৃতপক্ষে সারা দেশই আজ হুমকির মুখে। এ অবস্থা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”