বছরের শেষ কার্যদিবসে সূচক ও লেনদেন বেড়েছে
পক্ষকাল প্রতিবেদক :
দেশের উভয় পুঁজিবাজারে বছরের শেষদিন মঙ্গলবার মূল্যসূচক ও টাকার অংকে লেনদেন বেড়েছে। দিনভর ঊর্ধ্বমুখী সূচকে লেনদেন হয়েছে। লোকসান কমিয়ে আনতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কৌশলে বিনিয়োগ করেছেন। এ কারণে অধিকাংশ শেয়ারের দর বেড়েছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
মঙ্গলবার ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স আগের কার্যদিবসের চেয়ে ৫০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪৮৬৪ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩০৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২২৮টির, কমেছে ৫২টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টি কোম্পানির শেয়ার দর। লেনদেন হয়েছে ২৬৫ কোটি ৪০ লাখ ৯৫ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বছরের শেষদিনে পুনর্মূল্যায়নজনিত অনাদায়কৃত ক্ষতি (আনরিয়েলাইজড লস) কমিয়ে আনতে নতুন করে শেয়ার কিনেছেন। পূর্বে বেশী দরে কেনা শেয়ারের দর সমন্বয় করতে এদিন তারা কম দরে শেয়ার কিনে কস্ট প্রাইস বা ক্রয়মূল্য কিছুটা কমিয়ে এনেছেন। এর ফলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা এক্সপোজার টু ক্যাপিটাল মার্কেট (শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের অবস্থান) কিছুটা ইতিবাচক অবস্থানে নিতে পেরেছেন। এ কারণে এদিন অধিকাংশ শেয়ারের দর বেড়েছে।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাষ্ট্রায়ত্ত মার্চেন্ট ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংক, বীমা, মিউচুয়াল ফান্ড- এসব প্রতিষ্ঠান বছরের শেষ হিসাব কষতে বিনিয়োগ সমন্বয় করেছে। অনেকে নতুন করে শেয়ার কিনে আগের বেশী দরে কেনা শেয়ারের দর সমন্বয় করেছে। ফলে এদিন বাজার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।
এর আগে সোমবার ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স অবস্থান করে ৪৮১৪ পয়েন্টে। ওই দিন লেনদেন হয় ১৮৯ কোটি ৫৮ লাখ ৩৩ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। সে হিসাবে মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ৭৫ কোটি ৮২ লাখ ৬২ হাজার টাকা বা ৩৯.৯৯ শতাংশ।
মঙ্গলবার ডিএসইর টপ-২০ তালিকায় থাকা কোম্পানিগুলোর মোট ৯৮ কোটি ৮৪ লাখ ৭৮ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ৩৭.২৪ শতাংশ।
এদিন ডিএসইতে সবচেয়ে বেশী শেয়ার লেনদেন হয়েছে এমজেএল বিডির। দিনভর এ কোম্পানির ৮ লাখ ৫৮ হাজার ১৭৯টি শেয়ার ১০ কোটি ৭৬ লাখ ৪৬ হাজার টাকায় লেনদেন হয়েছে, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪.০৫ শতাংশ।
এ ছাড়া বেক্সিমকো ফার্মার ১০ কোটি ৬৫ লাখ, গ্রামীণফোনের ৯ কোটি ১৬ লাখ, লাফার্জ সুরমা সিমেন্টের ৮ কোটি ১১ লাখ, আইডিএলসির ৫ কোটি ১৪ লাখ, ডেসকোর ৪ কোটি ৯৬ লাখ, স্কয়ার ফার্মার ৪ কোটি ৮৭ লাখ, সামিট এ্যালায়েন্স পোর্টের ৪ কোটি ৩৮ লাখ, এসিআই লিমিটেডের ৪ কোটি ৩২ লাখ এবং এ্যাকটিভ ফাইনের ৪ কোটি ১৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
দিনশেষে অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সাধারণ মূল্যসূচক ৮৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৯০৬৭ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২৩৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৫৯টির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২২টি কোম্পানির শেয়ার দর। লেনদেন হয়েছে ৬২ কোটি ১৬ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের দিন সিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ১৫ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। সে হিসাবে মঙ্গলবার সিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ৪৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা বা ৩০৮ শতাংশ।