এনবিআরের বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ এফবিসিসিআইয়ের
পক্ষকাল ডেস্কঃ বাজেটের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই।
এনবিআরের কর্মকর্তারা ঘুষ চান ইঙ্গিত করে সংগঠনের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলছেন, “দেশের রাজস্ব বাড়ানোর ক্ষেত্রে এনবিআরের কর্মকর্তাদেরই আগ্রহ নেই। তাদের মধ্যে অনেকেই বলেন, সরকারকে কেন দেবেন? আমাদের দিন।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এনবিআর এখন অত্যন্ত সুশাসন ও উন্নত ব্যবস্থাপনায় কাজ করছে।
“আমরা ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা চাই। কোথাও কোনো অভিযোগ থাকলে তারা যেন সরাসরি আমাদের জানায়।’
প্রস্তাবিত বাজেটে নেট না বাড়িয়ে যারা ভ্যাট দিচ্ছেন তাদেরই পেটে ‘ছুরি চালানো হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে ফেডারেশন ভবনে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “যারা ভ্যাট দিচ্ছে, তাদের কাছ থেকে আরও বেশি ভ্যাট আদায়ের পরিকল্পনা হয়েছে। ভ্যাটের নেট বাড়েনি। বার বার মিটিংয়ের মাধ্যমে আমাদের কথা জানার পর আমাদের পেটেই ছুরি চালানো হয়েছে।”
এবারের বাজেট সামনে রেখে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে ৪৪৭টি প্রস্তাব দেওয়া হলেও সেগুলোর মধ্যে মাত্র ৫৩টি রাখা হয়েছে বলে দাবি করেন মাতলুব।
“আমরা চার মাস ধরে খেটেখুটে এসব বাজেট প্রস্তাব তৈরি করেছি। সেগুলো ছাপিয়ে বই আকারে এনবিআরের কাছে অনুষ্ঠান করে জমা দিয়েছি। আমাদের এ কষ্ট বৃথা গেল। তাদের সঙ্গে আমরা আলোচনা না করলেও এর চেয়ে বেশি প্রস্তাব গ্রহণ করা হতো বলে মনে হয়।”
ভ্যাট আইন নিয়ে এনবিআরের সঙ্গে আলোচনায় যৌথভাবে সাতটি প্রস্তাব গৃহীত হলেও সেগুলোর কোনোটি বাজেটে আসেনি বলে দাবি করেন মাতলুব।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “আশা করি, ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের আগেই বিষয়টির সুরাহা হবে।”
বাজেট নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এনবিআরের কয়েক দফা আলোচনাকে ‘প্রহসনের ডায়ালগ’ বলেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
তিনি বলেন, “চার মাস ধরে দফায় দফায় যে আলোচনা করেছি- তা বৃথা গেছে। একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছে এনবিআর। তাহলে এই প্রহসনের ডায়ালগ কেন? আগামী বছর থেকে বাজেট আলোচনায় যাওয়া যাবে কি না- তা নিয়ে চিন্তায় আছি!”
গত চার বছরে এনবিআর একটা পদ্ধতিও ‘ডেভেলপ’ করতে পারেনি বলে অভিযোগ করেন মাতলুব আহমাদ।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, তারা মূসক নিয়ে ৮৪টি, আমদানি শুল্ক নিয়ে ২৩৯টি ও আয়কর নিয়ে ১১৮টিসহ মোট ৪৪৭টি প্রস্তাব দেন। সেগুলোর মধ্যে ৯০ শতাংশই রাখা হয়নি।
“এজন্য আমার লজ্জাবোধ হচ্ছে।”
এফবিসিসিআই জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, ব্যবসায়ীদের কাজ রাস্তায় নেমে আন্দোলন করা নয়। রাস্তা আটকানোর সময়ও তাদের নেই।
“আমাদের কাজ উৎপাদন করা, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করা। আমরা চাই, সরকার আমাদের এসব কাজে সহযোগিতা করুক। এটাই আমাদের মূল দাবি।”
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট প্রস্তাব করেন। দুদিন পর এক সংবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআই প্রধান বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটের খুটিনাটি বিশ্লেষণ করে এক সপ্তাহ পর আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবেন তারা।