সোমবার, ১৩ জুন ২০১৬
প্রথম পাতা » রাজনীতি » ইনুর কারণে আওয়ামী লীগকে আজীবন প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করতে হবে:আশরাফ
ইনুর কারণে আওয়ামী লীগকে আজীবন প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করতে হবে:আশরাফ
ডেস্ক পক্ষকালঃবাংলাদেশের রাজনীতিতে জাসদ বিতর্ক নতুন নয়। দলটির গঠন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড এবং পরবর্তীতে নানা কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) এক রহস্যের আবর্তে ঘূর্ণিয়মান। জাসদ রহস্যের ঘোরে এখনো আটকা জাতীয় রাজনীতি।
জাসদ আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট বেঁধেছে প্রায় এক দশক। এক সময়ের কট্টর আওয়ামী বিরোধী জাসদ হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বে মহাজোটে যোগ দিয়ে ক্ষমতার রসদ নিচ্ছে প্রায় সাড়ে সাত বছর ধরে।
এই সময়ে ভুল শোধরানোর বাণী শুনিয়ে ইনু ও অন্য জাসদ নেতারা বার বার কাফফারা দেয়ার কথাও বলেছেন।
তবে জাসদের কাফফারায় মন যে ভরেনি, তা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম স্পষ্ট করলেন। জাসদ হঠকারী দল, তা বেশ জোর দিয়েই বললেন আশরাফ।
দলীয় কর্মীদের জাসদ থেকে সাবধানও থাকতে বললেন, আওয়ামী লীগের এই গুরুত্বপূর্ণ নেতা। জাসদ নেতা তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর কারণে আওয়ামী লীগকে আজীবন প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ঘটনা আজ (সোমবার) বিকেলের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) অডিটোরিয়ামে ছাত্রলীগের দুই দিনব্যাপী বর্ধিত সভা ও কর্মশালার সমাপনীতে বক্তব্য রাখছিলেন আশরাফ।
এ অনুষ্ঠানে জাসদকে ‘হঠকারী’ সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ক্ষেত্র তৈরি এবং দেশের অর্থনৈতিক অনগ্রসরতার জন্য দায়ী জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)।
স্বাধীনতা-পরবর্তী জাসদের নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের কথা বলে ছাত্রলীগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তারা জাসদ গঠন করে। মু্ক্তিযুদ্ধের চেতনাকে জাসদ নামক বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রবাদীরা সম্পূর্ণ ভিন্ন দিকে পরিচালিত করে। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের ইতিহাসের একটি অংশ। তারা এ মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছিল। বঙ্গবন্ধু দেশে ফেরার আগেই দেশকে ছিন্নভিন্ন করার চেষ্টা করেছিল।
তিনি আরো বলেন, এ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তারা যদি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সমস্ত পরিবেশ সৃষ্টি না করতো, তবে বাংলাদেশ একটি ভিন্ন বাংলাদেশ হতে পারতো।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, পূর্বের ইতিহাস জেনে এই হঠকারীদের এড়িয়ে চলবেন।
জাসদের অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে এর আগেও চটেছেন আওয়ামী লীগের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা।
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে গত বছরের ২১ মে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে যুবলীগ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম জাসদের তীব্র সমালোচনা করেন।
ওই সভায় তিনি বলছিলেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলই (জাসদ) বঙ্গবন্ধু হত্যার ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল, যার সুযোগ নিয়েই জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুকে খুনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন।
একই বছরের ২৫ আগস্ট শোক দিবসের ওপর এক আলোচনায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছিলেন, বাম সংগঠন ন্যাপ ও জাসদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারের হত্যার প্রেক্ষাপট তৈরি করেছিল।
এবার দলের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতা আশরাফ অত্যান্ত সচেতনভাবে জাসদ প্রসঙ্গের অবতারণা করেন।
ক্ষমতার কেন্দ্রে থেকেও জাসদ কেন এখনও আওয়ামী লীগের সমালোচনার মুখে এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জাসদকে বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। যারা বঙ্গবন্ধুর মতো নেতাকে অপসরণ করার নকশা আঁকতে পারে, তারা নিজেদের স্বার্থে যে কোনো ষড়যন্ত্র করতে পারে। দলের সাধারণ সম্পাদক হয়ত নেতাকর্মীদের একটু সাবধান করে দেয়ার জন্যই প্রসঙ্গটি তুলেছেন।