নিজের দল নিয়ে সরকারের পাশে নাজমুল হুদা
পক্ষকাল ডেস্কঃ নাজমুল হুদা, বিএনপি হয়ে এখন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে কর্মসূচিতে আসছেননাজমুল হুদা, বিএনপি হয়ে এখন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে কর্মসূচিতে আসছেনবিএনপি থেকে বেরিয়ে নতুন দল গঠনকারী নাজমুল হুদা শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি আস্থা দেখিয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের কাছাকাছি এসেছেন।
সোমবার ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে এক বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে জোটে যোগ না দিলেও গুপ্তহত্যার প্রতিবাদে ১৪ দলের কর্মসূচিতে সমর্থন জানিয়ে তাতে অংশ নেবে তার দল।
নিজের আগের দল বিএনপির কার্যক্রমের সমালোচনা করে তার বিপরীতে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানান নাজমুল হুদা।
“আজ তারা (বিএনপি) বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। ইসরায়েল ও মোসাদের সঙ্গে বৈঠক করে সরকার পতনের চক্রান্ত করছে। এজন্য যদি আমরা ১৪ দলীয় জোটকে শক্তিশালী করি, তবে প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করা হবে।”
বিএনপির সাবেক নেতার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিম সাংবাদিকদের বলেন, “দেশে সাম্প্রতিক গুপ্ত হত্যার প্রতিবাদে জাতীয় জোটের নেতৃবৃন্দ এসেছেন, এজন্য নাজমুল হুদাকে ধন্যবাদ।”
বিএনপি প্রতিষ্ঠাকালীন স্থায়ী কমিটির সর্বকনিষ্ঠ সদস্য নাজমুল হুদা দুই বার খালেদা জিয়ার সরকারে মন্ত্রী ছিলেন। তবে বক্তব্য ও কাজের জন্য দলে সমালোচনায় পড়ার পাশাপাশি তাকে বহিষ্কৃতও হতে হয়।
১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা দেওয়ার কারণে মন্ত্রিত্ব হারাতে হয়েছিল নাজমুল হুদাকে। শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে ২০১০ সালে বিএনপি থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। তিনি তখন দলের ভাইস চেয়ারম্যান।
ভুল স্বীকার করে খালেদা জিয়ার কাছে আবেদন করার পর ২০১১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর আবার বিএনপির সদস্যপদ ফিরে পেয়েছিলেন নাজমুল হুদা। কিন্তু ২০১৪ সালের ৬ জুন সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি ছাড়েন তিনি।
নাজমুল হুদা এরপর ৩১টি দল নিয়ে ‘বাংলাদেশ জাতীয় জোট’ নামে একটি রাজনৈতিক মোর্চা গঠন করেন, তবে এর তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায় না।
সোমবার বিকালে ১৪ দলের সঙ্গে মতবিনিময় সভার পর নাজমুল হুদা ১৪ দলের কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যাও দেন।
“সন্ত্রাস দমন নিয়ে রাজনীতি করার কোনো সুযোগ নেই। এজন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে পদক্ষেপ নিচ্ছেন, তাকে আমরা পূর্ণ সমর্থন করি।”
“এখন আর রাজপথে মারামারি, হানাহানি, সন্ত্রাস, অহেতুক ধর্মঘট নেই। একটা শান্তিময় পরিবেশ বিরাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী এসব সন্ত্রাস বন্ধ করতে পেরেছেন, এজন্য তাকে ধন্যবাদ।”
বিএনপির ‘ষড়যন্ত্র’ ঠেকাতে ১৪ দলীয় জোটকে শক্তিশালী করলে প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করা হবে বলে মনে করেন এই ব্যারিস্টার।
নাসিম বলেন, “তাদের সঙ্গে আজ যে মতবিনিময় শুরু হল, এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি অন্যান্য অসাম্প্রদায়িক দলগুলোর সঙ্গেও পর্যায়ক্রমে মতবিনিময় করবে ১৪ দল।”
সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের জন্য বিএনপি-জামায়াত জোটকে দায়ী করে তা মোকাবেলায় সব গণতান্ত্রিক ও আসম্প্রদায়িক মানুষকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম।