রবিবার, ১৯ জুন ২০১৬
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » তারেককে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অপরিণামদর্শী: বিএনপি
তারেককে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অপরিণামদর্শী: বিএনপি
পক্ষকাল ওয়েভঃ খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যকে ‘অপরিণামদর্শী’ বলেছে বিএনপি।
রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান।
তিনি বলেন, “জনাব তারেক রহমান সম্পর্কে গতকাল প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন, তা রাজনৈতিক শিষ্টাচার বিবর্জিত, অত্যন্ত কুরুচিকর, উসকানিমূলক, ঔদ্ধত্যপূর্ণ, অপরিণামদর্শী এবং প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশে পরিপূর্ণ।
পুলিশের সাম্প্রতিক অভিযান ও বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা নিয়ে জনমনে ‘ক্ষোভ জমেছে’ দাবি করে ফখরুল বলেন, সে বিষয়টি ‘আড়াল করতেই’ প্রধানমন্ত্রী তারেক রহমানকে ‘আক্রমণ করেছেন’ বলে তাদের ধারণা।
“জঙ্গি দমনের নামে বিএনপিসহ বিরোধী দল ও সাধারণ জনগনের বিরুদ্ধে যে হিংস্র পাশবিকতা ও দমননীতি চালানো হয়েছে এবং ক্রসফায়ারে হত্যায় যে রহস্য দানা বেঁধেছে সেখান থেকে জনগণের দৃষ্টিকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া” প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্য বলে মন্তব্য করেন ফখরুল।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের ইফতার মাহফিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যে তার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিককে হত্যার হুমকির জন্য দৃশ্যত তারেক রহমানের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে এ বিষয়ে ব্রিটিশ সরকারের পদক্ষেপ চান।
তিনি বলেন, “লন্ডনে বসে এই যে হুমকিটা দেওয়া… এক কুলাঙ্গার সেখানে বসে আছেন। ব্রিটিশ সরকার তাকে কেন সেখানে জায়গা দিয়েছেন জানি না।”
এর জবাবে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, “রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর এ রকম ভাষা প্রয়োগ স্বৈরতান্ত্রিক আক্রমণের একটি নতুন দৃষ্টান্ত। আমরা প্রধানমন্ত্রীর এহেন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “নাম উল্লেখ করেননি, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান সাহেব লন্ডনে বসে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভাগ্নি ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকীকে নাকি হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ও শেখ রেহানাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
“আমরা বলতে চাই, হত্যার হুমকি ধামকি- এটা বাংলাদেশের বর্তমান শাসকদলেরই বৈশিষ্ট। একটি গণতান্ত্রিক দেশে এটা কোনোক্রমেই সম্ভব নয়, বিশেষ করে ইংল্যান্ডের মত একটি দেশে, যেখানে আইনের শাসন রয়েছে, গণতন্ত্র রয়েছে।”
লন্ডনে বসবাসকারী কোনো ব্যক্তি কাউকে হত্যার হুমকি দিয়ে আইনের হাত থেকে রেহাই পেতে পারে কি না- সেই প্রশ্ন তুলে ফখরুল বলেন, “ব্রিটেনের সরকারি দল কি বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রের প্রভু হয়ে বসে আছে? সেখানে কি সরকারি শাসনযন্ত্রকে বাংলাদেশের মতো অপব্যবহার করা হয়?… সে দেশে তো আইনের শাসন চলে, আওয়ামী শাসন চলে না।”
এই বিএনপি নেতার দাবি, ‘হাজারো কুৎসা ও মিথ্যা প্রচার চালানোর পরও’ তারেক রহমান বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘একটি মজবুত আসন’ করে নিয়েছেন, যা ‘অন্য কেউ পারেনি’।
“জনাব তারেক রহমানকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য দেশের মানুষকে স্তম্ভিত করেছে। তার বক্তব্য দেশের রাজনীতিতে বিচ্ছেদ, বিনাশ ও ব্যবধানের মাত্রা বাড়িয়ে তুলবে,” বলেন ফখরুল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হারুনুর রশীদ, কেন্দ্রীয় নেতা শাহজাহান মিলন, আবদুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম ও শহিদুল ইসলাম বাবুল সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।