ফাহিমের মৃত্যু ‘রহস্যজনক’: আম্বিয়া-প্রধান
পক্ষকাল ; পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ গোলাম ফাইজুল্লাহ ফাহিমের নিহতের ঘটনাকে ‘রহস্যজনক’ বলে আখ্যায়িত করেছে ক্ষমতাসীন ১৪ দলের শরিক নুরুল আম্বিয়া ও নাজমুল হক প্রধানের নেতৃত্বাধীন জাসদ।
পাশাপাশি গুপ্তহত্যার প্রতিবাদে ‘রুখে দাঁড়ানোর’ আহ্বান জানিয়ে রোববার ঢাকার গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ি ও দেশব্যাপী মানবন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলের এই দুই নেতা।
শনিবার এক বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি ধারাবাহিক ভাবে একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী মুক্তমনা, প্রগতিশীল ও ভিন্ন ধর্মে বিশ্বাসী ব্যাক্তিদের লক্ষ্যবস্তু করে সুপরিকল্পিতভাবে একটি মহল একের পর এক হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে পুলিশ অপরাধীদের চিহ্নিত করতে পারলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অপরাধী বিশেষ করে নেপথ্যের গডফাদাররা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।
“যখনই গডফাদারদের মুখোশ উন্মোচন হওয়ার উপক্রম হচ্ছে তখনই রহস্যজনক ঘটনার জন্ম হচ্ছে। মাদারীপুর হত্যা প্রচেষ্টার অন্যতম আসামি ধরা পড়ার পর পুলিশি হেফাজতে তার মৃত্যু একটি রহস্যজনক ঘটনা।”
মাদারীপুরে শিক্ষকের উপর হামলার ঘটনায় হাতেনাতে গ্রেপ্তার ‘জঙ্গি’ গোলাম ফাইজুল্লাহ ফাহিম শনিবার পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।
বুধবার মাদারীপুরের সরকারি নাজিমউদ্দিন কলেজের প্রভাষক রিপন চক্রবর্তীকে হামলার পর জনতা ফাহিমকে আটক করে পুলিশে দিয়েছিল। এরপর শুক্রবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের হেফাজতে নেওয়ার একদিন পরই কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন তিনি।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও শনিবার দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, গুপ্তহত্যার ‘আড়ালে যারা আছেন’ তাদের রক্ষা করতেই ফাহিমকে ‘ক্রসফায়ারে’ দেওয়া হয়েছে।
তবে বিবৃতে আম্বিয়া ও প্রধান এসব ঘটনার জন্য বিএনপি জামায়াত জোটকে দায়ী করেছেন।
পাশাপাশি ‘নেপথ্যের নায়কদের আড়াল করার’ চক্রান্তের বিরুদ্ধে সরকার ও দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান্ও জানান তারা।
“সারা দেশে বিএনপি জামায়াত জোটের সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও গুপ্তহত্যার প্রতিবাদে ১৯ জুন বিকাল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত রাজধানী ঢাকা মহানগরীর গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়িসহ দেশব্যাপী মানববন্ধন সফল করার লক্ষ্যে সারা দেশে ১৪ দল ও জাসদের সকল শাখাকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”
তারা বলেন, “আমরা হত্যাকারীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের পাশাপশি নেপথ্যের নায়কদের আড়াল ও রক্ষা করার যে কোনও চক্রান্তের বিরুদ্ধেও সরকার ও দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।”
রামকৃষ্ণ মিশনে হামলার হুমকি এবং সংখ্যালঘুদের রক্ষায় ভারতের প্রধামন্ত্রীর ‘হস্তক্ষেপ চেয়ে’ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা রানা দাশগুপ্তের কথিত বক্তব্যের বিষয়ে তারা বলেন, “দেশবাসী ও সরকার গুরুত্ব দিয়ে এ ধরনের হামলা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিচ্ছে। কিন্তু এ বিষয়ে প্রতিবেশী দেশের সরকারকে টেনে আনার প্রয়াস সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলবে বলে আমরা মনে করি।”