শনিবার, ২ জুলাই ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি | সম্পাদক বলছি » নিরাপত্তার স্বার্থে গুলশানের ঘটনা লাইভ সম্প্রচার না করার অনুরোধ
নিরাপত্তার স্বার্থে গুলশানের ঘটনা লাইভ সম্প্রচার না করার অনুরোধ
পক্ষকাল প্রতিবেদকঃ
রাজধানীর গুলশানে দুর্বৃত্তদের সঙ্গে পুলিশের গোলাগুলির ঘটনা নিরাপত্তার স্বার্থে টিভিতে লাইভ সম্প্রচার না করার অনুরোধ জানিয়েছে র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, এখন টিভি সম্প্রচার অনেকেই দেখছেন, তাই নিরাপত্তার স্বার্থে সম্প্রচার না করা আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের কাছে প্রতিটি জীবনই মুল্যবান। আমরা সব দিক বিবেচনায় পদক্ষেপ নিচ্ছি।
শুক্রবার রাত ৯টার দিকে রুট রিভলস নামে একটি রেস্টুরেন্টের ভেতর থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। পরে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়।
ধারণা করা হচ্ছে, কোনো জঙ্গি গোষ্ঠী রেস্টুরেন্টের ভেতর বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করে রেখেছে। রাত পৌনে ১১টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখার সময় সেখানে যৌথ অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছিল পুলিশ। গুলশান ২ নম্বরের সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে ভবনটি ঘিরে রাখা হয়েছে। সেখানে র্যাবসহ বিভিন্ন সংস্থার লোকজনও জড়ো হয়েছে।
এদিকে, রাত ১০টার দিকে আহত দুই পুলিশ কনস্টেলবল প্রদীপ (২৮) ও আলমগীর (২৬) এবং আব্দুর রাজ্জাক নামে আরেক মাইক্রোবাস চালককে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। আহতদের মধ্যে দুই পুলিশ সদস্যের পায়ে এবং রাজ্জাকের গলায় ও ঘাড়ে গুলিবিদ্ধ হয়।
আহতদের দাবি, ইউনাইটেড হাসপাতালের কাছাকাছি রাস্তায় মাইক্রোবাস রেখে দাঁড়িয়ে ছিলেন চালক রাজ্জাক। এ সময় তিনি শরীরে গুলিবিদ্ধ হন। আব্দুর রাজ্জাককে উদ্ধার করতে গিয়ে অপর দুই পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ হন বলে দাবি করেন তাঁরা।
গতকাল রাতে গুলশান এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা দাবি করেন, রাত পৌনে ৯টা থেকে তারা সাড়ে ৯টার মধ্যে অর্ধশতাধিক গুলির শব্দ শুনেছেন। এতে গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সরেজমিনে জানা গেছে, রাত ১০টার দিকে গুলশান ২ নম্বর থেকে ৭৯ নম্বর সড়কের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। ওই এলাকায় পুলিশ ও র্যাবের ব্যাপক উপস্থিতি চোখে পড়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোস্তাক আহমেদ বলেন, “শুনেছি গুলশানের ৭৯ নম্বর রোডের একটি বাসা থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছে সন্ত্রাসীরা। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলের দিকে যাচ্ছি। এখনও বিষয়টি স্পষ্ট নয়।”
এলাকাবাসী বলছেন, রাত ৯টার দিকে গুলশান ২ নম্বরের কাছে হলি আর্টিজান বেকারি, লেকভিউ ক্লিনিক ও নর্ডিক ক্লাবের কাছাকাছি জায়গায় গোলাগুলি শুরু হয়। তবে পুলিশের একটি সূত্র জানায়, রাত সাড়ে ৮টার দিকে রোড রিভলস নামে একটি রেস্টুরেন্টের ভেতর থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। এরপর পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়।
অনেকক্ষণ গোলাগুলি হলেও হামলাকারীদের বের করা যায়নি। একপর্যায়ে ভেতর থেকে গুলি বন্ধ হয়ে যায়। রাত ১০টার দিকে পুলিশের কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করে ভেতরে যৌথ অভিযান চালিয়ে দুর্বৃত্তদের বের করার চেষ্টা করছেন তাঁরা।
এদিকে, গুলশানের আরেক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “গুলি চালানো ব্যক্তিরা সাত-থেকে আটজন। তারা গুলি ছোড়ার সময় স্লোগান দিচ্ছিল। ফলে এটি জঙ্গি গোষ্ঠীর সন্ত্রাসী হামলা বলেই তাৎক্ষণিক ধারণা করছে পুলিশ। ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, “হিজবুত তাহরীরের একটি দল গোপন বৈঠক করছিল বলেও খবর পাওয়া গেছে।”
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গুলশান থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম বলেন, “এখন অভিযান চলছে। পরে বলা যাবে।”