রবিবার, ১০ জুলাই ২০১৬
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » পিস টিভি বন্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ সোমবার: ইনু
পিস টিভি বন্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ সোমবার: ইনু
মন্ত্রিসভা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশে পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধের বিষয়ে সোমবার প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেবে তথ্য মন্ত্রণালয়।
রোববার প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ মিলনায়তনে টেলিভিশনের মালিক ও প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে এক বৈঠকের শুরুতে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “আইনশৃ
ঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি বাংলাদেশে পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধের সিদ্ধান্ত দিয়েছে। এ ব্যাপারে তথ্য মন্ত্রণালয় আগামীকাল (সোমবার) পুরো বিষয় পরীক্ষা করে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেবে।”
“পিসি টিভি বহু ক্ষেত্রে মুসলমান সমাজের কোরান, সুন্নাহ, হাদিস, বাংলাদেশের সংবিধান, দেশজ সংস্কৃতি, রীতি-নীতি, আচার-অনুষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ না।”
সোমবার থেকেই বাংলাদেশে পিস টিভি বন্ধ হচ্ছে কি না- এমন প্রশ্নে ইনু বলেন, “যেহেতু প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের ব্যাপার রয়েছে… আজ (রোববার) সময় নেই, কাল (সোমবার) সকাল থেকে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যবস্থা নেব।”
ভারতের বিতর্কিত ইসলামী বক্তা জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে ‘জঙ্গিবাদে উৎসাহ যোগানোর’ অভিযোগ ওঠার পর রোববার মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশে তার পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধের এই সিদ্ধান্ত হয়।
জাকির নায়েক পরিচালিত মুম্বাইভিত্তিক ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একটি প্রতিষ্ঠান হল এই পিস টিভি। এ টিভিতে ধর্ম নিয়ে আলোচনায় ইসলামের যে ব্যাখ্যা তিনি দেন, তা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
গত ১ জুলাই গুলশানে বাংলাদেশের ইতিহাসে ভয়াবহতম জঙ্গি হামলায় সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে অন্তত দুইজন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে জাকির নায়েকের মত ইসলামী বক্তাদের নিয়মিত অনুসরণ করতেন। তার কথায় প্ররোচিত হয়ে ভারতের কয়েকজন তরুণ আইএসে যোগ দিতে সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছে বলেও খবর এসেছে।
এ বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর জাকির নায়েকের বিষয়ে উদ্যোগী হয় ভারত সরকার। মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকার তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। মুম্বাইয়ে তার অফিস ঘিরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
ভারতের সম্প্রচারমন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডু শুক্রবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, “আমরা অভিযোগ তদন্ত করছি। কারণ এটা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা, সেই সঙ্গে সামাজিক সম্প্রীতির জন্যও হুমকি।”
এদিকে বাংলাদেশেও পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধের দাবি জোরালো হয়ে উঠতে থাকে।
বাংলাদেশ কেবল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মীর হোসেন আখতার শুক্রবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা পুরো দেশেই চ্যানেলটি বন্ধ করে দিতে চাচ্ছি। তবে সরকারের কোনো নির্দেশনা না থাকায় এই মুহূর্তে তা সম্ভব হচ্ছে না।”
কেবল অপারেটরদের অপর সংগঠন কেবল অপারেটার্স বাংলাদেশের (কব) সাবেক সভাপতি এস এম আনোয়ার পারভেজ বলেন, “আমাদের দেশটা শান্তিপ্রিয় দেশ। আমাদের কোনো প্রয়োজন নাই পিস টিভির।”
এই প্রেক্ষাপটে সরকারের ভেতরেও নড়াচড়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায় শনিবার।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সেদিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই টিভিটি সম্পর্কে কিছু অভিযোগ আমাদের গোচরীভূত হয়েছে। এগুলো খতিয়ে দেখা হবে। মন্ত্রণালয়ের অফিস খুললেই কাজ শুরু হবে। অল্প সময়ের মধ্যেই এ বিষয়ে সরকারের স্ট্যান্ড আমরা স্পষ্ট করব।”
জাকির নায়েক অবশ্য দাবি করেছিলেন, তার বক্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়ে তরুণরা জঙ্গিবাদে ঝুঁকছে- এমন অভিযোগ বাংলাদেশ সরকারের লোকজন ‘বিশ্বাস করে না’।
শনিবার এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, “আমি বাংলাদেশ সরকারের লোকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাকে বলেছেন, বাংলাদেশের জঙ্গিদের আমি নিরীহ মানুষকে হত্যা করতে অনুপ্রাণিত করেছি- এমন অভিযোগ তারাও বিশ্বাস করেন না। তাদের মধ্যে একজন আমার ফ্যান ছিল, সেটা আলাদা বিষয়।”