বুধবার, ১৩ জুলাই ২০১৬
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » জঙ্গি দমনে মাঠ পর্যায়ে শক্ত প্রতিরোধ চায় ১৪ দল
জঙ্গি দমনে মাঠ পর্যায়ে শক্ত প্রতিরোধ চায় ১৪ দল
পক্ষকাল ডেস্কঃ
ধারাবাহিক জঙ্গি হামলায় লেখক, প্রকাশক, ব্লগার, সংখ্যালঘু নিহত হওয়ার ঘটনায় অসন্তুষ্টই ছিল ১৪ দলীয় শরিকরা। গ্রেফতারকৃতদের নিয়মিত ক্রসফায়ারের ঘটনায় বেশ ক্ষুব্ধ ও বিব্রত বোধ করেছিলেন জোটের অনেকেই।
তবে গুলশানের আর্টিজান ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া হামলার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে জঙ্গি ইস্যুতে জোটের নেতাকর্মীদের সহায়তায় জনগণের সঙ্গে মাঠে থাকারও ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
জোট নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে জোট নেতারা সন্তষ্ট না থাকলেও সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে বেশ খুশি। তবে এ নিয়ে শক্ত জনসম্পৃক্ততা তৈরি করতে ১৪ দলকে মাঠে থাকতে হবে বলে মনে করেন তারা
বিষয়টি নিয়ে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ নিয়েছে জোট। পাশাপাশি ১৪ দলের নেতৃত্বে গ্রাম-গঞ্জে, পাড়া-মহল্লায় প্রতিরোধ কমিটি গঠনের মাধ্যমে দেশ থেকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের নির্মূল করার বেশ কিছু পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। গত সোমবার শহীদ মিনারের সমাবেশে ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিম এ নিয়ে বেশ কিছু নির্দেশনাও দিয়েছেন।
ওই সমাবেশ থেকে ঢাকায় আগামী ২০ জুলাই অভিভাবক সমাবেশ এবং ২১ জুলাই নারী সমাবেশ ঘোষণা করা হয়। সন্তানদের জঙ্গি ও সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে অভিভাবক ও নারীদের সচেতন করতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
এ ছাড়া ২৪ জুলাই থেকে রংপুর, পঞ্চগড়, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া ও কুমিল্লাসহ পর্যায়ক্রমে সারাদেশে জঙ্গিদের খুঁজে বের করারও কর্মসূচি পালন করবে ১৪ দল।
এ ব্যাপারে ১৪ দলের মুখপাত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, জঙ্গি দমনে ১৪ দল কঠোর অবস্থানে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অব্যাহত রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে জঙ্গি দমনে প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি নেয়া হবে। মাঠপর্যায়ে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে এ কর্মসূচির সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে দলের নির্দেশ রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাইছি, জঙ্গি দমনে ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম। তবে যারা এসব জঙ্গিবাদের মদতদাতা বা নেপথ্য থেকে এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ১৪ দলকে বেকায়দায় ফেলতে চায়, প্ল্যাটফর্মে তাদের জায়গা হবে না।’
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি পূর্বপশ্চিমকে বলেন, ‘ক্রসফায়ার হোক আর বিনা বিচারে হত্যাকাণ্ডই হোক- জাসদ এ ধরনের হত্যাকাণ্ড কখনোই সমর্থন করে না। আমি এ ধরনের প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত দাবি করছি।’
তিনি আরও বলেন,’আমরা চাই, জঙ্গি দমনে সর্বাত্মকভাবে মাঠে থাকতে। কিন্তু তাই বলে নিরীহ লোককে শাস্তির আওতায়ও আনতে চাই না আমরা। জোটের কর্মসূচি ঘোষণা হয়েছে। আপাতত সেসব নিয়েই কাজ করতে চাই। ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামই জঙ্গি দমনে ভূমিকা রাখতে পারে।’
ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা পূর্বপশ্চিমকে বলেন, জঙ্গি-সন্ত্রাস নির্মূলে দিন রাত কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে পুলিশ। ইতোমধ্যে দেশজুড়ে তল্লাশি চালিয়ে অনেক জঙ্গিকে গ্রেফতারও করেছে তারা। কিন্তু সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। তাই দেশের একজন সুনাগরিক হিসেবে প্রত্যেককে জঙ্গি নির্মূলে সরকারকে সহযোগিতা করার পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘জঙ্গিবাদ দমনে জনসাধারণকেও এখন দায়িত্ব নিতে হবে। পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের আলেম সমাজকে কাজে লাগিয়ে দেশ থেকে জঙ্গিদের বিতাড়িত করতে হবে।’
জানতে চাইলে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের অপর অংশের (আম্বিয়া-প্রধান) সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বলেন, জঙ্গিবাদ বৈশ্বিক উৎপাতে পরিণত হয়েছে। গুলশান ও শোলাকিয়ার ঘটনা বাংলাদেশে কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়।
তিনি বলেন, ‘এর অতীত হলো হেফাজতিদের পরাজয়, আগুন সন্ত্রাসের পরাজয়। আমরা জঙ্গিদের ধ্বংস করছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথ্য উদ্ঘাটন করছে। এখন ওদের গুরুদের পরিচয় উদ্ঘাটনের চেষ্টা চলছে। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে থেকে সকল অপশক্তির মোকাবিলা করব।’