শুক্রবার, ১৫ জুলাই ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ | বিশ্ব সংবাদ | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » নিসে হামলায় আহতদের রক্ত দিতে মানুষের ঢল
নিসে হামলায় আহতদের রক্ত দিতে মানুষের ঢল
পক্ষকাল ঃসাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বৈচিত্র্যময়তার জন্য ফ্রান্স সব সময়ই বিখ্যাত। দেশটির রয়েছে সহমর্মিতা ও সহনশীলতার ঐতিহ্য। সববর্ণের ও ধর্মের লোকেরা পাশাপাশি অবস্থান করে আসছে দীর্ঘদিন ধরেই। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী হামলার পর দেশটিতে উগ্র জাতীয়তাবাদীদের উত্থান ক্রমেই বাড়ছে। তবুও সর্বশেষ বৃহস্পতিবার নিসেতে আরেকটি ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পরও দেশটির মানুষ প্রমাণ করেছেন, বৈচিত্র্যময়তা ও সংহতিই তাদের শক্তি।
২০১৪ সাল থেকেই সন্ত্রাসী হামলায় বারবার বিধ্বস্ত হয়েছে। তবু ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আর ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে রয়েছে ফ্রান্সের মানুষের মানবিক মূল্যবোধ। যা সন্ত্রাসবাদ পরাজিত করতে পারেনি। বৃহস্পতিবারের হামলা সেই মানবিক মূল্যবোধকে আরও জাগ্রত করেছে।
মঙ্গলবার নিসেতে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় শিশুসহ অন্তত ৮৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ভয়াবহ এ ট্রাক হামলায় শিশু-কিশোরসহ আরও অর্ধশতাধিক ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এদের মধ্যে ১৮ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, আহতদের রক্তের প্রয়োজন। সহমর্মিতা ও সংহতিতে বিশ্বাসী মানুষেরা বসে থাকেননি। ছুটে গেছেন হাসপাতালে। রীতিমতো মানুষের ঢল নেমেছে রক্ত দিতে। আছেন সব বয়সের, সব শ্রেণির ও সব ধর্মের মানুষ।
৫৮ বছরের টিম বাকের শুক্রবার হাসপাতালের সামনে এসেছেন। তার মতো হাসপাতালে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছেন আরও কয়েকশ মানুষ। সবাই এসেছেন আহতদের রক্ত দিতে। টিম বাকের বলেন, ইএফএস (ফ্রান্সের জাতীয় রক্ত সেবা) নিসেতে সকাল সাড়ে ৯টায় রক্তদান কেন্দ্র খোলে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেখানে কয়েকশ মানুষ রক্ত দিতে উপস্থিত হয়েছেন।
টিম বাকের বলেন, যখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায় আপাতত আর রক্তের প্রয়োজন নেই তখনও প্রায় ৪০০ মানুষ রক্ত দিতে আগ্রহী ছিলেন। প্রয়োজন না হলেও অনেকেই রক্ত দিতে চাচ্ছিলেন। পরে তাদের বলা হয়, আগামী সপ্তাহে এসে রক্ত দিতে।
ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়ার দ্বৈত নাগরিক বাকের প্যারিসের অস্ট্রেলীয় দূতাবাসের কনস্যুলার সার্ভিস পরিচালনা করতেন। এরপর তিনি নিসের নিকটবর্তী বেইলিউ-সুর-মের এ স্থানান্তরিত হোন। বাকের বলেন, আমি দুই ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছি। আমার মনে হয় আমাকে আরও অন্তত ৪৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। আমার ছেলেও বন্ধুদের সাহায্যের জন্য সারারাত কাজ করেছে।
বাকের আরও বলে চলেন, নিসের রক্তদাতারা কেমন যদি কেউ জানতে চায় তাহলে শহরের সড়কগুলো খেয়াল করা উচিত। সব বয়সের, সব আয়ের ও বর্ণের মানুষকে দেখতে পাওয়া যাবে। ফ্রান্সকে যদি সন্ত্রাসবাদ ও উগ্র জাতীয়তাবাদকে প্রতিরোধ করতে হয় তাহলে দেশটির নাগরিকদের বৈচিত্র্য ও সংহতির ওপরই দাঁড়াতে হবে।