শনিবার, ১৬ জুলাই ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ | অর্থনীতি » নাইকো দুর্নীতি: খালেদাসহ ২৬ জনের নাম আন্তর্জাতিক আদালতে
নাইকো দুর্নীতি: খালেদাসহ ২৬ জনের নাম আন্তর্জাতিক আদালতে
অনলাইন ডেস্ক
.দুর্নীতির মাধ্যমে নাইকোর সঙ্গে বাপেক্সের চুক্তি সম্পাদন প্রক্রিয়ায় জড়িত হিসেবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদসহ ২৬ জনের নাম আন্তর্জাতিক আদালতে (ইকসিড) উপস্থাপন করা হয়েছে।
দেশেও খালেদা জিয়াসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা নাইকো দুর্নীতির একটি মামলা চলমান রয়েছে।
বিনিয়োগ বিরোধ নিস্পত্তি সংক্রান্ত এই আন্তর্জাতিক নালিশি আদালতের চাহিদা ও নির্দেশনা অনুযায়ী গত ১৪ জুন মঙ্গলবার পাঠানো এ তালিকায় সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব কামাল সিদ্দিকী এবং সাবেক জ্বালানি সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলামের নামও রয়েছে। তালিকাভূক্ত অন্য সবাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জ্বালানি মন্ত্রণালয়, পেট্রোবাংলা ও বাপেক্সের সাবেক কর্মকর্তা।
এ ছাড়া নাইকোর কাছ থেকে গ্যাস কেনার চুক্তি-প্রক্রিয়ায় জড়িত হিসেবে আরও ২৭ জনের নামের অপর একটি তালিকা পাঠানো হয়েছে। এই তালিকায় নাইকো রিসোর্সেস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট কাশেম শরিফ, ভাইস প্রেসিডেন্ট পিটার জে মার্সিয়ের, ব্রায়ান জে অ্যাডলফ, জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক অমিত গয়াল ও সৈয়দ আর কবির ছাড়া সবাই জ্বালানি মন্ত্রণালয়, পেট্রোবাংলা ও বাপেক্সের শীর্ষস্থানীয় সাবেক কর্মকর্তা।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্ভরযোগ্য সূত্র বলেন, তালিকায় যে সব কর্মকর্তার নাম রয়েছে তাঁদেরকে সরকারি দায়িত্বের অংশ হিসেবে এ ধরণের যে কোনো প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকতে হয়। তাই দুর্নীতির সঙ্গে তাঁদের কে কতটা জড়িত তা নিশ্চিত নয়। তবে ২০০১-০৫ মেয়াদের সরকারের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ও সরকারের রাজনৈতিক কতৃর্পক্ষের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা এই দুর্নীতিতে যুক্ত ছিলেন। এর প্রমানযোগ্য তথ্যও সরকারের কাছে রয়েছে।
নাইকোর বিরুদ্ধে বাপেক্স তথা সরকার গত ২৫ মার্চ ইকসিডে দুর্নীতির যে অভিযোগ দাখিল করেছিল সে বিষয়ে আরও তথ্য চেয়ে গত ২৬ মে ওই আদালত একটি আদেশ (প্রেসিডিওরাল অর্ডার) জারি করে। তাতে নাইকোর দুর্নীতির আরও তথ্য থাকলে সেগুলো এবং নাইকো-বাপেক্স যৌথ উদ্যোগ (জেভিএ) ও গ্যাস ক্রয় চুক্তি সম্পাদন প্রক্রিয়ায় যারা যুক্ত ছিলেন তাঁদের নামের তালিকা ১৪ জুনের মধ্যে উপস্থাপন করতে বলা হয়েছিল। সে অনুযায়ী এই তালিকা ও দুর্নীতির আরও কিছু তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
সূত্র বলেন, নাইকোর দুর্নীতি ও তার সঙ্গে জড়িতদের যে সব তথ্য ইকসিডে পাঠানো হয়েছে তা মূলত: সরকারি নথিভিত্তিক। এর সঙ্গে কিছু তথ্য রয়েছে রয়েল কানাডীয় মাউন্টেড পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে পাওয়া। সরকারি নথিতে পাওয়া তথ্যে স্পষ্ট বোঝা যায় দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারের অবস্থান কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। কীভাবে ছাতক (পূর্ব) গ্যাস ক্ষেত্রটি প্রান্তিক দেখিয়ে নাইকোর কাছে ইজারা দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, নাইকোর সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন যে দুর্নীতির মাধ্যমে হয়েছে তথ্য-প্রমাণে তা ক্রমান্বয়ে স্পষ্ট হচ্ছে। সরকার নাইকোর দুর্নীতির আরও তথ্য সংগ্রহের চেষ্ট চালাচ্ছে।
.