মঙ্গলবার, ৯ আগস্ট ২০১৬
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » জাপার সাবেক এমপি সাখাওয়াতসহ আটজনের রায় বুধবার
জাপার সাবেক এমপি সাখাওয়াতসহ আটজনের রায় বুধবার
পক্ষকাল সংবাদ: মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) সাখাওয়াত হোসেনসহ আটজনের বিরুদ্ধে রায় বুধবার (১০ আগস্ট)।
বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) রায়ের এই দিন নির্ধারণ করেন।
ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ১৪ জুলাই ট্রাইব্যুনাল মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন।
আদালতে সাখাওয়াতের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আব্দুস সাত্তার পালোয়ান। অন্য আসামিদের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আব্দুস শুকুর খান। রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম ও রেজিয়া সুলতানা চমন।
এ মামলায় সাখাওয়াত হোসেন ছাড়া আরও আটজন আসামি ছিলেন। তারা হলেন- মো. বিল্লাল হোসেন (৭৫), মো. ইব্রাহিম হোসেন (৬০), শেখ মোহাম্মদ মুজিবর রহমান (৬১), মো. আ. আজিজ সরদার (৬৫), আব্দুল আজিজ সরদার (৬৬), কাজী ওহিদুল ইসলাম (৬১), মো. লুৎফর মোড়ল (৬৯) ও আব্দুল খালেক মোড়ল (৬৮)। তবে বিচার চলাকালে লুৎফর মোড়ল মারা যাওয়ায় সাখাওয়াতসহ আটজনের বিচার হচ্ছে।
এদের মধ্যে সাখাওয়াত হোসেন ও বিল্লাস হোসেন কারাগারে রয়েছেন। বাকিরা পালাতক।
চলতি বছর ৯ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় প্রসিকিউশনের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউশনের আনা ১৭ জন সাক্ষী তদের জবানবন্দি পেশ করেন। অপরদিকে আসামি পক্ষে কোনো সাফাই সাক্ষী ছিল না ।
সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে যশোরে একাধিক মামলা করা হয়। পরে ওই সব মামলা ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ২০১২ সালের ১ এপ্রিল সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে মামলা তদন্ত করার জন্য নথিভুক্ত হয়। ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর থেকে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন আবদুর রাজ্জাক খান।
সাবেক সংসদ সদস্য সাখাওয়াত হোসেনকে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর গ্রেফতার করা হয়। ২০১৫ সালের ১৪ জুন তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ৫ অভিযোগ আনে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। তাদের মধ্যে মোট ১২ আসামির মধ্যে বাকি তিনজনের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাদেরকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।
আসামির বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল ও ২৩ ডিসেম্বর এমপি সাখাওয়াতসহ এই ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ৯ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষ তাদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করলে আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক শুরু হয়। এরপর বুধ ও বৃহস্পতিবার আসামিপক্ষ তাদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে। উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বৃহস্পতিবার মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখে ট্রাইব্যুনাল।
একনজরে সাখাওয়াত : জামায়াতের হয়ে ১৯৯১ সালে যশোর-৬ আসন থেকে সাখাওয়াত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু মেয়াদপূর্তির আগেই জামায়াত ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে সংসদ সদস্য হন তিনি। ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির পক্ষে নির্বাচন করে পরাজিত হন সাখাওয়াত।
সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ২০০১ সালে বিএনপির সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হন সাখাওয়াত। তখন বিএনপি তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করে। এরপর তিনি এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। গত সংসদ নির্বাচনে যশোর-৬ আসন থেকে তিনি জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন পেলেও নির্বাচিত হতে পারেননি।