শুক্রবার, ১৯ আগস্ট ২০১৬
প্রথম পাতা » রাজনীতি » জঙ্গিবাদকে নির্মূল নয়, ব্যবহার করতে চায় সরকার: বিএনপি
জঙ্গিবাদকে নির্মূল নয়, ব্যবহার করতে চায় সরকার: বিএনপি
পক্ষকাল ডেস্কঃ সরকার জঙ্গিবাদ নির্মূল না করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চায় বলেই দেশে জঙ্গি তৎপরতা বেড়ে চলেছে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার সকালে শেরে বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, “দেশে গণতন্ত্রহীনতা চলছে। আজকে জঙ্গিবাদের যে ভয়াবহ একটি দানব দেশকে গ্রাস করতে চলেছে, জঙ্গিবাদকে সুষ্ঠুভাবে মোকাবিলা না করে শুধুমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এটাকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। যার ফলে প্রকৃত অপরাধীরা আড়ালে থেকে যাচ্ছে।
“এটা এখন পরিষ্কার, জঙ্গিবাদকে তারা (সরকার) নির্মূল করতে চায় না। এটাকে (জঙ্গিবাদ) তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে চায়। এজন্য তারা ক্ষমতায় আসার পর থেকে জঙ্গিবাদ ক্রমশই বেড়ে চলেছে।”
বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়া নয়, আওয়ামী লীগ নেতারা জড়িত
‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে পাকিস্তানের সহায়তায় জিয়াউর রহমান জড়িত ছিলেন’ বলে বৃহস্পতিবার এক মন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, “আওয়ামী লীগে তাদের নিজেদের অপরাধ ঢাকার জন্য অনেক অলীক গল্প সব সময় বলে এসেছে। শেখ মুজিবের মর্মান্তিক হত্যার পরে ক্ষমতায় বসেছিল কারা? ক্ষমতায় বসেছিল আওয়ামী লীগ।
“সুতরাং এটা খুব পরিষ্কার যে যারা শেখ মুজিবের হত্যার পরে ক্ষমতায় বসেছিল, তারাই এটার মূল চাবিকাঠি ঘুরিয়েছিলেন। শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের হত্যার জন্য যদি কাউকে…, সত্যিকার অর্থে সুষ্ঠু তদন্ত করা হয়, দেখা যাবে যে তাদের নেতারাই এটার সঙ্গে পুরোপুরি জড়িত। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কখনোই এই ধরণের রাজনীতি করেননি, তিনি এর সঙ্গে জড়িত থাকার প্রশ্নই উঠে না।”
নতুন কমিটির পরিবর্তন প্রসঙ্গে
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটি নিয়ে অসন্তোষের প্রেক্ষিতে কোনো পরিবর্তন আসছে কি না জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপির মতো একটা বড় দলের ৫০২ জনের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সব যোগ্য নেতাদের জায়গা দেওয়া সম্ভব হয়নি।
“স্বাভাবিকভাবেই ক্ষোভ থাকতে পারে, অসন্তোষ থাকতে পারে। কিন্তু এটা একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে হয়েছে। আমরা দেখেছি, এটা সকলের কাছে সামগ্রিকভাবে গ্রহণযোগ্যও হয়েছে।
“তাই পরিবর্তনের সম্ভবনার কথা বলা যাচ্ছে না। এক নেতার দুই পদ থাকবে না- সেক্ষেত্রে যেসব পদ খালি হবে সেখানে যারা যোগ্য তারা স্থান পেতে পারেন।”
জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্য তৈরির অগ্রগতি নিয়ে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন সব রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি ও দেশপ্রেমিক সংগঠনগুলোকে আহ্বান জানিয়েছিলেন, যা একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।
“আমরা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, দেশনেত্রীর এই আহ্বানটি ছিল সমস্ত জাতির প্রতি আহ্বান। এখানে দল বিশেষের ব্যাপার নয়। এই প্রক্রিয়া চলছে।”
বিএনপিকে ‘নির্মূল’ করতে সরকার দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা-গ্রেপ্তার চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
“সরকারের একজন মন্ত্রীর মুখ থেকে বেরিয়েও এসেছে, তারা বিএনপিকে নির্মূল করতে চায়। সেজন্য মামলা-গ্রেপ্তার আবার বেড়ে গেছে। ওই মন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা বিএনপির সঙ্গে ঐক্য নয়, বিএনপিকে নির্মূল করব।
“একটি গণতান্ত্রিক দেশে যদি একজন মন্ত্রী, একজন দায়িত্বশীল নেতা একটি গণতান্ত্রিক দলকে নির্মূল করতে চান, তাহলে গণতন্ত্রের অবস্থায় কোথায় আছে, এটা সহজে অনুমান করা যায়।”
জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু ও সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল বারী বাবুসহ নেতাকর্মীদের নিয়ে বিএনপি মহাসচিব সকালে জিয়ার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। তারা প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাতও করেন।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাদের মধ্যে মুনির হোসেন, সাইফুল ইসলাম পটু, ইয়াসীন আলী, লিটন মাহমুদ ও সাহাবুদ্দিন মুন্না এসময় উপস্থিত ছিলেন।
২২ অগাস্ট সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভা হবে।