আশিয়ান সিটির কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা
ডেস্ক : ফের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে আশিয়ান সিটির আবাসন প্রকল্প। প্রকল্প অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় রিভিউতে বাতিল হয়ে গিয়েছিল। রিভিউর সেই রায়টি এবার আপিল বিভাগ স্থগিত করে দিয়েছেন।
একইসঙ্গে লিভ আদালত রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলেছে। রিটকারী ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তারা রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পেলে নিয়মিত লিভ টু আপিল করবেন।
তবে সেই লিভ টু আপিল শুনানি না হওয়া পর্যন্ত রাজধানীর উত্তর খান, দক্ষিণ খানসহ চারটি মৌজায় সকল প্লট বিক্রি ও উন্নয়নসহ সকল কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
রিভিউর রায়ের স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতিসহ (বেলা) রিটকারী সংগঠনগুলো পৃথক দুই আবেদন নিয়ে আপিল বিভাগে যায়। সেই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সোমবার (২২ আগস্ট) এই আদেশ দেন।
আদালতে রিটকারী সংগঠনের পক্ষে ছিলেন ফিদা এম কামাল, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও মিনহাজুল হক চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আশিয়ান সিটির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ।
প্রকল্পটির কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে ২০১২ সালের ২২ ডিসেম্বর রিট আবেদন করে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি, ব্লাস্ট, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন, ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্ট বাংলাদেশ, নিজেরা করি ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন।
তাদের অভিযোগ, ১৯৭২ সালের ল্যান্ড হোল্ডিং লিমিটেশন অর্ডার অনুসারে বাংলাদেশের কেউ ৩৩ একর বা ১০০ বিঘার বেশি জমি রাখতে পারে না। কিন্তু আশিয়ান সিটি প্রকল্পের কাগজপত্র অনুসারে তারা ৪৩ দশমিক ১১ একর ভূমিতে আবাসন প্রকল্পের অনুমোদন পেয়েছে।
প্রকল্প এলাকা প্লাবন ভূমি ও নিচু জমি হওয়ায় এবং সেখানে খাল থাকায় জলাধার আইন অনুসারেও ওই জমিতে আবাসন প্রকল্প করা যায় না বলে রিট আবেদনে উল্লেখ করা হয়।
ওই রিটের প্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুল জারি করে। রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি করে ২০১৪ সালের ১৬ জানুয়ারি আশিয়ান সিটির ওই প্রকল্পের কার্যক্রম অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট। সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে এই রায় দেন বিচারপতি সৈয়দ এ বি মাহমুদুল হক, বিচারপতি কাজী রেজা-উল- হক ও বিচারপতি এবিএম আলতাফ হোসেনের হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ।
সেই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে হাইকোর্টে আশিয়ান সিটি আবেদন করলে গত ১৬ অগাস্ট অবৈধ ঘোষণার রায় বাতিল করে দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি সৈয়দ এ বি মাহমুদুল হক, বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল-হকের বৃহত্তরও বেঞ্চ এই রায় দেন। সেই রিভিউর রায় এবার আপিলে স্থগিত হয়ে গেল।