রবিবার, ২৮ আগস্ট ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » মীর কাসেমের রিভিউ’র রায় ৩০ আগস্ট
মীর কাসেমের রিভিউ’র রায় ৩০ আগস্ট
পক্ষকাল ডেস্কঃ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের চেয়ারম্যান মীর কাসেম আলীর রিভিউ শুনানি শেষ হয়েছে।
রবিবার (২৮ আগস্ট) উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ৩০ আগস্ট রায়ের দিন নির্ধারণ করেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।আসমী পক্ষের শুনানিতে অংশ নেত মীর কাসেমের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন এবং রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে অংশ নেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চে রিভিউ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
মীর কাসেম আলীর মামলাটি গত ২৫ জুলাই শুনানির জন্য উঠেছিল। ওই দিন তার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন দুই মাস সময়ের জন্য আবেদন করেন।পরে আদালত এক মাস সময় মঞ্জুর করে ২৪ আগস্ট দিন নির্ধারণ করেছিলেন। সে অনুযায়ী গত বুধবার প্রথম দিনের মতো শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিন মামলার শুনানি রবিবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছিল। সে অনুযায়ী রবিবার (২৮ আগস্ট) মামলাটি আবার শুনানির জন্য উঠে এবং এদিনই উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত রায়ের দিন নির্ধারণ করেন।
এর আগে গত ১৯ জুন মীর কাসেম আলী আপিলে মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেন। ৮৬ পৃষ্ঠার আবেদনে ১৪টি যুক্তি দেখিয়ে ফাঁসির দণ্ড থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন তিনি। ওই আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য করতে ২১ জুন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আবেদনের ওপর শুনানির জন্য ২৫ জুলাই দিন ধার্য করে তা পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০১২ সালের ১৭ জুন মতিঝিলে তার মালিকানাধীন দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার কার্যালয় থেকে গ্রেফতার করা হয় জামায়াতের এই ব্যবসায়ী নেতাকে। পরের বছর ৫ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তার মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার। ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালের রায়ে মীর কাসেম আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
সেই রায়ের বিরুদ্ধে মীর কাসেম সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আপিল করেন। গত ৮ মার্চ প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ ট্রাইব্যুনালে মীর কাসেম আলীকে দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। তবে ট্রাইব্যুনাল দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দিলেও আপিল বিভাগ একটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন।
মীর কাসেমের বিরুদ্ধে আনীত ১৪টি অভিযোগের মধ্যে তার আপিল আংশিক মঞ্জুর করে ৪, ৬ ও ১২ নম্বর অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আর ২, ৩, ৭, ৯, ১০, ১১ ও ১৪ নম্বর অভিযোগে আপিল নাকচ করে ট্রাইব্যুনালের রায়ই বহাল রেখেছেন আপিলি বিভাগ।
এর মধ্যে ১২ নম্বর অভিযোগে এই জামায়াত নেতা মৃত্যুদণ্ড থেকে অব্যাহতি পেলেও ১১ নম্বর অভিযোগ সর্বোচ্চ সাজাই বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। ৬ জুন এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। ট্রাইব্যুনাল থেকে লাল কাপড়ে মোড়ানো মৃত্যু পরোয়ানাসহ কারাগারে পাঠায় ট্রাইব্যুনাল। সেই মৃত্যু পরোয়ানা মীর কাসেম আলীকে পড়ে শোনায় কারা কর্তৃপক্ষ।
আইন অনুযায়ী রায় প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে তা পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করার সুযোগ ছিল মীর কাসেমের সামনে। সেই অনুযায়ী ১৯ জুন তিনি রিভিউ আবেদন করেন। রিভিউতে তার আবেদন খারিজ হলে আর কোনো আইনি প্রতিকার তার থাকবে না। সে ক্ষেত্রে দোষ স্বীকার করে নিয়ে তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে পারবেন। সেই আবেদন গৃহীত না হলে সরকারের নির্বাহী আদেশে কারা কর্তৃপক্ষ দণ্ড কার্যকর করবে।
মীর কাসেম আলী ষষ্ঠ ব্যক্তি যিনি মানবতাবিরোধী অপরাধে আপিলেও চূড়ান্তভাবে মৃত্যুদণ্ড পেয়েছেন। এর আগে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লা এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর একই ধরনের অপরাধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।