মতিঝিলে যুবলীগকর্মী খুনে দলীয় কোন্দল
পক্ষকাল ডেস্কঃ
মতিঝিলে সন্ত্রাসীদের গুলিতে যুবলীগের এক কর্মী নিহতের ঘটনায় সংগঠনের স্থানীয় শাখার শীর্ষ দুই নেতা পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন।নিহত রিজভী হাসান বাবু ওরফে বোঁচা বাবু (৩৪) হত্যাসহ বেশ কয়েকটি মামলায় পলাতক ছিলেন।বাবু ও তার সঙ্গে গুলিবিদ্ধ আহসানুল হক ইমন যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি মারুফ রেজা সাগরের অনুসারী।
আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মিলন ও তার অনুসারীরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করছেন সাগর।
অপরপক্ষে মিলন বলছেন, তাদের এলাকা ছাড়া করতে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।
রাজনৈতিক কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে পুলিশ বললেও কারা, কীভাবে তা ঘটিয়েছে সে বিষয়ে এখনও স্পষ্ট কিছু বলতে পারেননি কর্মকর্তারা।
পুলিশের মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হত্যা, পুলিশকে মারধর, অস্ত্র আইনসহ অন্তত পাঁচটি মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি বাবু। তাকে দীর্ঘদিন ধরে খোঁজা হচ্ছিল।
“সে এলাকায় বোঁচা বাবু নামে পরিচিত ছিল।”
স্থানীয় যুবলীগের শীর্ষ দুই নেতা সাগর ও মিলনের বিরুদ্ধেও থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানান তিনি।
ঈদের কয়েক দিন আগে একটি মারামারির ঘটনায় দুই পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। পরে উভয়পক্ষের লোকজনই জামিন পায়।
জামিনে বের হয়েই মিলন ও তার অনুসারীরা তার অনুগতদের ওপর শুক্রবার রাতে এ হামলা চালায় অভিযোগ করেন সাগর।
নিহত রিজভী হাসান বাবু
নিহত রিজভী হাসান বাবু
রাত ১১টার দিকে মতিঝিলের এজিবি কলোনিতে একটি ক্লাবে বসে আড্ডা দেওয়ার সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হন বাবু ও ইমন। হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যু হয় বাবুর। ইমন এখনও ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এ হামলার জন্য রাতেই মিলনকে দায়ী করে তার সঙ্গে তুষার ও হিরকের নাম বলেন স্থানীয় যুবলীগ সভাপতি সাগর।
তিনি শনিবার বিকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জামিনে বের হয়েই তারা (মিলন ও তার অনুসারীরা) বাবুকে হত্যা করে এই ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটালো।”
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সাধারণ সম্পাদক মিলন বলেন, “সভাপতি সাগর নিজের লোকদের দিয়ে এই হত্যার ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের উপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছে। আমাদের নামে মামলা দিয়ে এলাকা ছাড়া করার পরিকল্পনা তার দীর্ঘ দিনের।
“সে (সাগর) রাজনীতি করে না, শুধু টাকার পিছনে ঘোরে। সন্ত্রাসীদের সাথে চলাফেরা শুরু করলে তার কাছ থেকে আমরা দূরে সরে আসি।”
নিহত বাবুর সঙ্গেও এক সময় তার সম্পর্ক ভালো ছিল দাবি করে তিনি বলেন, “সে একইভাবে সাগরের পথে পা বাড়ানোয় আমি তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করি।”
হত্যাকাণ্ডের জন্য মিলন ছাড়াও ওই ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল আজীম তুষারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন সাগর।
এ ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে তুষার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সাগর আমাদের জড়ানোর চেষ্টা করছে। সাগর রাজনীতিকে নষ্ট করেছে। রাজনীতির নামে যা ইচ্ছা তাই করছে।”
এ ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে মতিঝিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম রাব্বানী জানিয়েছেন।