মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » জেলার খবর | ব্রেকিং নিউজ » বেনাপোল স্থলবন্দরে কর্মবিরতি, পণ্য খালাস ও আমদানি-রফতানি বন্ধ
বেনাপোল স্থলবন্দরে কর্মবিরতি, পণ্য খালাস ও আমদানি-রফতানি বন্ধ
আমিনুর রহমান তুহিন।বেনাপোল: বেনাপোল স্থলবন্দরে নীরা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের লাইসেন্সের বিন লক ও সাইফুল ইসলাম রিপন নামে তার এক কর্মচারীর কাস্টমস সরকার পারমিট কার্ড বাতিলের প্রতিবাদে ৩ ঘণ্টার কর্ম বিরতি পালন করেছে বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট ষ্টাফ এসোসিয়েশন। ফলে বন্ধ রয়েছে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য ও পণ্য খালাস ।
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত এ কর্মবিরতি পালন করা হয়।
সূত্রে জানা যায়, বেনাপোল বন্দরে নীরা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের কর্মচারী সাইফুল ইসলাম রিপন গত ০২ আগস্ট একটি মেশিনারি পণ্যের ফাইলে কাজ করাতে কাস্টমস হাউজে বিল অব এন্টি সাবমিট করে। এসময় কাস্টমস হাউজের শুল্কায়ণ গ্রুপ:৪ এর সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আমিরুল ইসলামের সাথে পণ্য ছাড় করা নিয়ে রিপনের তর্ক-বিতর্ক বাধে। গত ০৭ সেপ্টম্বর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ অভিযোগ তোলেন অবৈধ সুবিধা না দেওয়ায় ওই কর্মচারী কাস্টমস কর্মকর্তার গায়ে হাত তুলেছে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রিপনের কাস্টমস সরকার পারমিট কার্ড বাতিল ও সিএন্ডএফ লাইসেন্সের বিন লক করে দেয়। এতে সিএন্ডএফ কর্মচারীরা প্রতিবাদ জানিয়ে দ্বিতীয় দফায় এ কর্মবিরতির ডাক দেয়।
বেনাপোল সিএন্ডএফ স্টাফ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নাসির হোসেন জানান, বেনাপোল বন্দর থেকে সরকারকে হাজার হাজার কোটি টাকার আমদানি শুল্ক পরিষদের প্রধান ভূমিকায় রয়েছে সিএন্ডএফ কর্মচারীরা। অথচ কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে সেই কর্মচারীদের কোন সন্মানই নাই। আমদানি পণ্য ছাড় করানোর কাজে কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন ভাবে তাদের হয়রানি ও নাজেহাল হতে হয়। এসব অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় একটি লাইসেন্সের বিন লক ও তাদের এক কর্মচারীর কাস্টমস পারমিট বাতিল করে দেয়। এবং তাদের বিরুদ্ধে মারধরের মিথ্যা অভিযোগ আনে। এর প্রতিবাদে এ কর্মবিরতি ডাকা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যদি কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রিপনের পারমিট কার্ড না ফিরিয়ে দেয় এবং কাস্টমস হাউজে সুন্দর ও সু-শৃঙ্খল পরিবেশ ফিরিয়ে না আনে, তাহলে আগামী বুধবার পূনরায় দুপুর ৩ টা পর্যন্ত কর্মসূচি পালন করা হবে। তারপরও যদি কাস্টমস কর্তৃপক্ষ দাবি না মানে, তাহলে পরবর্তীতে বড় ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে বেনাপোল সিএন্ডএফ স্টাফ এসোসিয়েশনের সভাপতি মুজিবুল হক বলেন, সরকার যেখানে বেনাপোল বন্দর দিয়ে রাজস্ব ঘাটতি বহন করছে, সেখানে এহেন কাস্টমস কর্মকর্তাদের কারণে নষ্ট হচ্ছে কাস্টমস হাউজে কাজ করার পরিবেশ। সরকারী রাজস্ব আদায়ে ভূমিকা রাখা এসব সিএন্ডএফ কর্মচারীদের যেন কোন মূলই নেই কাস্টমস কর্তৃপক্ষের নিকট। কথায় কথায় তারা এসব কর্মচারীদের গালি-গালাজ করে থাকেন। যতক্ষণ পর্যন্ত এসমস্ত কর্মকর্তা বেনাপোল কাস্টমস হাউজ থেকে বিতাড়িত না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের এ কর্মসূচি চলতে থাকবে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউজের অতিরিক্ত কমিশনার ফিরোজ উদ্দিন জানান, রিপন নামের ওই সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারী অনিয়ম করে শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা করছিলেন। এসময় তার সেকাজে সহযোগিতা না করায় আমিরুল ইসলাম নামে কাস্টমসের এক সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাকে তিনি মারধোর ও লাঞ্ছিত করেন। এতে ওই সিএন্ডএফ কর্মচারী ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এই প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস কার্গো শাখার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা তিতুদির আহম্মেদ সোমবার সকাল ১০টায় জানান, সিএন্ডএফ এজেন্ট কর্মচারীরা কাজ না করাতে সকাল ৯টা থেকে এপথে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ ছিল। কর্মবিরতি শেষে বাণিজ্য শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।