বেনাপোল স্থল বন্দরের ২৩ নং শেড ইনচার্জের বিরুদ্ধে চুরিসহ নানা অভিযোগ
আমিনুর রহমান তুহিন। বেনাপোল স্থল বন্দরের ২৩ নং শেড ইনচার্জ আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে আমদানি পণ্য চুরি, ম্যানিফিষ্ট বাদে পণ্যাগারে ভারত থেকে অতিরিক্ত আনা শুল্ক ফাঁকির মাল আনলোড এবং সময় সুযোগ মত মালামাল পাচার সহ পণ্য চুরির অভিযোগে একাধিকবার জরিমানা দেওয়া কাষ্টমস রাজস্ব সহকারি মনিরুজ্জামানের লিখিত সহ একাধিক অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে বেনাপোল ২৩ নং শেড এলাকায় পুড়ে যাওয়া পণ্যাগারের অবস্থা বুধবার সকাল ১০ টার দেখতে গেলে ব্যবসায়ীরা জানান, ২৩ নং শেডের ইনচার্জ ১১ নং শেডে থাকাকালিন সময় ১০ বস্থা টিউব চুরির অভিযোগে জরিমানা দিয়ে রক্ষা পেয়েছে। সে ২২ নং শেডে থাকাকালিন ঐ শেডের বিপুল পরিমান চাউল চুরি হয় সেখানে ও সে জরিমান প্রদান করেন। এরপর বর্তমান ২৩ নং শেডে টায়ার চুরির অভিযোগ তার বিরুদ্ধে পোর্ট কর্তৃপক্ষ বিভাগীয় মামলা দায়ের করে প্রতিবেদন জমা করে। বর্তমানে স্থল বন্দর বেনাপোলের হিসাবরক্ষক হান্নানের সহায়তায় তার বিরুদ্ধে চুরির প্রতিবেদন বন্দরের উর্দ্ধোতন কর্মকর্তাদের ফাইল থেকে সরিয়ে ফেলেছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বন্দরের একটি সূত্র অভিযোগ করেছ। সূত্র আরো জানায়, চেয়ারম্যানের সাথে বন্দরের অবৈধ ঘুষের লেনদেন হান্নানের সাথে হয়ে থাকে। হান্নান যা বলে উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা তা বিশ্বাস করে থাকে।
বেনাপোল কাষ্টমস সুপার নজরুল ইসলাম জানান, উক্ত শেডের ইনচার্জ আসাদুজ্জামান খুব বজ্জাত টাইপের লোক। সে তার শেডে ম্যানিফিষ্ট বাদে অতিরিক্ত ভারত থেকে আমদানি মালের সাথে আনা শুল্কা ফাঁকি দেওয়া পণ্য রাখে। এবং সুযোগ সুবিধা মতো সে অসাধু আমদানি কারকদের সহযোগিতায় গন্তব্য পৌছায় দেয় অতিরিক্ত ঘুষের টাকার বিনিময়ে। তিনি আরো জানান, গোপন সংবাদ মারফত রাজস্ব কর্মকর্তা মনিরুজ্জামন মিয়া গত ৪/০৮/১৬ তারিখে ২৩ নং শেড থেকে কাগজপত্র বিহীন ১৮৬ পিছ পাইপ উদ্ধার করে। শেডের ইনচার্জ আসাদুজ্জামানের কাছে পণ্যর কাগগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি কাগজপত্র দেখাতে অপরগতা প্রকাশ করেন।
মালিকবিহীন সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগে কোন পণ্যর বৈধ কাগজ পত্র না থাকলে তা লিখিত ভাবে কাষ্টমস কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার কথা থাকলেও উক্ত শেড ইনচার্জ কাষ্টমসকে কোন লিখিত অভিযোগ করে নাই।
কাষ্টমস সুপার নজরুল ইসলাম বলেন যেহেতু আমরা ম্যানিফিষ্ট বাদে এবং মালিক বিহীন একটি পণ্য আটক করেছি। সেহেতু এরকম মালিকবিহীন এবং ম্যানিফিষ্ট বাদে আরো অনেক পণ্য পাচারের সাথে উক্ত শেড ইনচার্জ জড়িত থাকতে পারে।
বেনাপোল বন্দরের একটি সূত্র জানায়, যেখানে বেনাপোল বন্দরে ১০ জন সহকারি পরিচালকের প্রয়োজন সেখানে মাত্র ১ জন পরিচালক কাজ করছে । তাতে করে চুরি ঘুষ দূর্নীতি আরো বেড়ে যাচ্ছে। সূত্র জানায়, হিসাব রক্ষক হান্নান একটি চক্রের সাথে আতাত করে উপরিমহলকে ম্যানেজ করে প্রমোশন বাদ রেখে সব কিছু করছে। এ হান্নান চেক জালিয়াতী করে ঢাকা থেকে ৩ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে বেনাপোল বন্দরে এসে দূর্নীতির সাথে জড়িয়ে বন্দরকে ধ্বংসের মুখে নিয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে শেড ইনচার্জ আসাদের কাছে জানার জন্য অনেক খুঁজাখুজির পরও তাকে শেড অথবা বন্দর এলাকার কোথাও পাওয়া যায়নি। তবে বন্দরের একটি সূত্র জানায়, তার ২৩ নং শেড পুড়ে যাওয়ায় এবং অনেক মাল হারানোর ফলে কয়েকবার আমদানি কারকরা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় সে জরিমানা প্রদান করে চুপচাপ হয়ত কোথাও লুকিয়ে আছে।