জাতীয় বীর জাসদ নেতা মোজহারুল হক চলে গেলেন টুলু
পক্ষকাল সংবাদঃ
জাসদ উপদেষ্টা কমিটির সদস্য জাতীয় বীর মোজহারুল হক টুলুর ইন্তেকাল
প্রবীণ রাজনীতিবিদ, ৬০ এর দশকের সংগ্রামী ছাত্র নেতা, স্বাধীনতার নিউক্লিয়াসের সদস্য, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, জাসদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম কমিটর দফতর সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা কমিটির সদস্য জাতীয় বীর মোজহারুল হক টুলু আজ ৭ অক্টোবর ২০১৬ শুক্রবার সকাল ৭টার পর কোন এক সময় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্ত্রী সুলতানা বেগম ও কন্যা সারোয়াত সুলতানা মনামী সহ অসংখ্য রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। আজ শুক্রবার বাদ জুম্মা গুলশান আযাদ মসজিদে মরহুমের জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার পর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ নেতৃবৃন্দ তাঁর মরদেহ জাতীয় ও দলীয় পতাকায় মুড়ে দেন ও দলের পক্ষ থেকে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় দলীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাসদ স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেন, উপদেষ্টা কমিটির সদস্য শহীদুল ইসলাম, নাদের চৌধুরী, সহ-সভাপতি সফি উদ্দিন মোল্লা, দফতর সম্পাদক আব্দুল্লাহিল কাইয়ূম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জিয়াউল হক মুক্তা, শ্রমি বিষয়ক সম্পাদক সাইফুজ্জামান বাদশা, সহ-দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, জাতীয় যুব জোটের সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল কবীর বিপুল, জাতীয় কৃষক জোটের জনসংযোগ বিষয়ক সম্পাদক মোফাক খারুল তৌফিক, ঢাকা মহানগর জাসদ নেতা মাজিদুল ইসলাম পাপেলসহ জাসদ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর জাসদের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।
কুলখানি : আগামী ১১ অক্টোবর ২০১৬ মঙ্গলবার বাদ আছর মরহুমের বাসভবন বাড়ি-৬, সড়ক-১২৮, গুলশান-২-এ তার পরিবারের পক্ষ থেকে কুলখানি আয়োজন করা হয়েছে। কুলখানিতে মরহুমের আত্মীয়-পরিজন-সহযোদ্ধা-গুণগ্রাহীদের উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
জাসদের শোক
জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি জাসদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা কমিটির সদস্য জাতীয় বীর মোযহারুল হক টুলুর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন-স্বজন-সহযোদ্ধাদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
অনুরূপ পৃথক শোক বার্তায় জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশ এর সাধারণ সম্পাদক নইমুল আহসান জুয়েল, জাতীয় কৃষক জোটের সভাপতি ইকবাল হোসেন খান ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম বাবু, জাতীয় নারী জোটের আহবায়ক আফরোজা হক রীনা, জাতীয় যুব জোটের সভাপতি রোকনুজ্জান রোকন ও সাধারণ সম্পাদক শরিফুল কবির স্বপন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মুহাম্মদ সামছুল ইসলাম সুমন ও সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী সাজু প্রবীণ রাজনীতিবিদ, ৬০ এর দশকের সংগ্রামী ছাত্র নেতা, স্বাধীনতার নিউক্লিয়াসের সদস্য, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, জাসদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা কমিটির সদস্য জাতীয় বীর মোযহারুল হক টুলুর মৃত্যুতে গভীর শোক এবং শোক সন্তপ্ত পরিবার-স্বজন-সহকর্মীদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
সংক্ষিপ্ত জীবনী
জনাব মোযহারুল হক টুলু ১৯৪৫ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার জেলার দোহার উপজেলার শাইনপুকুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা জহিরুল ইসলাম ভুইয়া, মাতা সেলিনা বেগম। ৭ ভাই বোনের মধ্যে তিনি ৬ষ্ঠ। তিনি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন। তিনি ১৯৬৩ সাল থেকে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কাজে যুক্ত হন। ১৯৬৫ সাল থেকে ৬৯ সাল পর্যন্ত ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য হিসেবে ৬ দফা ও ১১ দফা সংগ্রাম সংগঠিত করেন। ৬৯ সালে বঙ্গবন্ধু তাকে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদকের দায়িত্ব প্রদান করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি তাজউদ্দিন আহম্মেদ, সিরাজুল আলম খান, শেখ ফজলুল হক মনি ও তোফায়েল আহমেদ এর সাথে ইন্টেলিজেন্স এবং রিক্রুটমেন্ট-এর কাজ করেন। স্বাধীনতার পর দেশের প্রথম বিরোধী দল জাসদ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৩ সালের মে মাসে জাসদের দফতর সম্পাদক, ১৯৭৯ সালে অর্থ বিষয়ক সম্পাদক, ১৯৯৭ সালে সহ-সভাপতি এবং মৃত্যুকালে কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি জাসদের মুখপত্র দৈনিক গণকন্ঠের জেনারেল ম্যানেজার ছিলেন।